স্ত্রীর সাথে জোর করে বিকৃত যৌনাচার করা অপরাধ নয় : ভারতীয় হাইকোর্ট
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩২
বিয়ের পর স্ত্রীর সাথে জোর করেও যদি বিকৃত যৌনাচার করা হয়, তার জন্য স্বামীর কোনো শাস্তি হতে পারে না। ভারতের ছত্তিশগড় হাইকোর্ট এমন একটি রায় দিয়েছে। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছত্তিশগড় হাইকোর্টে একটি মামলা হয়েছিল। সেখানে স্ত্রীর সাথে বিকৃত যৌনাচার করেছিলেন স্বামী। এর ফলে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর। এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, মহিলার পেরিটোনাইটিস এবং রেকটাল ছিদ্র ছিল।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ এখন ভারতীয় আইনে অপরাধ নয়। আর ছত্তিশগড় হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে বিকৃত যৌনাচারও শাস্তির আওতার বাইরে চলে গেল। তাই যার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল, তাকে খুনের দায়ে জেলে ভরা গেল না। নিম্ন আদালত খুনের দায়ে জেল হেফাজত দিলেও ছত্তিশগড় হাইকোর্ট মুক্তি দিয়েছে। আর এটা খুন নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছে। বিচারপতি নরেন্দ্র কুমার ব্য়াসের বেঞ্চের মতে, ‘স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্কে ক্ষেত্রে স্ত্রীর সম্মতি গুরুত্বপূর্ণ নয়। স্ত্রী বয়স যদি ১৫ বছরের কম না হয়, তাহলে স্ত্রীর সাথে স্বামীর কোনো ধরনের যৌনতাকেই ধর্ষণ বলা যায় না। আর সেই হিসেবেই বিকৃত যৌনতার ক্ষেত্রে স্ত্রীর সম্মতিরও গুরুত্ব থাকে না। সুতরাং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৩৭৭ মামলার বৈধতা নেই।’
এদিকে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’ নিয়ে আগে একটি মামলা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে এই ‘বৈবাহিক ধর্ষণ’কে অপরাধ বলে আবেদন করা হয়। কিন্তু তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে যাওয়ায় সেই শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। এবার নতুন বেঞ্চ এই বিষয়টি শুনবে। সরকার এটা বজায় রাখে যে বিবাহের প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা অপরিহার্য এবং বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলার প্রয়োজন নেই। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে নেই। শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকার আরো বলেছে, বিবাহিত নারীর সম্মতি রক্ষার জন্য সংসদ বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছে।
এছাড়া এই ঘটনার সূত্রপাত হয় প্রায় আট বছর আগে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সাথে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হন স্বামী। এমনই অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। কারণ ওই বিকৃত যৌনাচারের পরই স্ত্রী এতটা অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। অবশেষে মারাও যান। মৃত্য়ুকালীন জবানবন্দিতে ওই নারী জানান, তার সাথে জোর করে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয়েছিল স্বামী। ওই মামলাতেই আদালত জানিয়ে দিলো, স্ত্রীর বয়স ১৫ বছরের কম না হলে স্বামী–স্ত্রীর যৌনতাকে ধর্ষণ বলা যায় না। যদিও তাতে স্ত্রী সম্মতি না থাকে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস