ইরানের সাথে পরমাণু বিষয়ক আলোচনা ব্যর্থ হলে 'বিকল্প ব্যবস্থা'
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৪:০৭, আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২১, ১৬:৪০
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সাথে অনুষ্ঠিত প্রথম মুখোমুখি বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানের পরমাণু প্রকল্পের বিষয়ে কূটনীতিক উপায়েই সমাধানের বিষয়ে তিনি জোর দিচ্ছেন। তবে তা ব্যর্থ হলে সমাধানের জন্য 'বিকল্প ব্যবস্থা' রাখা হয়েছে।
শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউজে দুই নেতার মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পর ইসরাইলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেতের সাথে এটিই মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বৈঠক।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুই নেতার মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বোমা হামলার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছিলো।
শুক্রবার বৈঠকের পর জো বাইডেন হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন বলেন, বেনেতের সাথে তিনি ইরানের হুমকি ও ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জন না করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিজ্ঞার বিষয়ে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা কূটনীতিকে সামনে রাখাছি এবং আমরা দেখবো এটি আমাদের কোথায় নিয়ে যায়। যদি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, তবে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত আছি।'
এর উত্তরে সংবাদ সম্মেলনে বেনেত বলেন, 'আমি আনন্দিত আপনার স্পষ্ট বক্তব্যে যে ইরান কখনোই পরমাণু অস্ত্র লাভ করতে পারবে না এবং আপনি জোর দিচ্ছেন কূটনীতিক পন্থার ওপর কিন্তু যদি তাতে কাজ না হয় তবে বিকল্প ব্যবস্থা নেবেন।'
ইসরাইলে সরকার গঠনের দুই বছরের অচলাবস্থার পর চলতি বছর জুনে দেশটির দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিপরীতে পার্লামেন্টের সব বিরোধী দল জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠনের প্রস্তাব দেয়। নির্ধারিত সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে গঠিত সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন নেতানিয়াহুর সাবেক সহকারী নাফতালি বেনেত।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগস্টের শুরুতে ইরান ৬০ ভাগ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে যা গত এপ্রিলে ছিলো ২০ ভাগ।
ইরান জানিয়ে আসছে, শান্তিপূর্ণ কাজেই তারা পরমাণু শক্তি ব্যবহার করছে।
২০১৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ভিয়েনায় ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে। জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা সংক্ষেপে জেসিপিওএ নামে পরিচিত এই চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এর বিনিময়ে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে পরমাণু কর্মসূচি জোরদার করে।
চলতি বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নতুন করে পরমাণু সমঝোতার বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলো এখনো কোনো মীমাংসায় পৌঁছেনি।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই