গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে হামাস-ইসরাইল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:১৪
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন আলোচনার সাথে সংযুক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হামাস-ইসরাইলের মধ্যে একটি চুক্তি ‘ফলপ্রসূ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে’ এবং তার প্রশাসন এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করছে,’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এ কথা জানানোর পরেই হামাস এ বিষয়টি প্রকাশ করল।
জো বাইডেন বলেন, ‘বেশ কয়েক মাস আগে আমি হামাস ইসরাইলের ভেতর যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম তা একেবারে চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। অবশেষে এটি ফলপ্রসূ হতে যাচ্ছে। এত বছর মানুষের সেবা করে আমি একটা বিষয়ে শিখেছি। তা হলো কখনো আশা ছাড়তে নেই।’
এদিকে ইসরাইলি কর্মকর্তারা বলছেন, ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে হামাস ৩৪ জন পণবন্দীকে মুক্তি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
জানা গেছে, এ চুক্তিতে ইসরাইলি বাহিনীকে ফিলাডেলফি করিডোরে থাকার এবং প্রথম পর্যায়ে পূর্ব ও উত্তর সীমান্তে ৮০০ মিটার বাফার জোন বজায় রাখার বিধান থাকছে, যা ৪২ দিন স্থায়ী হবে।
বিবিসি আরো জানিয়েছে, হামাসের ৩৪ পণবন্দীর মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইল ১ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিতেও সম্মত হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ১৯০ জন ১৫ বছর বা তার বেশি সাজা ভোগ করছেন।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া এ হামলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৬০০ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ সময়ে আহত হয়েছেন অন্তত এক লাখ ৯ হাজার ৫৭১ ফিলিস্তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের সংখ্যা আরো বেশি। এখনো অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে ও রাস্তায় আটকা পড়ে আছে। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে না পারায় সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় এক বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল। দেশটির অব্যাহত এ হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এজন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে।
জাতিসঙ্ঘের হিসাব মতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসাথে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
সূত্র : বিবিসি ও আনাদোলু
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা