ইফতারে সুস্বাদু স্যুপ বানিয়ে বছরের পর বছর বিলিয়ে যাচ্ছেন গাজার এই বাসিন্দা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৬ মে ২০২০, ১৩:৪৫, আপডেট: ০৬ মে ২০২০, ১৪:৩৩
দুপুর পেরিয়ে বিকেল হতেই কাজ নেমে পড়েন তিনি। কারণ সূর্য ডোবার আগেই যে তৈরি করতে হবে সুস্বাদু স্যুপ। যা দিয়ে ইফতার করবেন ফিলিস্তিনের গাজার আল-সুজাইয়ার বাসিন্দারা। কারণ এই দামী স্যুপ খাওয়ার ভাগ্য হয় না অস্বচ্ছল পরিবারগুলো। তাই রমজানে তাদের জন্য এই স্যুপ বানান ওয়ালিদ আল হাতাব। ৫৭ বছরের এই ব্যক্তি চার বছর ধরে কাজটি করে যাচ্ছেন। তার হাতের তৈরি এই স্যুপের নাম গ্রিসা।
কী দিয়ে তৈরি হয় এই সুস্বাদু স্যুপটি?
এটি তৈরিতে প্রয়োজন হয় ভেড়ার গোস্ত, গম আর নানান মসলা।
এত কিছু থাকতে এই স্যুপ তৈরির কথা তার মাথায় কেন আসলো?
ওয়ালিদ আল হাতাব বলেন, ‘এই স্যুপ তৈরি করতে ভেড়ার গোস্ত প্রয়োজন হয়, যা খুব দামী। দরিদ্র পরিবারগুলোর এই স্যুপ খাওয়ার সামর্থ্য নেই। আমি স্বল্প খরচের মধ্যেই কাজটি করি। একটি বড় হাড়িতে বানানো স্যুপ প্রায় ১৩০টি পরিবার খেতে পারে। স্যুপ বানানো শেষ হলো, সবাই লাইন করে দাঁড়িয়ে থেকে পাত্রে ভরে নিয়ে যায়।’
২০১৪ সালের যুদ্ধে আল-সুজাইয়া জেলাটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। সেখান থেকে মাথা তুলে দাঁড়ান ওয়ালিদ আল হাতাব। সহায়তা করতে শুরু করেন দুস্থ পরিবারগুলোকে।
তিনি বলেন, ‘আমি বাজারের ঠিক মাঝখানটায় বসে ছিলাম। হঠাৎই চিন্তাটা মাথায়েএলো। মনে হলো, আমি এখানকার ধনী-গরিব সবাইকে ইফতারে নিজের হাতে বানিয়ে কিছু খাওয়াই না কেন। সেই তখন থেকেই শুরু। সবার জন্যই গ্রিসা তৈরি করি। কাউকেই খালি হাতে ফিরিয়ে দেই না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আশার কথা হলো, আমার দেখাদেখি আরো অনেকে এখন দুস্থ বাসিন্দাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছে।’
চলমান মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে গাজার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ জানিয়ে তিনি বলেন, গতবার এখানকার অবস্থা ভালো ছিল। তবে তিনি এ কথাও বলেন, করোনায় এখানকার অবস্থা অন্য দেশগুলোর তুলনায় ভালো।
অবরুদ্ধ পশ্চিম তীর ও গাজায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৩ জন। আর মারা গেছেন দু’জন।
স্মিত হেসে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর শুকরিয়া যে, এখনো গাজায় করোনা ছড়াতে পারেনি।’
সূত্র : দ্য ন্যাশনাল