২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বৃত্তি পরীক্ষা

-

করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা গ্রহণ ব্যতিরেকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদত্ত সনদপত্রের ভিত্তিতে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণীতে ভর্তির নির্দেশ জারি করেছে। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২০১৯ সালে প্রাথমিকে ৫৫ হাজার ও নিম্নমাধ্যমিকে ৩০ হাজার ৮০০ ছাত্রছাত্রী মেধা ও সাধারণ কোটায় বৃত্তি পেয়েছিল। চলতি বছর বৃত্তির পরিমাণ ও সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রাথমিকে ৮২ হাজার ও নিম্নমাধ্যমিকে ৪৮ হাজার ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি দেয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। যেহেতু মহামারীর কারণে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে না, তাই প্রাথমিকে ৮২ হাজার ছাত্রছাত্রী আগামী তিন বছর ও নিম্নমাধ্যমিকে ৪৮ হাজার ছাত্রছাত্রী আগামী দুই বছর সরকারি বৃত্তিপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে। পল্লী অঞ্চলের ও শহরের বিপুলসংখ্যক গরিব অভিভাবকের মেধাবী সন্তান পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করায় বৃত্তি পেয়ে অষ্টম ও দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সমর্থ হয়ে থাকে।
২০২০ সালে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা না হওয়ার কারণে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত বিপুলসংখ্যক মেধাবী ছাত্রছাত্রী কোনো বৃত্তি পাবে নাÑ এই সিদ্ধান্তে গরিব অভিভাবকরা যেমন মুষড়ে পড়েছেন তেমনি মেধাবী শিক্ষার্থীরাও হতোদ্যম হয়ে পড়েছে। অতীতে এই বৃত্তি দিয়ে পড়া লেখা করে অনেক গরিব অভিভাবকের সন্তান এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করায় সমাজের দানশীল ব্যক্তিদের বা কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে। অনেকে কর্মকর্তা বা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ পাওয়ার ফলে তাদের বৃদ্ধ গরিব পিতা-মাতার শেষ জীবনে একটু সুখের মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। চলতি বছর পঞ্চম শ্রেণীর ৮২ হাজার ও অষ্টম শ্রেণীর ৪৮ হাজার ছাত্রছাত্রী বৃত্তিপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হলে এর জের আগামী পাঁচ বছর তাদের টানতে হবে। ফলে অনেক গরিব অভিভাবকের পক্ষে তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় অনেকের শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটবে। কারণ করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে কর্মসংস্থানের সুযোগ সঙ্কুুচিত হয়ে পড়ায় তাদের আয়-উপার্জন কমে গেছে।
তাই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বে¡ও প্রাথমিকে ও নিম্নমাধ্যমিকে বৃত্তিপ্রাপ্তির আশায় যে বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্রছাত্রী পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে তাদের বিষয়টি একান্ত মানবিক কারণে বিবেচনা করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আগের মতো প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তিপ্রত্যাশী কোমলমতি ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাকদের মুখে হাসি ফোটানো যেতে পারে। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ইউনিয়নভিত্তিক একটি কেন্দ্রে এবং নিম্নমাধ্যমিকের জন্য উপজেলাভিত্তিক একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় জনসমাগম কম হবে বিধায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁঁকি থাকবে না। পঞ্চম শ্রেণীর ৮২ হাজার ও অষ্টম শ্রেণীর ৪৮ হাজার ছাত্রছাত্রীকে ২০২০ সালে বৃত্তিপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সমীপে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে মো: হাবিবুর রহমান
বাসা নং ই/৩, ব্লক-এ, ব্যাংক কলোনি, সাভার, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement