০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ৮ শাবান ১৪৪৬
`

মার্কিন সহায়তা স্থগিতে সিরিয়ার শিবিরগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

মার্কিন সহায়তা স্থগিতে সিরিয়ার শিবিরগুলোতে পরিস্থিতির অবনতি : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ - ছবি : সংগৃহীত

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) শুক্রবার মার্কিন সহায়তা স্থগিতের ফলে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট (আইএস) উগ্রবাদীদের পরিবারের সদস্যদের আটক রাখা শিবিরগুলোতে ‘জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিস্থিতি’ আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে মর্মে সতর্ক করে ওয়াশিংটনকে সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে এএফপি জানায়, সিরিয়ার কুর্দি নিয়ন্ত্রিত শিবির ও কারাগারগুলোতে এখনো আইএস গোষ্ঠীর সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয় এমন প্রায় ৫৬ হাজার ব্যক্তি আটক রয়েছেন। আইএস নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের পতনের কয়েক বছর পরও সেখানে একই অবস্থা বিরাজ করছে।

এই বন্দীদের মধ্যে অনেকেই কারাগারে আটক আইএস সন্দেহভাজন উগ্রবাদী, আবার অনেকেই আইএস যোদ্ধাদের স্ত্রী ও সন্তান, যারা আল-হোল ও রোজ বন্দিশিবিরে আটক রয়েছে।

এইচআরডব্লিউ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মার্কিন সরকার যখন এসব শিবিরে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর জন্য বিদেশী সহায়তা স্থগিত করছে, তখন সেটি জীবন বিপন্নকারী পরিস্থিতিকে আরো গুরুতর করে তুলছে এবং নিরাপত্তাহীনতার এক অনিশ্চিত পরিবেশে আরো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।’

সংস্থাটি জানিয়েছে, সহায়তা বন্ধ হলে শিবিরের বাসিন্দাদের জন্য মৌলিক পরিষেবা সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর বরাতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ২৪ জানুয়ারি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার চার দিন পর, মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি (টঝঅওউ)-এর অর্থায়নে পরিচালিত সংস্থাগুলোকে সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়ে প্রথম চিঠি পাঠানো হয়।

এর এক সপ্তাহ পর, এএফপি’র হাতে আসা আরেকটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয় যে- ‘জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা’ সংক্রান্ত কিছু কার্যক্রম পুনরায় চালু করা যেতে পারে।

এই নির্দেশনার ফলে বিশেষত কেরোসিন ও পানির মতো জরুরি পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখা নিয়ে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় কাজ করা সহায়তা সংস্থাগুলো অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।

এইচআরডব্লিউ’র বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এসব সংস্থার কাছে এখন স্পষ্ট নয় যে- তারা কিভাবে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী সরবরাহ চালিয়ে যাবে, যা পূর্ব থেকেই সঙ্কটপূর্ণ ছিল।’

এইচআরডব্লিউ’র মতে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর উচিত হবে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় জীবন রক্ষাকারী সহায়তা দেয়া সংস্থাগুলোর জন্য মার্কিন সহায়তা পুনর্বহাল করা।

২৪ জানুয়ারির নির্দেশনার পর, আল-হোল ও রোজ বন্দিশিবির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ব্লুমন্ট তাদের কার্যক্রম স্থগিত করে এবং নিরাপত্তারক্ষীসহ সব কর্মীকে প্রত্যাহার করে নেয়। তবে কয়েক দিন পর সংস্থাটি দুই সপ্তাহের জন্য কার্যক্রম চালানোর অনুমতি পায়।

উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার সবচেয়ে বড় বন্দিশিবির আল-হোলে বর্তমানে ৪০ হাজারেরও বেশি বন্দী রয়েছে, যাদের ৪৭টি ভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে।

এই শিবিরের বেশিভাগ বাসিন্দাই নারী ও শিশু, যারা চরম মানবিক সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

এইচআরডব্লিউ আরো বলেছে, ‘এই অঞ্চলে যেকোনো রাজনৈতিক সমাধানের অংশ হিসেবে সন্দেহভাজন আইএস সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যথেচ্ছা বন্দিত্বের অবসান ঘটানো উচিত।’

সংস্থাটির গবেষক হিবা জায়াদিন বলেন, ‘হাজারো মানুষের জীবন যাদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে এখন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গত ছয় বছরের অগ্রহণযোগ্য স্থবিরতা আর চলতে দেয়া উচিত নয়।’
সূত্র : এএফপি


আরো সংবাদ



premium cement