নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ ধ্বংস করতে ফার্মা সল্যুশনসকে হাইকোর্টের নির্দেশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ মে ২০২৪, ২২:৫৫
বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানির মোড়কে থাকা নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ধ্বংস করতে ফার্মা সল্যুশনস বাংলাদেশ লিমিটেড (পিএসবিএল) নামের প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২০ মে) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও রিট আবেদনকারীপক্ষের (ক্যাব) প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ওই স্ট্রিপগুলো (ব্যাচ নম্বর–২৬০৭৬১৫৬) ধ্বংস করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে আদালত প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।
রুলে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ধ্বংস করতে সংশ্লিষ্ট বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বাংলাদেশের ফার্মেসিগুলোতে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) বিক্রি বন্ধে বিবাদীদের পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফার্মা সল্যুশন বাংলাদেশ লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদিদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে ‘নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ– সংক্রান্ত সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
এতে বলা হয়, বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ পাওয়া যাচ্ছে। বাজার তদারকিতে প্রাপ্ত করতে ফার্মা সল্যুশনস বাংলাদেশ লিমিটেডের বাজারজাত করা সব ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ব্যাচ নম্বর–২৬০৭৬১৫৬ এবং সব ধরনের নকল স্ট্রিপ, ওষুধ, মেডিকেল ইকুইপমেন্ট ক্রয়–বিক্রয়, প্রস্তুত, সরবরাহ ও মজুত করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করা হলো।
নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ বিক্রি প্রতিরোধে গত ১১ ফেব্রুয়ারি অধিদফতরে এক মতবিনিময় সভা হয়, যেখানে নকল স্ট্রিপের প্রসঙ্গ আলোচনায় উঠে।
নকল ওই স্ট্রিপ সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর কাছে গত ৩ মার্চ আবেদন করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
এতে ইতিবাচক সাড়া না পেয়ে আইনি নোটিশ পাঠায় ক্যাব। এতে ফল না পেয়ে ১৯ মে ক্যাবের পক্ষে ওই রিট করা হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আযাদ।
আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া বলেন, নকল ডায়াবেটিস স্ট্রিপ (আকু চেক) ফার্মা সল্যুশনস বাংলাদেশ লিমিটেড (পিএসবিএল) বাজারে ছাড়ে। এই নকল স্ট্রিপ লাজ ফার্মার কাকরাইল শাখায় ধরা পড়ে। পিএসবিএলের ই–মেইল অর্ডারের পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্রিন্ট ওয়ান’ নামের ছাপাখানা ৩ হাজার ৫০০টি নকল মোড়ক প্রিন্ট করে দেয়, যা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বাজার অভিযানে ধরা পড়ে। নকল স্ট্রিপ সরবরাহ করার কথা পিএসবিএল স্বীকার করেছে। যদিও পিএসবিএল ৮ ফেব্রুয়ারিতে তার বিপণন প্রতিনিধিদের কাছ থেকে স্টেস্ট স্ট্রিপ (আকু চেক) প্রত্যাহারের চিঠি দেয়। তবে সাড়ে তিন হাজারের মধ্যে স্ট্রিপের কতগুলো প্যাকেট বিক্রির জন্য বিতরণ করা হয়েছে, কতটি মজুত আছে ও কতটি প্রত্যাহার করা হয়েছে— এমন কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। এমনকি জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, যে কারণে ক্যাব ওই রিট করে। সোমবার রিটের শুনানি নিয়ে রুলসহ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।