২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১, ২৮ রজব ১৪৪৬
`

গাজাবাসীকে মিসর-জর্ডানে সরিয়ে নেয়ার মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের

গাজাবাসীকে মিসর-জর্ডানে সরিয়ে নেয়ার মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের - ছবি : নয়া দিগন্ত

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে সরিয়ে নেয়া উচিত বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস।

জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের পক্ষে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

গাজা উপত্যকার জন্য এটি অস্থায়ী নাকি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘দু’টিই হতে পারে।’

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেন, এটি একটি চমৎকার আইডিয়া। এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দেব।

কিন্তু বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে হামাস। বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের যে শঙ্কা রয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে সেটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে তারা।

হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাইম বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্দেশ্য হিসেবে দেখা দিলেও এমন কোনো সমাধান কিংবা প্রস্তাব গ্রহণ করবে না ফিলিস্তিনিরা।

আর পূর্বসূরি জো বাইডেনের মতো ট্রাম্পকেও কোনো ‘ব্যর্থ ধারণার’ পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছেন আরেক হামাস নেতা সামি আবু জুহরি। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা মরতে রাজি। কিন্তু তারা নিজেদের মাতৃভূমি ছাড়তে চায় না। কোনো অজুহাতে তারা এই ভূখণ্ড ছেড়ে যাবে না।’

ট্রাম্পের এই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডানও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের বিরুদ্ধে জর্ডানের অবস্থান আগের মতোই অবিচল ও কঠোর।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মিসরের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে উৎখাতের বিরোধিতা করে আসছেন তারা।

ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক গাসসান আল-খতিব বলন, অধিকৃত পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকাসহ জর্ডান ও মিসরে বাস করা ফিলিস্তিনিরাও ট্রাম্পের এই ধারণাকে গ্রহণ করবেন না। আমি মনে করি না, এমন কিছু ভাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

নিজেদের মাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদে সমর্থন করে না বলে গতবছর জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বছরজুড়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।

কিন্তু সমালোচনার মুখে পড়লেও ইসরাইলকে সমর্থন দেয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। হিজবুল্লাহ, হাউছি ও হামাসের মতো প্রতিরোধ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সহায়তার কথা বলছে ওয়াশিংটন।

শনিবার জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সাথে ফোনকলের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি, তারা যাতে আরো বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেন। কারণ, জায়গাটি (গাজা) এখন একেবারে বিশৃঙ্খলায় অবস্থায় আছে। মিসরকেও একই কথা বলবো।

এ বিষয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সাথে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সূত্র : ইউএনবি


আরো সংবাদ



premium cement