পারমাণবিক বোমা বিষয়ে ইরানের অসহযোগিতার অভিযোগ পশ্চিমা বিশ্বের, আইএইএ’র ভিন্নমত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬:৫৪
পারমাণবিক বোমা বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) পাশ কাটিয়ে ব্যাপকভাবে ইউরেনিয়াম বৃদ্ধি করেছে ইরান। এ বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে পশ্চিমের তিনটি দেশ। তবে আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি এ প্রস্তাবের সাথে ভিন্নমত পোষণ করেন।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ভিয়েনায় ‘ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করাকে ‘সঠিক পথে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ’ হিসেবে স্বাগত জানিয়ে আইএইএ প্রধান বলেছেন, ইরান তাদের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম উৎপাদন বন্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভিয়েনায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি যে এটি সঠিক পথের একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। কারণ, আমরা যাচাই করেছি, এটাই সত্য।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রথমবারের মতো আমি বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। কারণ, তার অতীতের বাধ্যবাধকতা থেকে সরে ভিন্ন দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
তবে গ্রোসি আরো বলেন, ‘ইরান যে তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে ভিন্ন দিকে যাবে না, তা আমি অস্বীকার করতে পারি না।’
ইসরাইলের সাথে ইরানের চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করেছে আইএইএ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এরই মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুত করেছে তেহরান।
এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে হামাস-ইসরাইল সঙ্ঘাত। হাজার দিন অতিক্রম করল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। দু’টি যুদ্ধেই প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছে মিত্র দেশগুলো। মধ্যপ্রাচ্য আর ইউরোপে চলমান এসব সঙ্ঘাতের মধ্যেই আলোচনায় পারমাণবিক বোমা।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আইএইএর প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরমাণু বোমা তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামের মজুত ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে ইরান। পরমাণু অস্ত্র নির্মাণে প্রয়োজন হয় ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের, যেটির পরিমাণ প্রায় ১৮৫ কেজি।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এরই মধ্যে ৬০ শতাংশ উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুত করে ফেলেছে তেহরান, যা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়েও ৩২ গুণ বেশি।
ইরানের পরমাণু সক্ষমতার লাগাম টানতে ২০১৫ সালে দেশটির সাথে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া ও জার্মানি। তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্ঘাতের জেরে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখেনি চুক্তিটি। ২০১৮ সালে তো ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।
বিশেষজ্ঞের উদ্ধৃতি দিয়ে কাতারভিত্তিক আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান যদি কোনোভাবে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়, সেক্ষেত্রে শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বৈশ্বিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। বিশেষ করে ইসরাইলে ইরানের হামলার ঘটনার পর থেকে দেশটির পরমাণু সক্ষমতার মাত্রা নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমা দেশগুলো।
গত সপ্তাহেই ইরান সফর করেছেন আইএইএ প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। এরপরই তেহরানের ইউরোনিয়াম সক্ষমতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
এছাড়া, অক্টোবরে তেল আবিবে তেহরানের হামলার প্রায় এক মাস পর পরমাণু মজুতের বিষয়ে সতর্ক করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। পাল্টা জবাব দিয়েছে ইরানও।
ইউরোপের এই তিন দেশের হস্তক্ষেপকে কূটনৈতিকভাবে মোকাবিলার কথা জানিয়েছে ইরান।
সূত্র : এএফপি ও অন্যান্য
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা