১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০২ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রজব ১৪৪৬
`

রোববার কার্যকর হবে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি

ইসরাইলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার অনেক এলাকা - ছবি : বিবিসি

গাজায় ১৫ মাস ধরে চলা সহিংসতার পর যুদ্ধবিরতি চুক্তি রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে ছয় সপ্তাহের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও হামাস।

যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি বলেছেন, ইসরাইলের পার্লামেন্টে অনুমোদন পাওয়ার পর এই চুক্তি কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই চুক্তির ফলে গাজায় লড়াই বন্ধ হবে, ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা বাড়বে এবং বন্দীরা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাবে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, চুক্তির অনেক বিষয় চূড়ান্ত করার আগে আরো কাজ বাকি আছে। এই চুক্তিতে জোর দেয়ার জন্য তিনি জো বাইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান।

হামাস নেতা খলিল আল হাইয়া বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের ‘প্রতিরোধের’ ফসল এই চুক্তি।

তিন ধাপের এই চুক্তি গাজায় যুদ্ধবিরতি, সেখান থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার এবং হামাসের হাতে বন্দি বন্দীদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত।

যদিও এখনো গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। বুধবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ঘোষণা আসার পর ইসরাইলি বিমান হামলায় ২০ জনেরও বেশি নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে হামাসের সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি।

চুক্তি কার্যকর হবে তিন ধাপে
কাতারের প্রধানমন্ত্রী ইসরাইল ও হামাস উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হামাসের হাতে আটক ৩৩ বন্দীর মুক্তির পরিবর্তে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের অনেককে ছেড়ে দেয়া হবে।

গাজার ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো থেকে ইসরাইলি বাহিনী আরো পূর্ব দিকে সরে যাবে। এল ফলে বাস্তুচ্যূত ফিলিস্তিনিরা তাদের বাড়িতে ফিরতে পারবেন। এছাড়া ত্রাণবাহিনী শত শত ট্রাক প্রতিদিন গাজায় প্রবেশের সুযোগ পাবে।

চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় স্থান পাবে বাকি বন্দীদের মুক্তি এবং ‘টেকসই শান্তির’ জন্য ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি।

তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে আসবে গাজার পুনর্গঠন। এর জন্য অনকে বছর লেগে যেতে পারে। তবে হামাসের হাতে আর কেউ বন্দী থাকলে তাদের মুক্তির বিষয়টিও আলোচনায় আসবে এই ধাপে।

শেখ মোহাম্মদ আল থানি বলেন, চুক্তির বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার পর কয়েকদিনের মধ্যেই এটি সবিস্তারে জানানো হবে।

তিনি আরো জানান, কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর এই চুক্তি করার বিষয়ে সহায়তা করেছে এবং তারা ইসরাইল ও হামাস যেন চুক্তির সব শর্ত মেনে চলে, সেজন্যও তারা সচেষ্ট থাকবে।

প্রথমে ট্রাম্পকে ফোন নেতানিয়াহুর
যুদ্ধবিরতির খবর নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাকে প্রথমে ফোন করেছিলেন সেটি খুবই লক্ষ্যণীয়।

তার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে কথা বলে ইসরাইলকে কয়েক ডজন বন্দী এবং তাদের পরিবারের দুর্দশা দূর করতে সাহায্য করার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটনে শিগগিরই দুই নেতার দেখা হওয়ার কথা। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার একদিন পরে ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের দায়িত্ব নেয়ার কথা রয়েছে।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেয়া বিবৃতিতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বন্দী চুক্তির বিষয়ে সাহায্য করার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে যে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বাইডেনের সাথে পরে কথা বলেছেন।

যেভাবে এগিয়েছে আলোচনা
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের ব্রিফিং থেকে এই চুক্তি হওয়ার পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে আরো বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। এতে বোঝা যায় হামাসের ওপর সামরিক চাপ ছিল যা দলটিকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছিল।

মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই দীর্ঘমেয়াদী চূক্তির সূচনা এবং আলোচনা প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়ার রূপরেখা বর্ণনা করেছেন।

হোয়াইট হাউজের এই কর্মকর্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের ভূমিকারও বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, উইটকফ এই চুক্তির আলোচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন। এ অঞ্চলে জো বাইডেনের শীর্ষ উপদেষ্টা ব্রেট ম্যাকগার্কের সাথে অংশীদার হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। ব্রেটও ট্রাম্পের অধীনে কাজ করেছিলেন।

হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী যে এই ইস্যুতে অন্তত বাইডেন এবং ট্রাম্প প্রেসিডেন্সির মধ্যে একটি নির্বিঘ্ন পরিবর্তন হবে।

চুক্তি নিয়ে ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য
অনেক ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী চুক্তির ঘোষণার পরে আশা প্রকাশ করেছেন। তবে চুক্তির চূড়ান্ত ঘোষণা আসার আগেই ইসরাইলের অতি ডানপন্থী অতি জাতীয়তাবাদী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ তার প্রতিক্রিয়ায় চুক্তিটিকে ‘খারাপ এবং বিপদজনক’ বলে অভিহিত করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ব্যাপক শক্তির সাথে যুদ্ধে ফিরে আসার সম্পূর্ণ নিশ্চয়তাই এই সরকারে আমাদের টিকে থাকার একটি পরিষ্কার শর্ত।’

বৃহস্পতিবার হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে ইসরাইল সরকার। যদিও স্মোট্রিচ ও তার সহকর্মী ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন গভির বলেছেন, তারা এটির বিরোধিতা করবেন।

চুক্তি আটকে দেয়ার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা আপাতত তাদের নেই।

‘শান্তিই শ্রেষ্ঠ ওষুধ’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস ঘেব্রেইসাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির খবর জানিয়ে উদযাপন করেছেন। তিনি বলেছেন, তার সংস্থা ‘সাহায্য বাড়াতে প্রস্তুত’।

ঘেব্রেইসাস বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী মুক্তির চুক্তিকে স্বাগতম এবং এটি উৎসাহব্যঞ্জক। অনেক জীবনহানি হয়েছে এবং অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা আশা করি সব পক্ষ চুক্তিকে সম্মান করবে এবং স্থায়ী শান্তির জন্য কাজ করবে।’ তিনি আরো বলেন, শান্তিই শ্রেষ্ঠ ওষুধ!

গাজায় হামলা চলছে
যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও গাজায় সামরিক অভিযান শেষ হয়নি। হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, কাতারি ঘোষণার পর আজ ইসরাইলি বিমান হামলায় ২০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান পাড়ার একটি আবাসিক এলাকার ১২ জন রয়েছে।

তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

রোববারের আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে না।

স্থায়ীভাবে যুদ্ধ শেষ হবে 
বিবিসি নিউজের সাথে কথা বলেছেন হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিউনিকেশন্স অ্যাডভাইজর জন কিরবি।

তিনি বলেছেন, যখন বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে এবং সাহায্য বিতরণ করা হবে, তখন ইসরাইল ও হামাস তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা করবে।

কিরবি জানিয়েছেন, চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ হলো, যে শর্তগুলোর বিষয়ে এখনো একমত হওয়া যায়নি। এর অংশ থাকবে সম্ভবত গাজা থেকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রত্যাহার এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধ শেষ করা।

কিরবি বলেন, দ্বিতীয় ধাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কারণ আপনি যদি সে পর্যন্ত যেতে পারেন, তবে এই যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে।’

এটা করা সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আমরা পারি। এটা একটা ভালো চুক্তি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এর জন্য প্রয়োজন নেতৃত্ব এবং এর বাস্তবায়ন।’

‘ক্ষমা করবে না’ হামাস
হামাসের প্রধান আলোচক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এতে বলেছেন, যুদ্ধের সময় গাজায় দুর্ভোগের জন্য ইসরাইলকে ‘মাফ করবে না’ দলটি।

খলিল আল হায়া বলেছেন, ‘সকল ভুক্তভোগী, প্রতিটি রক্তের ফোঁটা, দুঃখ ও নিপীড়নের প্রতিটি অশ্রুর পক্ষে আমরা বলি, আমরা ভুলবো না এবং আমরা ক্ষমা করবো না।’

ইসরাইল এ অঞ্চলে তাদের সামরিক অভিযানের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান তিনি।

চ্যালেঞ্জ নিয়ে সতর্কতা ইসরাইলের
ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারযোগ যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর স্থানীয় সময় পৌনে ৩টায় একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সরকারের প্রথম আনুষ্ঠানিক ভাষণ হিসেবে তিনি বন্দী এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে এ সংবাদ সম্মেলনটি করেছেন।

হারযোগ বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার আলোচনাকারী দলকে এই চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টায় সমর্থন করেছেন। কারণ তিনি মন্ত্রিসভা এবং সরকারকে এটিকে মেনে নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

ইসরাইলি মন্ত্রিসভাকে এখনো একটি ভোটে চুক্তিটিকে অনুমোদন দিতে হবে। যদিও সরকারের ডানপন্থী কিছু মন্ত্রীর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তারা তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট সামনের কঠিন পথ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন ‘কোনো বিভ্রম’ হওয়া উচিত নয়।

প্রেসিডেন্ট হারযোগ বলেন, ‘এই চুক্তি যখন স্বাক্ষর, অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হবে তখন বেদনাদায়ক ও চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তগুলো নিয়ে আসবে। এটা উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলোও উপস্থাপন করবে। এটা কোনো সাধারণ পরিস্থিতি নয়। এটা আমাদের পরিচিত সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালানোর পর এই সহিংসতার শুরু। হামাস যোদ্ধারা প্রায় ১২০০ ইসরাইলিকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যায়।

এরপর ইসরাইল গাজায় ব্যাপক হামলা শুরু করে। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তির মৃত্যু হয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

তাদের ২৩ লাখ জনগোষ্ঠির বেশিরভাগই এই যুদ্ধে আশ্রয় হারিয়েছে। গাজায় খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও নিরাপদ আশ্রয়ের গভীর সঙ্কট তৈরি হয়েছে।

এদিকে ইসরাইলের দাবি, হামাসের হাতে এখনো তাদের ৯৪ জন নাগরিক বন্দী আছেন। এদের মধ্যে ৬০ জন এখনো জীবিত এবং ৩৪ জন মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
ক্যান্সারে আক্রান্ত ৩০০ হাফেজের ওস্তাদকে বাঁচানো প্রয়োজন সমর্থন দিন, স্বপ্নের মানবিক দেশ গড়ব ইনশাআল্লাহ বেলাবতে রিভলভারসহ মা-মেয়ে গ্রেফতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র : বৈঠক শেষে যা বললেন আইন উপদেষ্টা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেত্রী নিশি কারাগারে কমলনগরে ট্রাকচাপায় ব্র্যাককর্মী নিহত জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈঠক শেষে যা বললেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন তামিম-সাব্বিরের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় ময়মনসিংহে মেডিক্যাল ভর্তির প্রশ্ন ফাঁসের প্রতারণার দায়ে কলেজছাত্র গ্রেফতার মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার, যেসব সড়ক পরিহার করার অনুরোধ ডিএমপির দেহের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আ’লীগের পুনর্বাসন ঠেকাবো : হাসনাত আব্দুল্লাহ

সকল