হামাস-ইসরাইল উভয়কে দায়ী করে জাতিসঙ্ঘ তদন্ত দলের প্রতিবেদন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ জুন ২০২৪, ২২:৪৪
চলমান গাজা যুদ্ধে হামাস-ইসরাইল উভয়কে দায়ী করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইউএনএইচআরসি। বুধবার (১২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে শুরু হয়েছিল এই প্রতিবেদন তৈরির কাজ। ইউএনএইচআরসির সাবেক প্রধান কমিশনার নাভি পিল্লাই এই কাজে নেতৃত্ব দেন। প্রতিবেদনে তদন্ত দলের সদস্যরা এই যুদ্ধ এবং তার পেছনে হামাস এবং ইসলাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ভূমিকা সম্পর্কে বলেছেন, উভয়পক্ষই যুদ্ধাপরাধের অপরাধে দায়ী। কারণ উভয়েরই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরাইল এবং গাজা বসবাসরত বেসামরিক লোকজন। এছাড়া হামাস-আইডিএফের সদস্যদের হাতে গত আট মাসে যত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, সেসবের সবই হামাস এবং আইডিএফ সদস্যদের ইচ্ছাকৃত।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও এনেছে জাতিসঙ্ঘের তদন্ত দল। এই অপরাধগুলো হলো নির্যাতন, জাতিগতভাবে গাজার ফিলিস্তিনিদের নির্মূলের চেষ্টা করা এবং ফিলিস্তিনি পুরুষ ও কিশোর-তরুণদের বেছে বেছে হত্যা করা। এছাড়া আরো বেশ কিছু যুদ্ধাপরাধেরও অভিযোগও এনেছে জাতিসঙ্ঘের তদন্ত দল। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সীমান্ত ও ত্রাণ সরবরাহ বন্ধের মাধ্যমে গাজার বাসিন্দাদের না খেয়ে থাকতে বাধ্য করা, ইচ্ছেমতো গ্রেফতার-আটক এবং লাখ লাখ শিশুকে হত্যা করা, ফিলিস্তিনের জনগণকে নিজেদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য করা এবং গাজার বাসিন্দাদের সাথে অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ করা।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গাজা অবরোধ এবং সেখানে বিদ্যুৎ, খাদ্য ও পানির যোগান সীমিত করে সেখানকার বাসিন্দাদের ‘সামষ্টিক শাস্তি’ দিচ্ছে ইসরাইল।
হামাসের অপরাধ সম্পর্কে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা, ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে অপরহণের মাধ্যমে এই ভয়াবহ যুদ্ধের সূত্রপাত।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামলা, হত্যা ও অপহরণের পাশাপাশি হামাস যোদ্ধারা ব্যাপকমাত্রায় যৌন সহিংসতা ঘটিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইউএনএইচআরসির প্রতিবেদনে। সেই সঙ্গে যাদেরকে বন্দী হিসেবে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদেরকেও শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধ চলাকালে ফিলিস্তিনি নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে আইডিএফের সদস্যদের বিরুদ্ধেও।
জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রতিবেদন নিয়ে কোনো মন্তব্য এখনো করেনি হামাস। তবে ইসরাইলের ইতোমধ্যেই ইউএনএইচআরসির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
সূত্র : বিবিসি