টকশো শুনে মনে হয় তারাই জ্ঞানী-গুণী, আমরা কিছু জানি না : প্রধান বিচারপতি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ জুলাই ২০২৪, ১৬:০৭
টকশোকারীদের চেয়ে জ্ঞানী-গুণী আর কেউ নেই। আমরা যারা বিচারকের আসনে আছি, তারা কিছুই জানি না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তিনি বলেন, টকশোতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বুঝে বা না বুঝে আন্দোলন করতেই পারেন। তাদের মনে ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বোঝানো যাদের দায়িত্ব উনারা তা পালন করতে পারছেন না। শুধু টকশোতে কথা বলছেন। এত কথা বলছেন যে, টকশোকারীদের চেয়ে জ্ঞানী-গুণী আর কেউ নেই। আমরা যারা বিচারকের আসনে আছি, তারা কিছুই জানি না।’
বুধবার (১০ জুলাই) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল চেয়ে করা আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
এদিন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বলেন, ‘প্রথম ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসে ফিরে যাবে। দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর, শিক্ষকদের ক্লাসের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। তৃতীয়ত, ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো বক্তব্য থাকলে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে বক্তব্য রাখতে পারবে, আমরা শুনব।’
শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আমরা টকশোতে দেখি অনেক জ্ঞানী, মহাজ্ঞানী কথা বলছেন। মনে হয় বিচারপতিরা কিছুই জানে না। যেসব ছাত্র-ছাত্রী স্লোগান দিচ্ছেন, তারা আমাদের সন্তান। তাদের কোনো বক্তব্যে থাকলে আইনজীবীর মাধ্যমে কোর্টে দিতে পারে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, তবে পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হয়নি। তাদের কোনো বক্তব্য থাকলে তারা যেন আদালতে এসে বলেন। রাস্তায় নেমে তারা না বুঝে স্লোগান দিচ্ছে। রায় বাতিল বা বহাল রাখার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের।’
এদিন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। এদিন রায়ের সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। আগামী চার সপ্তাহ পর এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।
এর আগে সকালে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে দুই আবেদনের শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টায় সময় নির্ধারণ করা হয়। অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই সময় নির্ধারণ করেন।
শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। আমাদের রাষ্ট্রপক্ষেরও একটি আবেদন আবেদন রয়েছে। দুটি আবেদন একসাথে সাড়ে ১১টায় শুনানি হলে ভালো হয়। তখন আপিল বিভাগ শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টায় সময় নির্ধারণ করেন।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা