ইসরাইলি হামলায় দক্ষিণ লেবাননে নিহত ২২
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫০
লেবানন সোমবার জানিয়েছে, ইসরাইল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার না করলেও তারা যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়াবে।
এদিকে, রোববার ইসরাইলি সৈন্যদের গুলিতে দক্ষিণ লেবাননে ২২ জন নিহত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে লেবাননের বুর্জ আল মুলুক থেকে এএফপি জানায়, স্থানীয় মানুষজন নিজেদের গ্রামে ফিরে যেতে চাচ্ছিলেন এমন সময় এ সংঘর্ষ ঘটে। চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলের সেনাদের ওই সময়ের মধ্যেই দক্ষিণ লেবানন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি
দু’মাস আগে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ইসরাইলের সেনারা ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ লেবানন ছেড়ে যাবে এবং লেবাননের সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা ওই অঞ্চলে দায়িত্ব নেবে।
চুক্তি কার্যকর করতে বিলম্ব হওয়ার জন্য দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে। শুক্রবার ইসরাইল জানায়, তারা নির্ধারিত সময়ের পরও লেবাননের দক্ষিণে সেনা রাখবে।
রোববারের সহিংসতা
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রোববার ইসরাইলি সেনারা তাদের দখলকৃত গ্রামে ফিরে যেতে চাওয়া মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।এতে ২২ জন নিহত হয়, যার মধ্যে ছয়জন নারী এবং একজন সেনা সদস্য রয়েছেন। এছাড়া আরো ১২৪ জন আহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ‘হুমকি দূর করতে’ সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে এবং কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।
বাসিন্দাদের প্রতিবাদ
সীমান্ত এলাকায় কয়েক শ’ মানুষ তাদের গ্রামে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারা গাড়ি, মোটরবাইক ও পায়ে হেঁটে গ্রামের দিকে যায়। কেউ কেউ হিজবুল্লাহর পতাকা বহন করছিলেন।
আলি হার্ব নামে ২৭ বছর বয়সী এক যুবক বলেন, ‘আমরা আমাদের গ্রামে ফিরে যাব, ইসরাইলি সেনারা এখান থেকে চলে যাবে, এমনকি যদি এতে আমাদের প্রাণহানি ঘটে।’
কিছু এলাকায় মানুষ দলবদ্ধভাবে নামাজ আদায় করেন এবং প্রতিবাদ মিছিল করেন।
হিজবুল্লাহর প্রতিক্রিয়া
হিজবুল্লাহ এই ঘটনাকে ‘গৌরবময় দিন’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং বাসিন্দাদের তাদের ভূমির প্রতি ভালোবাসার প্রশংসা করেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সকে চুক্তি লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
লেবাননের সিদ্ধান্ত
লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি জানিয়েছেন, লেবানন যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখবে। তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেছেন, দক্ষিণ লেবাননের ৬০টির বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের গ্রামে না ফেরার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বাসিন্দাদের ধৈর্য ধরতে এবং সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন।
যুদ্ধবিরতির বর্তমান অবস্থা
ইসরাইলি সেনারা দক্ষিণ লেবাননের উপকূলীয় এলাকা ছেড়ে গেলেও, কিছু পূর্বাঞ্চলে তারা এখনো অবস্থান করছে।
চুক্তি অনুযায়ী হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে লিতানি নদীর উত্তরে সরে যেতে হবে এবং দক্ষিণে থাকা সব সামরিক স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে।
তবে ইসরাইল বলছে, লেবানন এখনো চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে দু’মাসের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলেও চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এখনো রয়ে গেছে।
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা