২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চি ঠি প ত্র

-

দুর্নীতি রোধে চাই কঠোর পদক্ষেপ
সরকারি কর্মচারীদের সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে সরকার তাদের বেতন শতগুণ বাড়ালেও দুর্নীতি কমার পরিবর্তে আরো বেড়েছে। বলা ভালো মাকড়সার জালের মতো জেঁকে বসেছে। দুর্নীতি এখন টপ টু বটম। বলা ভালো, সরকারি কর্মচারীদের একটি বড় অংশ কিভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশটাকে গ্রাস করছে। দেশের মানুষ দুর্নীতিমুক্ত দেশ চান। তবে বাস্তবতা হলো- দুর্নীতি দেশকে বোধশক্তিহীন করে ফেলছে। এর বিরুদ্ধে কথা বলাও এখন বিপদ।
যে হারে সরকারি অফিসে অর্থ বরাদ্দ করা হয় তা কিন্তু যথাযথভাবে ব্যয় করা হয় না। বছর শেষে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় করতে না পেরে ক্রয় ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকে। সেখানেও এজি বা অডিট অফিসগুলোর অসৎ কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে। দুর্নীতির পরিস্থিতি নিয়ে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, সরকারি অফিস-আদালতে বা সরকারি খাতে দুর্নীতি কমাতে গৃহীত পদক্ষেপ আরো শক্তিশালী করতে হবে।
বাংলাদেশে দুর্নীতি হচ্ছে একটি চলমান সমস্যা যার বিরুদ্ধে একটি কার্যকর ও টেকসই সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। দুর্নীতির ফলে সেবা খাতে মানুষের হয়রানি, বিড়ম্বনা, প্রতারণা ও ক্ষতির অভিজ্ঞতা এখনো তুলনামূলকভাবে বেশি। বিশেষ করে ভূমি প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ।
এসব খাতে মানুষের দুর্নীতির শিকার হওয়ার হার ৬০ শতাংশ। খাস মহল-জল মহলের নামে ভূমি মন্ত্রণালয়, ভূমি ভবন, জেলা প্রশাসন, এসি ল্যান্ড ও দেশের ভূমি অফিসগুলো বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ সেবার নামে অপরিসীম যন্ত্রণা, হয়রানি, দুর্ভোগ দিচ্ছে যা দেখার কেউ নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার জায়গা না থাকায় জনগণ আজ অসহায়। তাই দেশ ও জনগণের কল্যাণে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি দূর করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মাহবুব উদ্দিন চৌধুরী


নিরপেক্ষ নির্বাচন
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পর্কে দু-একটি বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের এই জটিল বিষয়টির পূর্ণ সমাধান দেননি। জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে জেলা জজদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে ভালো প্রস্তাব। তবে এই পরামর্শের সাথে আরো একটু সংযোজন করে বিষয়গুলো স্পষ্ট করতে চাই।
যেমন : ১. ইভিএম পদ্ধতি নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে না। ২. নির্বাচন কমিশনের হাতে নির্বাচন নেই। তাই এখন পুলিশ কমিশনারদের নিয়ন্ত্রণে নির্বাচন, সরকারের অ্যাজেন্ডা পালনে কোনো পুলিশ সদস্য ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। ৩. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আনসার এবং সেনাবাহিনীর সদস্য থাকবেন। বুথ অনুযায়ী সেই ক’জনকে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করবে। ৪. প্রত্যেক প্রার্থীর অ্যাজেন্ট আছেন কি না এবং থাকলে তারা নির্ভয়ে স্বচ্ছন্দে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন কি না কর্তব্যরত সেনা সদস্যরা তা তদারকি করবেন। ৫. স্মার্ট কার্ড বা আইডি কার্ড ব্যতীত কোনোক্রমেই ভোটগ্রহণ করা যাবে না। তাহলে পোলিং অফিসাররা দুর্নীতির সুযোগ গ্রহণ করবেন। ৬. ভোটকেন্দ্রে ওই কেন্দ্রের ভোটার ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির প্রবেশাধিকার থাকবে না। তবে শুধু প্রার্থীর অবাধ বিচরণ থাকবে। ৭. উক্ত বিষয়গুলো প্রসঙ্গে লোকবল সমস্যা হলে দেশের পৃথক বিভাগ অনুযায়ী নির্বাচন করা যেতে পারে। ৮. পুলিশ বাহিনী কোনো রাজনৈতিক দলকে রাস্তায় নামতে দেন না, সেই বাহিনী ভোটকেন্দ্রের বাইরে রাস্তায় শান্তি রক্ষা করবেন। উপরে উল্লিখিত এই কয়টি বিষয় যদি মেনে চলার বিষয়ে নিশ্চিত করা যায় তাহলে দেশে পরিচ্ছন্ন ও সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যেতে পারে। তা না হলে পুলিশ কমিশনারদের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী সরকারের এজেন্ডা পালন করতে পিছপা হবে না। আর তখন নির্বাচন কমিশনের চেয়ারে বসে বিবৃতি দেয়া ছাড়া আর কোনো ভূমিকা পালনের অবকাশ থাকবে না।
মাসুম পারভেজ, দৌলতপুর, খুলনা।


আরো সংবাদ



premium cement