০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

লেবাননে যুদ্ধ শেষ হয়নি : নেতানিয়াহু

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু - সংগৃহীত

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশ বর্তমানে লেবাননের হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতিতে রয়েছে। তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘এর অর্থ এই নয় যে যুদ্ধ শেষ হয়েছে।’

মঙ্গলবার ইসরাইলের উত্তর সীমান্ত-শহর নাহারিয়াতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

নেতানিয়াহু অভিযোগ করে বলেন, ‘হিজবুল্লাহ সোমবার গুরুতরভাবে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং ইসরাইল পরে প্রতিশোধ হিসেবে লেবানন জুড়ে ২০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।’

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দু’টি গ্রামে চালানো হামলায় কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়েছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) অভিযোগ করেছে, যদিও চুক্তি লঙ্ঘন করে হিজবুল্লাহই প্রথম ইসরাইলি সেনা চৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

তারা জানায়, ওই হামলার জবাব হিসেবে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির কিছু অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

আইডিএফ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর রাখতেই এটি করতে হয়েছে।

হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে অবশ্য ইসরাইলের এমন অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা বলেছে, আবারো লেবাননে হামলা চালানোর মাধ্যমেই ইসরাইলই প্রথম যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

ওই হামলায় যে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটির জবাবে ‘প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা’ হিসেবেই ইসরাইলি একটি সেনা চৌকি লক্ষ্য করে মর্টার হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, ইসরাইলের মাউন্ট ডোভ এলাকায় চালানো হিজবুল্লাহর ওই হামলায় যদিও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

চুক্তিতে কী বলা হয়েছিল?
গত ২৭ নভেম্বর যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, সেটির মাধ্যমে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যকার সংঘাতের অবসান ঘটতে যাচ্ছে বলে আশা করা হয়েছিল।

চুক্তিতে বলা হয়েছিল, লেবাননে বেসামরিক, সামরিক বা অন্যান্য রাষ্ট্রীয় লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে ইসরাইল আক্রমণাত্মক কোনো সামরিক অভিযান চালাবে না।

এর বিপরীতে হিজবুল্লাহও ইসরাইলে কোনো হামলা চালাতে পারবে না। এমনকি লেবাননের অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীও যদি ইসরাইলে হামলা চালাতে চায়, সেখানেও বাধা সৃষ্টি করবে হিজবুল্লাহ।

চুক্তিতে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে নিজেদের সশস্ত্র উপস্থিতি তুলে নিতে হিজবুল্লাহকে ৬০ দিন সময় দেয়া হয়েছে।

একই সময়ের মধ্যে ইসরাইলও লেবানন থেকে তাদের সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল।

চুক্তি কার্যকরের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স বিদ্যমান ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় যোগ দেবে বলে শুরু থেকেই জানা যাচ্ছিলে।

এ ব্যবস্থায় বর্তমানে লেবাননের সামরিক বাহিনী, ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এবং লেবাননে জাতিসঙ্ঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনী (ইউনিফিল) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এছাড়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ উঠলে পক্ষগুলো সেটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠাবে।
সূত্র : আল জাজিরা, জেরুসালেম পোস্ট, বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement