হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্য
- ১২ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
মূলত যে বস্তুগত জ্ঞান, প্রথা ও অভিজ্ঞতা বংশপরম্পরায় এক ব্যক্তি এবং অন্য স্থান থেকে অন্য ব্যক্তি কিংবা অন্য স্থানে প্রচার লাভ করে তাই ‘ঐতিহ্য’। আমরা বাঙালি, আমরা বাংলাদেশী। দেশের বেশির ভাগ মানুষের বসবাস কোনো না কোনো গ্রামকে কেন্দ্র করে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি বিশ্বের অন্যান্য জাতি থেকে আমাদের করেছে আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যগুলোর মধ্যে আছে গরুর গাড়ি, ঢেঁকি, লাঙল, জোয়াল কিংবা ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। এক সময় সবুজ শ্যামল গ্রামের মেঠো পথ চেয়ে বসে থাকাহত গাড়িয়াল ভাইয়ের দীর্ঘ অপেক্ষায়। কিন্তু আজ আর তেমনটা নাই। থাকবেই বা কী করে? মেঠো পথ ধরে চলা গরুর গাড়িগুলো যে আজ চোখেই পড়ে না। সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত অযান্ত্রিক গরুর গাড়ির ব্যবহার বর্তমানে নেই বললেই চলে। আজ আর কানে আসে না গ্রামের মহিলাদের ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দ। কালের পরিক্রমায় ঢেঁকি যে আজ প্রায় বিলুপ্ত। আজ আর দেখতে পাওয়া যায়, ভোর বেলা লাঙল জোয়াল কাঁধে নিয়ে কৃষকের মাঠে চলা কিংবা লাঙল জোয়াল কাঁধে করে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার দৃশ্য। জায়গাটা কেড়ে নিয়েছে যন্ত্রচালিত ট্রাক্টর। ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা আজ আর হয় না। হা ডু ডুর জায়গা নিয়েছে ক্রিকেট। ইচিং বিচিং, গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা, ছি বুড়ি, অপেনটি বায়স্কোপ এসব গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার নাম তরুণ প্রজন্মের কাছে অনেকটা অজানা। এভাবেই কি হারিয়ে যাবে গ্রাম বাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্যগুলো? বিশ্বায়নের এই যুগে সংস্কৃতির আদান-প্রদান এখন একটি বাস্তবতা। এটি আমরা সবাই জানি। আমরা এটাও জানি যে, গ্রামীণ সংস্কৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কিংবা সংস্কৃতিচর্চার ক্ষেত্রে অনেকটাই উদাসীন আমরা। ষোলোআনা বাঙালিয়ানা টিকিয়ে রাখতে আমরা কি সত্যিই নীরব দর্শকের ভূমিকায় ?
মুজাহিদ আহমেদ
সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা