গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলি ট্যাংকের হামলা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫০
ইসরাইলি বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে তাদের অভিযান প্রসারিত করেছে এবং ট্যাংকগুলো গাজা শহরের উত্তর প্রান্তে পৌঁছেছে। বাসিন্দারা জানিয়েছে, ট্যাংকগুলো শেখ রাদওয়ানের আশপাশের কয়েকটি অঞ্চল গুড়িয়ে দিয়েছে এবং অনেক পরিবারকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে।
বাসিন্দারা বলছে, ইসরাইলি বাহিনী কার্যকরভাবে গাজা শহর থেকে ছিটমহলের উত্তরে বাইত হানুন, জাবালিয়া এবং বাইত লাহিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এই তিনটি এলাকা ছেড়ে যাওয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে। যে সব পরিবার ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক, তাদের ইসরাইলি বাহিনী থেকে অনুমতি নিয়ে এলাকা থেকে বের হওয়া ছাড়া ওই দু’টি এলাকার মধ্যে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হামাস পরিচালিত গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস বলেছে, গাজার উত্তরাঞ্চলে একটি বড় ইসরাইলি অভিযানের এই নয় দিনের হামলায় সেখানে প্রায় ৩০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
তারা বলেছে, বেসামরিক বাড়িঘর এবং শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরাইলের বোমাবর্ষণের উদ্দেশ্য ছিল বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে গাজা ছেড়ে যেতে বাধ্য করা।
তবে ইসরাইল তা অস্বীকার করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, উত্তরাঞ্চলে হামলায় বিপুল সংখ্যক নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। আরো অনেকের সড়ক ও মেডিক্যাল টিমের নাগালের বাইরে বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জাবালিয়ার অনেক বাসিন্দা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখে, ‘আমরা ছেড়ে যাব না, আমরা মরব এবং আমরা চলে যাব না।’
গাজার উত্তরাঞ্চল হলো গাজা ভূখণ্ডের ২৩ লাখ জনগণের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের বাসস্থান। এক বছর আগে গাজার উত্তরাঞ্চল ইসরাইলের আক্রমণের প্রথম পর্যায়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ৭ অক্টোবরের ইসরাইলি শহরে হামলা করে হামাস এবং এক হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা ও ২৫০ জনকে পণবন্দী করে।
এক বছরের মধ্যে ৪২ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। হামলার এক বছর পর কয়েক লাখ বাসিন্দা ধ্বংসপ্রাপ্ত উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসেছে। ইসরাইল এক সপ্তাহেরও বেশি আগে যোদ্ধাদের নির্মূল করতে সৈন্য পাঠায়।
ইসরাইলের দাবি, তারা আরো হামলা করার জন্য পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে।
উত্তর গাজার উত্তরাঞ্চলের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বৃদ্ধির পাশাপাশি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একটি পৃথক ফ্রন্টে বিমান হামলা এবং স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল।
ইসরাইল মূলত উত্তর দিকে হামলা চালালেও গাজা ভুখণ্ডের অন্যান্য এলাকাতেও হামলা চালাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার দুপুরের আগ পর্যন্ত গাজা শহরের দক্ষিণে মধ্য গাজা ভুখণ্ডের বুরেজ ক্যাম্পের একটি বাড়িতে ছয়জনসহ কমপক্ষে ১১ জন নিহত হওয়ার কথা জানায়।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী রোবববার এক বিবৃতিতে জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা ভুখণ্ডজুড়ে প্রায় ৪০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে এবং কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি ও জাতিসঙ্খের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজায় কোনো নিরাপদ এলাকা নেই। তারা গাজার উত্তরাঞ্চলে খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। একইসাথে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে বলেও জানায়।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা