১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৬ শাবান ১৪৪৬
`

ইহুদিদের মধ্যে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে

ইহুদিদের মধ্যে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে - ছবি : সংগৃহীত

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বাধীনতাকামী হামাসের আল আকসা তুফান অভিযানের পর ৩০ লাখ ইহুদিবাদী ইসরাইলি মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছে।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি সামরিক অভিযান ‘আল আকসা তুফান’ অভিযান ছিল ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাকাণ্ড, আল আকসা মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করা এবং ফিলিস্তিনি ভূমি বছরের পর বছর ধরে দখল করে রাখার ক্ষেত্রে তেল আবিব সরকারের ধারাবাহিক অপরাধযজ্ঞের পাল্টা প্রতিক্রিয়া।

ঐতিহাসিক এই অভিযানটি গাজা এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মধ্যবর্তী সীমান্ত এলাকায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হয়েছিল এবং প্রায় দেড় বছর ধরে অব্যাহত ছিল। যার ফলে বিপুল সংখ্যক ইহুদিবাদী নিহত আহত বা বন্দী হয়েছিল। ইসরাইলের গণমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরাইল’ এই অভিযানকে ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং শাসক গোষ্ঠীর জন্য একটি বড় পরাজয় হিসেবে বর্ণনা করেছে।

‘জেরুজালেম পোস্ট’ আজ এই খবর জানিয়েছে।

‘আল আকসা তুফান’ অভিযানের পর ইসরাইলি সরকার মার্কিন প্রশাসনের সহায়তায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজার জনগণের বিরুদ্ধে এক ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শুরু করে।

এক বছর তিন মাস ধরে পাশবিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পর গণহত্যাকারী ইসরাইলি সরকার স্থল অভিযানের মাধ্যমে বন্দি ইসরাইলিদের মুক্ত করতে এবং গাজায় তুমূল প্রতিরোধকামীদের নির্মূল করার লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পর গত ১৫ জানুয়ারি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করতে সক্ষম হয়।

চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়।

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ‘ইরনা’র উদ্ধৃতি দিয়ে সিনহুয়া জানিয়েছে, ইসরাইলি ক্যাবিনেট অফিসের পর্যবেক্ষকদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ‘আল আকসা তুফান’ অভিযানের পর অনেক ইহুদিবাদী বিপজ্জনক স্বাস্থ্য ও মানসিক সঙ্কটে ভুগছেন। কারণ, অফিসের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৮ শতাংশ বলেছেন, আল আকসা অভিযানের ঘটনায় তারা চরম উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।

চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এই খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজা যুদ্ধে প্রায় ত্রিশ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ইহুদিবাদী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫ লাখ ৮০ হাজার গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছেন।

এর আগে এক প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল, প্রধান সমস্যাটি কেবল আহতের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত নয় বরং ইসরাইলি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের অক্ষমতার সাথেও সম্পর্কিত। এর ফলে যুদ্ধের সৃষ্ট মানসিক জটিলতায় ভুগছেন এমন নয় লাখ মানুষ দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে পরিষেবার জন্য আবেদন করেননি। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এই অপেক্ষা সাড়ে ৬ মাস পর্যন্ত পৌঁছায়।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা :

ইসরাইলি মন্ত্রিসভার পর্যবেক্ষকের প্রতিবেদনের আরেকটি অংশে ইসরাইলি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভা মানসিক স্বাস্থ্য সঙ্কট যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং গাজার আশপাশের বসতি থেকে স্থানান্তরিত হওয়া ১১ শতাংশ ব্যক্তি ছাড়া যুদ্ধের পরের ছয় মাসে কেউ মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পায়নি, যদিও তাদের এই ধরনের পরিষেবার জরুরি প্রয়োজন ছিল।

অর্থনৈতিক পরিণতি :

মানসিক সঙ্কট কেবল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারকেই ছাড়িয়ে যায়নি বরং ইসরাইলি অর্থনীতিকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, সময়মতো চিকিৎসা না নিলে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আক্রান্তদের কাজ ও উৎপাদন ক্ষমতা প্রভাবিত হতে পারে। এই সঙ্কট ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার ওপর মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতি চাপিয়ে দিতে পারে এবং সামাজিক নিরাপত্তা রাজস্ব এবং অন্যান্য সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ড চরমভাবে ব্যাহত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement