জ্ঞানভিত্তিক সমাজ
- ১২ আগস্ট ২০২১, ০০:৫৩
বই হচ্ছে মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ, যার সঙ্গে পার্থিব কোনো সম্পদের তুলনা হতে পারে না। একদিন হয়তো পার্থিব সব সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু একটি ভালো বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান কখনো নিঃশেষ হবে না। বিশ্বের বুকে যারা সফল হয়েছেন তারা সবাই বই পাঠে আগ্রহী ছিলেন। জীবনে সফল হওয়া সত্ত্বেও তারা বই পড়া বাদ রাখেননি। বই পড়ার মধ্য দিয়ে রোজ নিজেকে করেছেন সমৃদ্ধ। সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছিলেন, ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।’ বই পড়লে মনের দেউলিয়াত্ব ঘোচে। জীবন জগৎ সম্পর্কে জানাশোনা বাড়ে। রবীন্দ্রনাথ লাইব্রেরিকে ‘সভ্যতার সেতু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
মহামারীতে সবাইকে ঘরবন্দী থাকতে হচ্ছে। ঘরবন্দী একঘেয়ে সময়টাতে নিজেকে বিকশিত করতে বই হতে পারে সময়ের সেরা এক সঙ্গী। বই পাঠের অনেক উপকারিতা রয়েছে। বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করে। মানসিক উদ্দীপনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যা মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ দূরীভূত করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বই কখনো হাসায়, কখনো বাস্তবতা উপলব্ধি করিয়ে কাঁদায়, কখনো কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যায়। মানবজীবন সমস্যার ঊর্ধ্বে নয়। মানুষের চার পাশ সর্বদা অনুকূলে থাকে না। কিন্তু গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, সায়েন্স ফিকশন, মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন জীবনীগ্রন্থ পড়ে প্রাপ্ত জ্ঞান স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করে তোলে। মস্তিষ্ককে শাণিত করে। ফলে শাণিত মস্তিষ্ক দিয়ে জটিল ও কঠিন সমস্যাবলিকে সমাধান করে জীবনকে সহজ ও সুন্দর করা সম্ভব।
বই পড়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে জীবনে সফল হওয়ার পথ জানা যায়। তা ছাড়া আমাদের কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করে বই। বই পড়ার ফলে মানুষের প্রচুর অনুশীলন হয়। ফলে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তির বৃদ্ধি ঘটে। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ভাষার বই পড়ার মাধ্যমে নতুন নতুন শব্দ জানা যায়। নিজের শব্দভাণ্ডারের ঝুলি পূর্ণ হয়, যার মাধ্যমে বাচনভঙ্গি স্পষ্ট, সুন্দর ও তাৎপর্যমণ্ডিত হয়। নিয়মিত বই পড়ার ফলে ভাবনার প্রকাশ ক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে লেখায়ও স্বাতন্ত্র্য থাকে। এছাড়া মানুষের মধ্যে সংলাপ দক্ষতা বৃদ্ধি, মানসিক প্রশান্তি দান, একাকিত্ব দূর করা, চিন্তাশক্তির বিকাশ, আত্মসম্মানবোধ, সহানুভূতিবোধ জাগিয়ে তোলা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বই পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।
সমাজকে কুসংস্কারের প্রভাবমুক্ত রাখতে, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে, মনকে প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখতে বই পড়ার বিকল্প নেই। মহামারীলগ্নে কিংবা মহামারী-উত্তরকালে জাতিকে বই পারে সঠিক পথ দেখাতে। নিজে বই পড়ুন; বন্ধুকে বই পড়ায় উৎসাহী করে তুলুন। আসুন, মহামারীর সময়টাতে বই পড়ে দেশের কল্যাণে এগিয়ে আসি। সুস্থ, সুন্দর জীবনযাপনের মাধ্যমে পার করি কোয়ারেন্টিনের এক একটা দিন।
মো: হাছিবুল বাসার
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা