মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী ‘মা’
- ২০ জুলাই ২০২২, ০০:০০
প্রথমে আমার শ্রদ্ধাপূর্ণ সালাম রইল। মা আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: একিন আলীর বড় ছেলে মো: কাউসার। আমার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানার মজলিসপুর গ্রামে। সমস্ত শরীরের রক্তে আওয়ামী লীগ মিশে আছে। মনপ্রাণে আওয়ামী লীগকে ভালোবাসি। জাতির পিতা, আপনার নাম এবং আপনার পরিবারের নাম শুনলেই মাথা অবনত হয়ে আসে। মা, আমার জীবনের দেউলিয়াপনার কথা বলতেই আপনাকে এই চিঠি লিখলাম। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করার পর সমস্ত পেনশনের টাকা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করেছিলাম। তাছাড়াও মানুষের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়েও বিনিয়োগ করি। বর্তমানে আমার ৪০ লাখ টাকা ঋণ আছে আর শেয়ার মার্কেটে ২৫ লাখ টাকা লস করেছি। ঋণের টাকার প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকা সুদ দিতে হয়। এতদিন এর কাছ থেকে নিয়ে তার কাছে সুদ দিয়ে এসেছি। বর্তমানে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। কিভাবে পাওনাদারের টাকা দিব আর না দিতে পারলে কিভাবে মুখ দেখাব এই তাড়নায় আমি মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছি। মাগো, আমার তো কোনো সহায় সম্বল নাই যে বেচে দিয়ে দেবো। মাগো, আমার তিন সন্তানের মধ্যে একটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি আর একটি মেয়ে অনার্স পড়ে আর ছেলে ছয় মাস হলো বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে পড়াশুনা করছে। আপনার দুটি পায়ে পড়ি আপনি আমার সন্তানদের দেখবেন। আমার ছেলে মেরিন একাডেমি হতে আল্লাহর রহমতে যদি পাস করে আসে তাহলে আপনি এই কলিজার টুকরাকে একটি ভালো চাকরি দেবেন। আর আমার মেয়েটির একটা বিয়ের ব্যবস্থা করে দেবেন। আর মা, আপনার দুটি পায়ে পড়ি আমার পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবেন যা দিয়ে মানুষের ঋণ এবং বর্তমানে চলাফেরা এবং আর্থিক ভরণপোষণ মেটাতে পারি। মা আমি মোট ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
মাগো, আমিতো আপনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো। মাগো আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি। আপনার নিকট আমার পরিবারকে সঁপে দিয়ে গেলাম। এত বড় সাহায্য এবং আমাকে উদ্ধার করা সরকারি পর্যায় ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে করা সম্ভব নয়। মা, আমিও একদিন হাসিখুশি থেকে সংসার চালিয়েছি। লোভে পড়ে এই শেয়ার মার্কেটে না বুঝে লস খেয়েছি আর মানুষের কাছ থেকে ঋণ এনে সংসার চালিয়েছি এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য ব্যয় করেছি। মাগো, আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন আমার পরিবারটিকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা করুন। মাগো, আর একটি কথা বলে যাই, আমার পিতা ভূমিহীন ৩০ শতাংশ খাসজমি সরকারের কাছ থেকে পান কিন্তু দখল করতে পারছি না। অনেক চেষ্টাও করেছি কিন্তু দখলকারীরা শক্তিশালী। কবলা, খাজনা, নামজারির সব কাগজ থাকা সত্ত্বেও আমরা দখল নিতে পারছি না। কিশোরগঞ্জ জেলার ডিসি মহোদয়কে যদি আপনি বলে দিতেন তাহলে সহজ হবে। আপনার দুটি পায়ে পড়ি মা আমার পরিবারকে নিরাশ করবেন না। পত্রটি লিখার সময় চোখের জলে লিখেছি। মা নিজে আত্মহত্যা করা যে কত কঠিন কাজ তা আপনি জানেন, কিন্তু আমার আর কোনো পথ খোলা নাই। মা আমি এই পত্রটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৪নং গেটে দিয়েছি। কিন্তু আপনি পেয়েছেন কিনা জানি না। পরিশেষে ১৫ আগস্ট নিমর্মভাবে হত্যাকারীদের হাতে নিহত জাতির পিতা ও বঙ্গমাতা, শেখ রাসেলসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিদায় নিলাম। ভুলত্রুটি মার্জনা করিবেন। ইতি আপনার সন্তানের মতো কাউসার।
মো: কাউসার
মজলিসপুর, নিকলী, কিশোরগঞ্জ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা