১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`

ভয় ও অবিশ্বাস নিয়ে ঘরে ফেরার অপেক্ষায় গাজাবাসী

বিধ্বস্ত গাজার চিত্র - ছবি : সংগৃহীত

ইসরাইলি হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ৪৬০ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার প্রতিটি পরিবার। তবে ইসরাইলের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি ও ‘জিম্মি’ মুক্তির চুক্তি অনুমোদন পাওয়ায় স্বস্তির আশায় প্রহর গুনছেন ফিলিস্তিনিরা।

রোববার সকাল থেকেই তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। ভোগ করবে স্বাধীনতার স্বাদ। তবে একইসাথে ফিলিস্তিনিদের রয়েছে ভয় ও অবিশ্বাস। গাজায় ইসরাইলের ফেলা হাজার হাজার বোমা এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে অবিস্ফোরিত অবস্থায় চাপা রয়েছে, যেগুলো অপসারণ করতে প্রায় এক দশক সময় লেগে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা।

বিভিন্ন দেশে অবিস্ফোরিত বোমা অপসারণের কাজ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘মাইন অ্যাডভাইজরি গ্রুপ’ (এমএজি)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (প্রোগ্রাম) গ্রেগ ক্রোদার মনে করেন, ‘অবিস্ফোরিত এসব বোমা অপসারণ কিংবা নিষ্ক্রিয় করতে প্রায় ১০ বছর সময় লাগবে। খরচ হবে কোটি কোটি ডলার।

এসব বোমায় হতাহতের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অনেকেই আছেন, যারা যথাযথ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন না। তারা বাড়িতে যাবেন, একটি ট্রাক ভাড়া করবেন এবং হাত দিয়েই ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করে দেবেন। এসব কাজে অনেক শিশুও হাত লাগাবে, যেটা আরেকটা বড় ভয়ের ব্যাপার।’

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সামাজিকমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে ঘোষণা করেছেন, স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৮টা ৩০ মিনিট (গ্রিনিচ সময় ৬টা ৩০ মিনিট) থেকে গাজায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি শনিবার এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘পক্ষগুলোর মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে... গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি রোববার সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে শুরু হবে। আমরা আমাদের ভাইদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার এবং সরকারি সূত্র থেকে নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

আল-জাজিরা জানিয়েছে, শনিবার সকালের দিকে ইসরাইলি সরকার ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর চুক্তিটি অনুমোদন করেছে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।

আল-জাজিরা আরো জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর ৪৬০ দিনেরও বেশি সময় পর এই চুক্তিটি অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে ইসরাইলি বাহিনী ৪৬ হাজার ৭৮৮ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ১ লাখ ১০ হাজার ৪৫৩ জনকে আহত করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে গাজায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে বন্দী ৩৩ ইসরাইলিকে মুক্তি দেয়া হবে। বিনিময়ে ইসরাইল কর্তৃক বন্দী শত শত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হবে।

জর্ডান থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হামদাহ সালহুত বলেছেন, ‘সকলের নজর এই মুহূর্তে গাজার দিকে। এই শেষ মুহূর্তে ইসরাইলি সেনাবাহিনী কী করতে চলেছে তা দেখার জন্য। কারণ ঐতিহাসিকভাবে, যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আগে ইসরাইলি সেনাবাহিনী তার সমস্ত শক্তি দিয়ে গাজা উপত্যকায় আক্রমণ করে।’

তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে সেখানে ‘অনেক ভয় ও উদ্বেগ থাকবে।’


আরো সংবাদ



premium cement