হিজবুল্লাহ-ইসরাইল অস্ত্র-বিরতি চুক্তি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫
ইসরাইল ও লেবাননভিত্তিক প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ ১৩ মাস ধরে চলা সংঘাতের পর অস্ত্র-বিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ওই চুক্তি অনুসারে হিজবুল্লাহর সৈন্যরা লিতানি নদীর উত্তরে সরে যাবে এবং ইসরাইলি সৈন্যরা দক্ষিণ লেবানন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেবে।
ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে এই অস্ত্র-বিরতি চুক্তিটি ইসরাইলের মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার অনুমোদন করে। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে কার্যকর হবে।
ইসরাইলি টেলিভিশনে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন যে ইরান-সমর্থিত এই শিয়া গোষ্ঠটি যদি অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করে তা হলে ইসরাইলের আক্রমণ করার স্বাধীনতা বহাল থাকবে।
নেতানিয়াহু বলেন, 'হিজবুল্লাহ যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং পুনরায় অস্ত্র নেয়ার চেষ্টা করে, আমরা আক্রমণ করবো। তারা যদি সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসী অবকাঠামো আবার নির্মাণের চেষ্টা করে আমরা আক্রমণ করবো।'
নেতানিয়াহু বলেন, হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং হাজার হাজার হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে হত্যা করে আর হিজবুল্লাহর আক্রমণের সক্ষমতার অনেকখানি ধ্বংস করে ইসরাইল হিজবুল্লাহকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স এই নিস্পত্তিতে পৌঁছুনোর ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে।
হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই অস্ত্র বিরতিকে মধ্যপ্রাচ্যে 'সহিংসতা বন্ধের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ' বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ইরান এবং তার পক্ষে যারা লড়ছে, লেবাননে হিজবুল্লাহ এবং গাজায় হামাস উগ্রবাদীরা, তারা ইসরাইলি বাহিনীর সাথে এক বছরেরও বেশি এই সময়ে কড়া মূল্য দিয়েছে।'
তিনি বলেন, ইসরাইলি-হিজবুল্লাহ চুক্তির 'লক্ষ্য হচ্ছে, বৈরিতার স্থায়ী অবসান।'
তবে বাইডেন সতর্ক করে দেন, 'আমি পরিস্কার ভাবে বলতে চাই, যদি হিজবুল্লাহ বা অন্য কেউ এই চুক্তি লঙ্ঘন করতে চায় এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়ায় তা হলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নিজেকে রক্ষা করার অধিকার ইসরাইলের আছে।'
যুক্তরাষ্ট্রের এই বিদায়ী নেতা বলেন, হিজবুল্লাহ যেমন ইসরাইলে আক্রমণ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে,' হামাসের কাছেও বিকল্প রয়েছে। তাদের বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হচ্ছে আমেরিকান নাগরিকসহ ( গাজায় আটক) পণবন্দিদের মুক্তি দেয়া।'
অস্ত্রবিরতির শর্ত অনুযায়ী, জাতিসঙ্ঘ প্রস্তাব ১৭০১’-এ যেমনটি বলা হয়েছে সেই অনুযায়ী হিজবুল্লাহ তাদের সৈন্যদের লিতানি নদীর উত্তরে সরিয়ে নেবে। ইসরাইলি সৈন্যরা দক্ষিণ লেবানন থেকে ক্রমশই সরে আসবে। লেবাননের ভারপ্রাপ্ত প্রধামন্ত্রী নাগিব মিকাতি বলেছেন, লেবাননের ৫,০০০ সৈন্য সেখানে মোতায়েন করা হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, এই অস্ত্র বিরতির ফলে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে যে ৬০,০০০-এরও বেশি বাসিন্দা বাস্তুচ্যূত হয়েছেন, তারা নিজ স্থানে ফিরে আসতে পারবেন। সীমান্তের অপর পারে ১০ লাখেও বেশি লেবাননবাসী বাস্তুচ্যূত হয়েছেন। তবে কেউ কেউ এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন যে অস্ত্র-বিরতি কি সত্যিই ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে হিজবুল্লাহর হামলার ইতি টানতে পারবে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ বার ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈতান শামির বলেন, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরাইল তার লক্ষ্য অর্জন করেছে। শামির বলেন, 'আমরা এখন এমন এক পর্যায়ে রয়েছি যখন আমাদের আর পাওয়ার তেমন কিছু নেই। অনেক প্রচেষ্টা, কিছু হতাহত, আমরা যদি অব্যাহত রাখি আমাদের সম্ভবত আরো হতাহত হবে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহর অধিকাংশ ক্ষতি করা হয়েছে । চলো যাই- এ রকমটি করার ধারণায় এটা ছিল না যে হিজবুল্লাহকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা কিংবা তাদের এমন পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া যেখানে তারা আত্মসমর্পণ করবে। যে মুহূর্ত থেকে এই অভিযান শুরু হয়, তখনই বোঝা গিয়েছিল যে লেবাননে হিজবুল্লাহ গুরতর ভূমিকা পালন করে যাবে।'
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে লেবাননে অস্ত্র- বিরতি চুক্তি গাজার লড়াইয়ে কী প্রভাব ফেলবে ।
নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইল গাজায় লড়াই অব্যাহত রাখবে যে পর্যন্ত না হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা যায় এবং সকল পণবন্দি- জীবিত কিংবা মৃত- ফেরত আসে।
সূত্র : ভিওএ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা