রুবাইয়াত ও আলমগীরকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৬
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: জাকির হোসেন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে ধানমন্ডি থেকে এবং একইদিন দিবাগত রাতে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন বুধবার তাদের ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো: জাকির হোসেন গালিবের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পৃথক দুই মামলায় তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একইসাথে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করা করেন। এদিন তাদের কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদন বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞেসাবাদের নির্দেশ দেন।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামি শিবলী ২০২০ সালের ১৭ মে থেকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এসময় মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডের নামে ব্রেকারেজ হাউজের পরিচালক আসামি জাভেদ এ মতিনের আমেরিকান নামসর্বস্ব মোনার্ক হোল্ডিং নামক কোম্পানির ব্যাংক হিসাব হতে চারটি ট্রান্সজেকশনের মাধ্যমে আসামি শিবলী রুবাইয়াতের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে এক কোটি ৯২ লাখ টাকা প্রেরণ করেন।
আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ব্যাংক একাইন্টের মাধ্যমে গৃহীত ঘুষকে বৈধতা প্রদানে জন্য অপর আসামি জাভেদ এ মতিনকে একর্ড এপারেল ইনকর্পোরেশন, ইউএসএ’র চেয়ারম্যান দেখিয়ে একটি ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তি করেন।
একইভাবে অপর একটি ঘটনায় আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম কর্তৃক পরিচালিত কোম্পানি ২০২০ সালে রফতানি করার সরকারি অনুমোদনহীন ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের সাথে ভুয়া পণ্যবিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে উক্ত কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে তিন লাখ ৬১ হাজার টাকা দেশে এনে নিজের ঋণ পরিশোধ বাবদ ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ২৯৬ টাকা ও বিভিন্ন তারিখে নগদ উত্তোলন করে ৯৫ লাখ দুই হাজার ৫২৪ টাকাসহ এক কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন।
দু’টি ঘটনায় আসামি শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম তিন কোটি ৭৬ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন এবং তার সহযোগীদের তার অবৈধ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ সংঘটন করায় ছয় আসামির বিরুদ্ধে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মামলা দায়ের করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের নামে মোট ৭২ কোটি ৮৫ লাখ ৩ হাজার ৫২৮ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে যার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় ৫৩ কোটি ৫৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬৭ টাকা। এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ২৭ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার ৯০৮ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে গত ১৬ বছরে রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুদক।
সূত্র : বাসস