৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির ভবিষ্যত অনিশ্চিত!

যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির ভবিষ্যত অনিশ্চিত! - সংগৃহীত

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী বছর নির্বাচনে নির্বাচিত হলে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নতুন ব্যয়বণ্টনের চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুক্তিটিকে ‘একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন’ বলে অভিহিত করেছিল।

পাঁচ বছরের বিশেষ ব্যবস্থা চুক্তির (এসএমএ) খসড়া গত সপ্তাহে সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সাল থেকে এটি কার্যকর হবে। এ চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রথম বছরে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের অবস্থানের খরচে তাদের অবদান ৮ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১৪৭ কোটি ডলার করতে হবে।

দুই মিত্র দেশ প্রত্যাশিত সময়ের আগেই তাদের মধ্যে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। এটি নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সিওল এবং ওয়াশিংটনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪ অক্টোবর প্রকাশিত এক বিবৃতিতে চুক্তিটিকে ‘উভয়পক্ষের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন এবং প্রার্থী- উভয় হিসেবেই ক্রমাগত দাবি করে আসছেন যেন দক্ষিণ কোরিয়া, কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে সহায়তা করতে তাদের ব্যয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে আরো বেশি অবদান রাখে।

এপ্রিলে টাইম ম্যাগাজিনকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি চাই দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের সাথে যথাযথভাবে আচরণ করুক। সিওল দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের জন্য কার্যত কিছুই পরিশোধ করছে না।’

ট্রাম্প ফ্যাক্টর
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় হোয়াইট হাউসের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন শুক্রবার বলেন, ‘খুব সম্ভবত ট্রাম্প আবার চুক্তির কথা পুনর্বিবেচনা করতে বলবেন।’

হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের উত্তর-পূর্ব এশিয়ার সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ব্রুস ক্লিংনার উল্লেখ করে বলেন, চুক্তিটি ‘একটি নির্বাহী সমঝোতা’। ফলে ট্রাম্পের পক্ষে চুক্তিটি বাতিল করা সহজ। কারণ এতে কংগ্রেসের অনুমোদনের কোনো প্রয়োজন নেই।

রবার্ট র‍্যাপসন ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সিওলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে উপ-রাষ্ট্রদূত এবং সহকারী মিশন প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি গত সপ্তাহে জানান, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নভেম্বরে দ্বিতীয় মেয়াদে জয়ী হলে চুক্তিটি প্রশাসনের কাছে সন্তোষজনক বিবেচিত হবে না বলে তিনি উদ্বিগ্ন।

র‍্যাপসন বলেন, ‘নিরাপত্তার বোঝা ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের কাছে তার দাবি এবং প্রত্যাশার পরিপ্রেক্ষিতে আমার দৃঢ় আশঙ্কা হলো যে তিনি আরো অনেক বেশি ব্যয় চেয়ে আজকের চুক্তিটি পুনরায় আলোচনা করতে চাইবেন।’

র‍্যাপসন এসএমএ-এর ২০১৩-১৪ এবং ২০১৯-২১ সালের দু’টি ধাপের সাথেই সরাসরি জড়িত ছিলেন।

‘এটা আমাদের স্বার্থে’
ক্লিংনারের মতো অন্যান্য সাবেক সরকারি কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ব্যয়বণ্টন চুক্তি সংশোধন করার চেষ্টা করবেন কিনা সে সম্পর্কে এখনই বলা সম্ভব নয়।

রিচার্ড আরমিটেজ জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের সময় উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বুধবার বলেন, ‘তিনি চেষ্টা করতে পারেন, তবে এত তাড়াতাড়ি সেটা নিয়ে ভয় পাওয়ার দরকার নেই।’

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা দলের সাথে যোগাযোগ করে এবং সদ্য উপনীত চুক্তিতে ট্রাম্পের অবস্থান কী তা জানতে চাওয়া হয়। তবে তৎক্ষণিক এর কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement