মহামারীর সময়ে সদয় আচরণ করুন
- ২৮ জুন ২০২১, ০০:০০
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই গ্রামে থাকেন এবং তারা দরিদ্র। রিকশা, অটোরিকশা চালনা, ক্ষুদ্র ব্যবসা, কৃষিকাজ ও দিনমজুরি তাদের পেশা। ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে করোনা মহামারীতে লকডাউনের কারণে তাদের আয় কমে যায়। ফলে মহামারী যত না ভয়াবহ তার চেয়ে বেশি ভয়ানক রূপ ধারণ করেছে দরিদ্রতা। একই দিন থেকে সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। ছাত্ররা এক দিনের জন্যও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় প্রবেশ করতে পারেনি। অথচ এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ করোনা মহামারীর মধ্যে অভাবে জর্জরিত অসহায় ছাত্র ও তাদের গার্ডিয়ানদের থেকে এক বছরের বেতন ও বিবিধ খরচ এবং বর্তমান বছরের সেশন ফি আদায় করে নিচ্ছে। করোনা মহামারীর কারণে দরিদ্রতার সাথে লড়াই করে জীবন কাটাচ্ছে মানুষ। দু’বেলা খাবার জোগাতেও রিলিফের জন্য দরিদ্র মানুষেরা রাস্তায় মিছিল ও মানববন্ধন করছে। শহর থেকে অসংখ্য মানুষ সপরিবারে গ্রামে চলে আসতে দেখা যায় কর্মের অভাবে। প্রতিদিনের পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে দরিদ্র মানুষের করুণ চিত্র। সরকার কয়েক দফায় তাদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছে। বেসরকারি অনেক সংস্থা ও দানশীল ব্যক্তি এগিয়ে আসছেন অসহায় মানুষের আর্তচিৎকারে। সরকার প্রতি মাসে যথাসময়ে নিয়মিত বেতন দিয়ে যাচ্ছেন সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। দুঃখের বিষয় হলো, দেশের মানুষের এই করুণ অবস্থায় এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ছাত্র বা তাদের গার্ডিয়ান থেকে পূর্ণ বছরের বেতন ও অন্যান্য চার্জ আদায় করে নেয়া, যা নির্মম ও অমানবিক আচরণ।
দরিদ্র ও অসচ্ছল ছাত্রদের প্রতি এ আচরণ চলতে থাকলে দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র ঝরে পড়বে। তাদের মেধার অপমৃত্যু ঘটবে। প্রতি বছরই দরিদ্র পরিবারের অনেক ছাত্র বিভিন্ন ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হতে দেখা যায়। ২০২১ সালেও অনেক ছাত্র মেডিক্যাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে, যাদের অভিভাবক অটোরিকশা চালক, কৃষক ইত্যাদি। ডিসি মহোদয়সহ অনেক মহৎ ব্যক্তি তাদের লেখাপড়ার দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেন।
সরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা ও সরকারের কাছে নিবেদন, করোনাকালে মানবিক কারণে ছাত্রদের সব বেতন ও বিবিধ খরচ মওকুফ করার ব্যবস্থা করুন। বেসরকারি ও কেজি স্কুলগুলোতে কমপক্ষে অর্ধেক বেতন মওকুফ করে দিন। ঝরে পড়া রোধ ও লেখাপড়ার উৎসাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপবৃত্তি পায় না, এমন ছাত্রছাত্রীদের সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করুন।
আবু ছালেহ মো: হাবীবুল্লাহ
শশীদল, ব্রাহ্মণ-পাড়া, কুমিল্লা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা