নাটক সিনেমায় শালীনতা ফিরবে কবে?
- ২৪ এপ্রিল ২০২১, ০০:০৫
একটি সময় ছিল যখন পুরো মহল্লা ঘুরেও টেলিভিশন পাওয়া যেত না। সপ্তাহে এক দিন মানুষ সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখত। তখন সিনেমায় যাওয়াটাও সামাজিকভাবেই অপরাধ বলে বিবেচিত হতো। কালের বিবর্তনে বড় পর্দার সিনেমা কিছুটা ছোট হয়ে টেলিভিশনে রূপ নেয়। ড্রয়িং রুম মিডিয়া হিসেবে পরিচিত টেলিভিশনে উপভোগ করার রীতি এখনো থাকলেও তা আগের মতো হয়ে ওঠে না। পরিবারের সব সদস্যকে নিয়ে টিভির পর্দায় অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকাটা অস্বস্তিকর বিষয় হয়ে উঠেছে। বাবা, মা, ভাইবোন একসাথে বসে যখন এ মিডিয়ার রঙিন পর্দা উপভোগ করতে বসে তখন অশ্লীল দৃশ্যের ছড়াছড়িতে লজ্জার অন্ত থাকে না। তাই সচেতন পরিবারের সদস্যরা এখন একসাথে বসে টিভি দেখেন না। কিন্তু মাইক্রো পর্দা হিসেবে পরিচিত স্মার্টফোন তো আর বাদ পড়ে না। কমবেশি সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন আছে। যে দৃশ্য বড়দের সাথে বসে দেখা বেমানান, তা নিশ্চয় গোপনে দেখা তেমন কোনো অপরাধই মনে হয় না। তা-ই চলছে বর্তমান সমাজে। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্করাও অশ্লীলতার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। অধিক ভিউ পাবার আশায় কিছু অসাধু ডিরেক্টর আর ইউটিউবার বিনোদন জগৎটাকে কলুষিত করে ফেলেছে। এক সময় নাটকে শিক্ষণীয় মেসেজ থাকত। এখন তা পুরো ভিন্ন চিত্রে রূপ নিয়েছে। কুরুচিপূর্ণ নাম, অশ্লীল দৃশ্য-সংলাপে জর্জরিত নাটকের মঞ্চ। অশ্লীল শিরোনামে ভরপুর মিডিয়া জগৎ। এ ছাড়াও জনপ্রিয় অভিনেতাদের মুখেও শোনা যাচ্ছে অশ্লীল সব কথাবার্তা। এ জাতীয় কথাবার্তাও ট্রেন্ড হিসেবে নিচ্ছে অভিনেতারা। আর এসব দেখে শিশুরা বিনোদনের মাঝে শিক্ষার বদলে অসুস্থ মানসিকতা নিয়ে বড় হচ্ছে। শিশুদের পাশাপাশি তরুণদেরও নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। লাখ লাখ ভিউ হওয়া এসব নাটক, শর্টফিল্মে প্রকৃতপক্ষে দর্শকের ক্ষতির মাত্রাই অধিক। অথচ শিল্পজ্ঞানহীন ইউটিউবার বা ডিরেক্টরেরা অগণিত পয়সা উপার্জনের সুযোগ পেয়ে লাভবান হচ্ছে। নাটক সিনেমায় শালীনতার অবক্ষয় শুরু হয়ে বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। কিছু দিন পর হয়তো সুস্থ বিনোদনের অভাবে ভুগবে পুরো জাতি। তাই সময় থাকতে নাটক সিনেমায় কর্তৃপক্ষের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন, ইউটিউব সেন্সর আরোপ করা উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নৈতিক অবক্ষয় রোধ করতে অভিভাবকদের সচেতনতাও খুব জরুরি।
আবু মো: ফজলে রোহান
নবগ্রাম, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা, কুমিল্লা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা