১৪ শ’ বছরের ঐতিহ্য ভঙ্গ!
- ১৪ আগস্ট ২০২১, ০১:৫৩
‘নয়া দিগন্ত’ পত্রিকার একটি শিরোনাম ‘সৌদিতে নামাজের সময়ও দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত’। আমরা জেনে আসছি আমাদের কাবার দেশ, নবী সা:-এর দেশ, বর্তমান বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর বিশ্ব ইমামের দেশ সৌদি আরবে যেই না আজান, তাৎক্ষণিকভাবে বেচাকেনা বন্ধ, এমনকি দোকান খোলা অবস্থায় ফেলে রেখেই দোকানি মসজিদে । তখন দোকানদার কিছু খোয়া না যাওয়ার ব্যাপারে সবাই নিশ্চিত, কারণ, ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই মসজিদে। দু’-চারজন বহিরাগত অমুসলিম থাকলেও নামাজের সময় বাইরে বের হন না। এতে বিশ্ব মুসলিমের গর্ব ছিল এ জন্য যে, নবী সা:-এর দেশে বেনামাজি কেউ নেই। আজ সেই ঐতিহ্য এবং গর্বের মুখে মাটিচাপা। কারণ, এখন হতে ওরা অপ্রয়োজনে বাজারে ঘুরে বেড়াবেন। আর এভাবেই আস্তে আস্তে বাংলাদেশের মতো ডালে-চালে একাকার হয়ে যাবে। আমার জন্মভূমিতে পাকিস্তান আমলে ইংরেজদের রেখে যাওয়া বিধান মতে, তাদের ‘গির্র্জার দিন’ সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। আর মুসলমানদের সাপ্তাহিক জুমার দিন কেবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি দফতর বন্ধ ছিল। সম্ভবত এরশাদের আমলে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঘোষিত হয়েছে। আর শুক্রবার দিন বাংলাদেশে বিশেষ করে রংপুরে দুপুর ১২টায়ই সব দোকানপাট, এমনকি অমুসলিমরাও মালিক-কর্মচারী ছুটি দিয়ে স্বস্তি পান। তাহলে সৌদি আরবে শুক্রবারের ব্যাপারে কী হবে? শুক্রবার সম্পর্কে খবরে তেমন বলা না হলেও অন্যান্য দিনের লাভ-ক্ষতি বিষয়ে অর্থনীতিবিদ আবদুুল্লাহ আল তুর্কিস্তানি বলেই দিয়েছেন। তাহলে ১৪ শ’ বছরের ধর্মীয় ঐতিহ্য ভঙ্গ করে কেন এ সিদ্ধান্ত? এতে একদিন বাংলাদেশের মতো মসজিদ (জনসংখ্যার তুলনায়) গড়ের মাঠ আর হাটবাজার জমজমাট। আল্লাহ পাকের এ বাণীর কী হবে? ‘হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনে (জুমার) নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। ইহা তোমাদের জন্য অধিক উত্তম, যদি তোমাদের কিছু জ্ঞান থাকে। ‘অনন্তর যখন নামাজ সমাপ্ত হয়, তখন তোমরা জমিনের ওপর চলাফেরা করো এবং আল্লাহর (প্রদত্ত) জীবিকা অন্বেষণ করো এবং (উহাতেও) আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করিতে থাকে, যেন তোমাদের সফলতা লাভ করা হয়।’ (সূরা জুমা, আয়াত : ৯-১০)
আল্লাহ তায়ালা জুমার দিনেও আজানের সাথে সাথে জিকির (নামাজের) জন্য ব্যবসায়-বাণিজ্য কিয়ৎক্ষণের জন্য বন্ধ করে মসজিদে উপস্থিত হতে বলেছেন, নামাজ শেষে বৈধ জীবিকার সন্ধানে যার যে কর্ম করতে বলেছেন, তবে জিকির বা তাঁর স্মরণের সাথে। কারণ আল্লাহর স্মরণ থাকলে অবৈধ জীবিকা উপার্জন বন্ধ হতে বাধ্য। যদি আল্লাহর স্মরণ কর্তৃপক্ষের থাকে, তাহলে শুক্রবারের জন্য আল্লাহপাক ইবাদত এবং কাজের ফিরিস্তি বলে দেয়ার ১৪ শ’ বছরের প্রচলিত বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কী প্রয়োজন থাকতে পারে?
কাজী মো: গোলজার হোসেন
ইসলামপুর, পায়রাবন্দ, মিঠাপুকুর, রংপুর
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা