২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

গ্যাস-পানির অপচয় রোধে সচেতনতা

-

পৃথিবীতে যে ক’টি জিনিস ছাড়া উদ্ভিদ ও প্রাণিকুলের জীবন ধারণ সম্ভব নয়, তার মধ্যে অন্যতম পানি ও বাু মহান সৃষ্টিকর্তা বিনামূল্যে দিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ডেই পানি দূষিত ও অপচয় হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। বিশ^ব্যাপী পানি নিয়ে ব্যবসা চলছে! নিরাপদ পানি আজ বহুজাতিক কোম্পানির বোতলে বোতলে বন্দী! এক তথ্যমতে, পৃথিবীর চার ভাগের এক ভাগ লোক নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পৃথিবীর দরিদ্র মানুষেরাই সবচেয়ে বেশি পানিদূষণের শিকার হচ্ছে। অন্য দিকে পানির অপচয় হচ্ছে। পৃথিবীজুড়ে পানির উৎসগুলো ধ্বংস ও দূষিত করা হচ্ছে। প্রাণ-প্রকৃতি-পানির মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যেখানে গাছপালা ও প্রকৃতির আধার ধীরে ধীরে কমতে থাকে সেখানে পানির উৎসও ক্রমেই নষ্ট হয়ে যায়।
বাংলাদেশ আয়তনে বিশে^র ছোট দেশগুলোর একটি। ১৬ কোটি মানুষের নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা এক বিরাট চ্যালেঞ্জ! পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো দিনে দিনে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। নদ-নদীগুলো ব্যাপক মাত্রায় দূষিত হয়ে পড়েছে। অনেক নদ-নদী মরে গিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বেশির ভাগ খাল-বিল-জলাশয় ভরাট করে ফেলা হয়েছে। ফলে শহরবাসীর পানির চাহিদা মেটানোর জন্য ব্যাপক চাপ পড়েছে ভূগর্ভস্থ উৎসের ওপর। এখন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর থেকেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির স্তর অনেক নিচে চলে গেছে। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রতি বছর পানির স্তর একটু একটু করে নিচে চলে যাচ্ছে। পানিকে শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে ভাবলে চলবে না, জীবন্ত সত্তা হিসেবে ভাবতে হবে। নিরাপদ পানির চাহিদা পূরণে শহরগুলোর প্রতিটি ভবনে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পানির অপচয় রোধ করতে হবে। গ্যাস আমাদের অনবায়নযোগ্য জাতীয় সম্পদ। গ্যাস সম্পদ সীমিত। শীতকালে গ্যাসের অপচয় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। গ্যাস ও পানির অপচয় রোধে সবার আগে দরকার সচেতনতা। বলা হচ্ছে, পৃথিবীতে যদি চতুর্থ বিশ^যুদ্ধ হয়, তাহলে সেটি হবে পানি নিয়েই। গ্যাস-পানির অপচয় রোধ করতে পারলে সীমিত সম্পদ দিয়েও চাহিদা মেটানো সম্ভব। সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে না পারলে প্রতিটি শিশুর উন্নত ভবিষ্যৎ এবং দেশের সার্বিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে।
সাধন সরকার
সদস্য, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)
[email protected]


আরো সংবাদ



premium cement