শেখ হাসিনার ট্রেনে হামলা : দণ্ডপ্রাপ্তদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২০ আগস্ট ২০১৯, ১৪:১২
১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলা করে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আটজনসহ মোট ৪৩ জনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এএইচএম কামরুজ্জামান মামুন ও সালমা সুলতানা সোমা।
আপিলকারী ৪৩ জনের মধ্যে আটজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত, ২২ জন যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত এবং ১৩ জন ১০ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন।
গত ২১ জুলাই মুত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ সকল আসামির খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
চলতি মাসের ৩ জুলাই পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী ওই মামলায় নয়জনের ফাঁসির আদেশ দেন। এছাড়া রায়ে ২৫ জনের যাবজ্জীবন, ১৩ জনের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। এছাড়া আসামিদের ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
আইনজীবী কায়সার কামাল জানান, আমার মনে হয়, বিচারক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে খুশি করার উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে এই রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এ রায়ের মাধ্যমে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শুধু অন্যায় করা হয়নি, অবিচার করা হয়েছে।
এর আগে হত ১৪ জুলাই এই মামলার রায়ের ডেথ রেফারেন্সের সকল তথ্য হাইকোর্টে পৌঁছে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়ে তাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় নয়জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কে এম আখতারুজ্জামান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির (স্থগিত কমিটি) সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু (পলাতক), কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মোকলেসুর রহমান ওরফে বাবলু, তার ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিম ওরফে শাহিন, অপর ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান ওরফে পলাশ, বিএনপি নেতা মো: অটল, ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের সভাপতি শ্যামল (নূরে মোস্তফা), স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আজিজুর রহমান ওরফে শাহীন ও বিএনপির সাবেক নেতা শামসুল আলম।
এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হন ২৫ জন। ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয় ১৩ জনকে। পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো: রুস্তম আলী গত ৩ জুলাই এ রায় দেন। একই সাথে, মামলার সকল কার্যক্রম ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
ওই আইনের ৩৭৪ ধারায় বলা হয়েছে, দায়রা আদালত যখন মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন, তখন হাইকোর্ট বিভাগের নিকট কার্যক্রম পেশ করতে হবে এবং হাইকোর্ট বিভাগ অনুমোদন না করা পর্যন্ত দণ্ড কার্যকর হবে না।
শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরাঞ্চলে দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে ঢোকার সময় ট্রেনবহর লক্ষ্য করে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা হামলা চালায়।
বিএনপি সরকারের আমলে ওই ঘটনায় করা মামলায় প্রথমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মামলাটির ফের তদন্ত হয়। ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল পুলিশ ঈশ্বরদীর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনের নামে আদালতে আবার অভিযোগপত্র জমা দেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা