২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্সের কিছু কারণ

-

অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্স, পৃথিবীর জন্য একটি ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি অ্যান্টিবায়োটিক গবেষণা করে চিকিৎসা নিরাপদ পর্যায়ে আনা যে কত কঠিন, অথচ অবহেলা এবং অজ্ঞতা ও তুচ্ছ কারণে মহামূল্যবান এ গবেষণাটির অপমৃত্যু বা রেজিস্টেন্স মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞজনরা অ্যান্টিবায়োটিকের এমন করুণ অপমৃত্যু নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কারণ চাইলেই একটি নিরাপদ অ্যান্টি বায়োন্টিক আবিষ্কার করা যায় না। আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়োটিকের সংখ্যাও বেশি নয়।
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সময় এবং পরিমাণ মতো খেলে, এটি জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে জীবাণুকে ধ্বংস এবং নিঃশেষ করে রোগীকে সুস্থ করে তোলে। সে অ্যান্টিবায়োটিকই ঠিকমতো না খেলে জীবাণুর সাথে যুদ্ধে হেরে নিজেই আজীবনের জন্য অক্ষম হয়ে পড়ে। আহত জীবাণুগুলো এমন শক্তি সঞ্চয় করে যে, এ অ্যান্টিবায়োটিক কখনই তাদের আর ধ্বংস করতে পারে না। এভাবে একে একে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো রেজিস্ট্যান্ট হয়ে গেলে বিপদের সময় চিকিৎসা করার ওষুধই থাকবে না। তাই পূর্ণ মাত্রার ওষুধ সেবন করে, জীবাণু একেবারে ধ্বংস এবং নিঃশেষ করতে হবে।
‘নিয়মমতো’ ওষুধ সেবন ছাড়াও যেসব ত্রুটি লক্ষ করা যায়, রোগীকে অপ্রয়োজনে হেলায় খেলায়, কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া, নিজের বা অন্য চিকিৎসকের অ্যান্টিবায়োটিকের চলমান চিকিৎসাকে মাঝপথে পরিবর্তন করা, ওষুধ সেবনের সময় বুঝতে না পারা যেমন দিনে দু’বার ওষুধ খাওয়ার নিয়মকে অনেকে সকাল-বিকেল মনে করে, ১২ ঘণ্টাকে দিন মনে করে। একডোজ ৬/৭ ঘণ্টা পরে; অন্য ডোজ ১৭/১৮ ঘণ্টা পরে খাওয়া। ওষুধ খেতে ভুলে গিয়ে বিলম্বে খাওয়া, ভরা পেটে ওষুধ খেতে হবে মনে করে খাবারের জন্য দেরি করা, অথচ অনেক অ্যান্টিবায়োটিকই খালি পেটে খাওয়া যায়, তাই সময় হলেই পেট খালি হোক, ভরা হোক, ওষুধ খেয়ে ফেলা। আবার অনেকে দু’দিন ওষুধ খাওয়ার পর একটু ভালো লাগলে আর ওষুধ খান না।
ওষুধ ফেরত দেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করেন। অনেকে টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারেন না, ইত্যাদি কারণে ওষুধ রেজিস্ট্যান্ট হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে, ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ফার্মাসিস্টরা ওষুধ খাওয়ার সময় ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবেন। অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক শুরু না করলে অনিয়ম বা রেজিস্টেন্সের আশঙ্কা থাকে না; কিন্তু শুরু করলে কোর্স পূর্ণ করতেই হবে। এ ছাড়া ৬ বা ৮, বা ১২ ঘণ্টা পরপর ওষুধ সেবন, এভাবে সময় ঠিক করে নিতে হবে। সবাই মিলে অল্প স্বল্প চেষ্টা করলে এবং সচেতন হলে, আমরা এক মহাদুর্যোগ থেকে বাঁচতে পারব আশা করি।
এম এস উল্লাহ ও ফাতেমা তুজ্জোহরা
অনাবিল হাসপাতাল, কাজলা,
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, ১২৩৬।


আরো সংবাদ



premium cement