২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই

-


আমরা রাজবাড়ী জেলার গেজেটভুক্ত কিছু মুক্তিযোদ্ধা নিবেদন করছি, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়, জামুকা কর্তৃক আমাদেরকে অনেকবার যাচাই-বাছাই করে সঠিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ, ২০১৭ সালেও সব স্তরের প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত কমিটিতে যাচাই-বাছাই করে আমাদেরকে সঠিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ও সর্বসম্মতিক্রমে মতামত দেয়া হয়েছে। কিন্তু গত ১৯ ডিসেম্বর আবার শুধু গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। প্রায় সব বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স ৬৫ বছরের অধিক।
কারো হাঁপানি, কেউ হৃদরোগী, কেউ বাতব্যথায় কাতর হাঁটতে চলতে পারেন না, কারো ব্রেনে সমস্যা, কেউবা শয্যাগত। যাচাই-বাছাই মানেই একটা অজানা ভয়। নিত্যনতুন লোক দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে যুদ্ধকালীন কমান্ডারকে কখনো রাখা হয়, কখনো বাদ দেয়া হয়। এক কমান্ডার অন্য কমান্ডারের সহযোদ্ধাদের না চেনাই স্বাভাবিক। দু’দিন আগে কী তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছি তা পর্যন্ত সুস্থ সবল লোকেরই মনে থাকে না। আর ৪৯ বছর আগে মাত্র দুই-আড়াই মাস অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে এখন সেই অস্ত্রের কোন অংশের কী নাম তা সঠিকভাবে বলা কি সম্ভব? যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া কি আইনত ও ন্যায়সঙ্গতভাবে হচ্ছে?
২০০৩ সালে তৎকালীন সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটের ভূমিকায় ২ নং ধারায় বলা হয়েছেÑ ‘এই তালিকা বা (গেজেট) জাতীয় কমিটির সুপারিশক্রমে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হইতে থাকিবে।’ সেই জাতীয় কমিটি বলতে কী বুঝায়? জামুকা কি ওই কমিটির অনুরূপ নয়? ‘লাল মুক্তিবার্তা’ করার সময় যে প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করা হয়েছে বর্তমান যাচাই-বাছাই কি সে নীতিমালায় করা হচ্ছে? বর্তমান জামুকার যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার ৭ নম্বর কলামে (যাচাই-বাছাইয়ের কমিটির আওতাভুক্ত ব্যক্তির করণীয়) ৬ নং উপধারায় যে শর্ত দেয়া হয়েছে তা কি ‘লাল মুক্তিবার্তা’ যাচাই-বাছাইয়ের সময় ছিল?
পক্ষান্তরে, ২০১৭ সালে গেজেট যাচাই-বাছাইকালে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের নাম আসেনি? তাহলে ওই যাচাই-বাছাইয়ে যারা সর্বসম্মতিক্রমে সঠিক মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন, তাদের আবার যাচাই-বাছাই করা হবে কেন? যাচাই-বাছাই করার আগে বিষয়গুলো আইনানুগ বা ন্যায্য হচ্ছে কি না ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। কারো বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে সে কথা আলাদা। যারা যাচাই-বাছাই কমিটিতে থাকেন, তাদের নৈতিক মানও একরকম নয়। অহেতুক অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে মুক্তিযোদ্ধাদের নাস্তানাবুদ করা হয়। অর্ধশতাব্দী আগে বই পড়েছি, আর এখন সেই বই থেকে প্রশ্ন করা হলে তার সঠিক উত্তর দেয়া কি সম্ভব? যাচাই-বাছাই করে সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা হোক, তা আমরাও চাই। তাই আমাদের পরামর্শ ও অনুরোধ হলোÑ যুদ্ধকালীন কমান্ডার স্বয়ং অথবা তার দেয়া সনদপত্রসহ কমপক্ষে চারজন সহযোদ্ধার সাক্ষ্য, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি যাদের বয়স ৬৫-৭০ বছর, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের তথা আমাদেরকে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে দেখেছেন তাদের সাক্ষ্য, যে মুক্তিযোদ্ধা যে এলাকায় বা অঞ্চলে বা যে ইউনিয়নে যুদ্ধ করেছেন, সেই স্থানে উন্মুক্ত মাঠে যাচাই-বাছাই করা হোক। শহরে ঘরের কোণে আবদ্ধ করে গোপন যাচাই-বাছাই যেন না করা হয়। মাতৃতুল্য প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক যে সম্মানী ভাতা দেয়া হয় এই অনুগ্রহে বৃদ্ধ বয়সে কারো কাছে হাত পাততে হয় না। এমনকি চাকরিজীবী ছেলে-মেয়ের কাছেও মাস শেষে ধরনা দিয়ে বলতে হয় না; বাবা, দুই শ’ টাকা দাও, আমার দরকারে লাগবে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রায় সবাই নি¤œ কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। সম্মানী ভাতা বড় বিষয় নয়, আমরা চাই প্রাপ্য সম্মান। তাই মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীসহ মাতৃতুল্য প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য সাংবাদিকদের সবিনয়ে অনুরোধ করছি এবং যাচাই-বাছাইয়ের নামে যেন আমাদের হয়রানি করা না হয় সে বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি। অল্প সময়ে যাচাই-বাছাইতে ভুলভ্রান্তি বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। ধীরে-সুস্থে যাচাই-বাছাই করার জন্য অনুরোধ করছি।
রাজবাড়ী জেলার ক’জন মুক্তিযোদ্ধা

 


আরো সংবাদ



premium cement
নিহত ফায়ার ফাইটার নয়নের পরিবারে শোকের মাতম এক কার্গো এলএনজি ও এক লাখ ৩০ হাজার টন সার কিনবে সরকার জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বলরাম পোদ্দার কারাগারে ছুরিকাঘাতে গাজীপুর মহানগর জামায়াত সেক্রেটারি আহত কুলাউড়ায় নিষিদ্ধ পলিথিন রাখায় ২ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময় বাড়ল দেশে পৌঁছেই যা বললেন মিজানুর রহমান আজহারী অবৈধ বিদেশীদের বৈধতা অর্জনের সময় বেঁধে দিলো সরকার ষড়যন্ত্রে জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না : এলজিআরডি উপদেষ্টা ফেসবুকে ১২ দিনের পরিচয়ে প্রেম, গণধর্ষণের শিকার কিশোরী চৌগাছায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

সকল