নিম্নচাপে বিধ্বস্ত উপকূল : সাহায্য জরুরি
- ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
সাগরের লঘুচাপ ও নি¤œচাপে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ে বাংলাদেশে উপকূলীয় অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্প্রতি ৪ নং লঘুচাপের তাণ্ডব ও ভারী বৃষ্টিপাত বিগত ৪০ বছরেও ফসলের এত ক্ষতি কেউ দেখেনি। আমন ধান ও রবি ফসলের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এমনিতেই উপকূলীয় ভূ-ভাগ প্রায় সারা বছরই মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ক্ষতির শিকার হয়। এতে ৭১১ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসীমার এলাকাগুলো সব ঋতুতেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ দেশের উপকূলে পাঁচ লাখেরও অধিক মানুষ প্রাণ হারায়। এত বিপুল বিপর্যয় পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা। এরপর দেশের ওপর দিয়ে আঘাত হানে সিডর, আইলা, আমফান প্রভৃতি ঘূর্ণিঝড়। কৃষি অধ্যুষিত উত্তর বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী জনপদগুলোতে প্রচুর ক্ষতি সাধিত হয়। সম্প্রতি ২০ অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ৪৫-৬৫ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় এবং প্রচুর বৃষ্টি ঝরায়। লঘুচাপের বৃষ্টিপাতে ও ঝড়ো হাওয়ায় ধ্বংস হয়ে যায় কৃষকের উঠতি আমন ফসল, নিস্তেজ হয়ে পড়ে বেড়ে ওঠা শাকসবজি ও প্রাক বপণকৃত রবি ফসল ও আমন ফসল।
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর অর্থনীতি। দেশের বেশিরভাগ মানুষ সরাসরি কৃষিতে নিয়োজিত। অক্টোবরের প্রথম থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে শুরু হয় উঠতি আমন ধানের পরিপক্বতা এবং পাশাপাশি রবি ফসলের বীজতলা তৈরির পর্ব এবং বপন। বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি ও এ সময়ে বেড়ে ওঠে। কিন্তু একটানা পাঁচদিন ভারী বর্ষণে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। ঝড়ের প্রচণ্ডতায় ও জলোচ্ছ্বাসে সব কিছু পানির নিচে চলে যায়। এতে ৫০ শতাংশ আমন ধান চিটা হওয়ার সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। মৎস্যচাষিদের ঘেরগুলো বায়ুতাড়িত বৃষ্টিপাত ও জলের তোড়ে সব মাছ অবমুক্ত হয়ে গেছে। এতে চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। লাউ, কুমড়া, ঝিঙ্গে, ঢেঁড়স, লালশাকÑ কোনো সবজিরই অস্তিত্ব নেই। কৃষকের হাপিত্যেশে গুমোট হয়ে আছে স্বাভাবিক জীবন যাপন। এ অবস্থা নিরসনে সরেজমিন নিরূপণ সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের কৃষি ভর্তুকিসহ নগদ অর্থ ও আগাম ফসলের জন্য বীজ, শস্যদানা, সার, কীটনাশক প্রভৃতি জরুরি ভিত্তিতে সরকার কর্তৃক সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং আবার কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আজিজ ইবনে মুসলিম
সাবেক ব্যাংকার, গলাচিপা, পটুয়াখালী
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা