জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২৮ এপ্রিল
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:১২
অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সোমবার (২৮ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এই বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশ দেন।
এদিন সকালে জিয়াউল আহসানসহ এই মামলার আটজন আসামিকে আদালতের হাজির করার পর ১১টা ২৬ মিনিটে শুনানি শুরু হয়।
চিফ প্রসিকিউটার মো: তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পরিদর্শন করে বিভিন্ন ধরনের ছাড়পত্র, সার্টিফিকেট এবং নিহত কিংবা আহতদের শরীর থেকে উদ্ধারকৃত বুলেটসহ নানা আলামত জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া প্রসিকিউশনের হাতে আছে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও যা ফরেন্সিক, যাচাই-বাছাই করার কাজ চলছে এবং এরপর তা তদন্ত প্রতিবেদনে সম্পৃক্ত করা হবে। এই বিষয়ে বিস্তৃত তদন্ত চলা দরকার যা অত্যন্ত জটিল এবং সময় সাপেক্ষ হওয়ার কারণে এই সময়ের প্রয়োজন।’
শুনানির একপর্যায়ে জিয়াউলের আইনজীবী নাজনীন নাহার তাকে জাতিসঙ্ঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনের একটি ফটোকপি এবং একটি আইনি বই সরবরাহ করার আবেদন জানালে এতে আপত্তি জানায় প্রসিকিউশন।
আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, ‘আমার মক্কেলকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ হয়েছে তা জানা প্রয়োজন এবং আইন পড়ার অধিকার যেহেতু সবার আছে তাই এই বই তাকে দিলে কোনো অসুবিধা নেই বলে আমি মনে করি। বই দু’টির কোনোটিই ক্ষতিকর নয়। গত সাত মাস ধরে জেল কর্তৃপক্ষ আমাকে এই বইগুলো নিতে কিংবা আমার মক্কেলকে সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাই আমি আজ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এই বিষয়ে আমি আদালতের সুনির্দিষ্ট অর্ডার চাই।’
চিফ প্রসিকিউটার তাজুল ইসলাম এর বিরোধিতা করে বলেন, ‘তিনি সত্যিই জেলগেটে এই দু‘টি বই নিতে চেয়েছেন কি না এবং কারা কর্তৃপক্ষ ঠিক এই দু’টি বইয়ের কারণেই তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন কি না সেটির কোনো প্রমাণ নেই। সেইসাথে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো চার্জ গঠিত হয়নি। সুতরাং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ এখনো তৈরি হয়নি বলে আমরা মনে করি। তাই এই আবেদন মঞ্জুর করার কোনো যুক্তি নেই।’
শুনানি শেষে আদালত সাবেক সেনা কর্মকর্তার এই আইনজীবীকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডাকযোগে কিংবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বই দু’টি তার মক্কেলকে পাঠানোর জন্য একটি আবেদন করতে বলেন এবং জানান এরপরও যদি কারা কর্তৃপক্ষ এই বই দু’টি তাকে সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানায় তবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল সাপেক্ষে আদালত এই বিষয়ে প্রয়োজনে লিখিত নির্দেশনা দিবে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর গত বছর ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় জিয়াউল আহসানকে।
অব্যাহতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত জিয়াউল আহসান ২০২২ সাল থেকে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন। সূত্র : বাসস