৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা

আসামি গ্রেফতারে পুলিশের অসহযোগিতা, ট্রাইব্যুনালের অসন্তোষ

-

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অসহযোগিতায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত ট্রাইব্যুনাল এ বিষয়ে কেউ অসহযোগিতা করলে তা ট্রাইব্যুনালে আবেদন আকারে দিতে প্রসিকিউশনকে আদেশ দেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ২০ জুলাই যাত্রাবাড়িতে ইমাম হাসান তাইম হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনের দিন ধার্য ছিল। তবে, প্রতিবেদন প্রস্তুত না হওয়ায় প্রসিকিউশন পক্ষে দুই মাসের সময়ের আবেদন করা হয়। এদিন এ মামলার অন্যতম আসামি পুলিশের ওয়ারি জোনের তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমেদ ও যাত্রাবাড়ি থানার তৎকালীন ওসি আবুল হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ। এ সময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার এ মামলার তদন্তের অগ্রগতি ও আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে জানতে চান।

প্রসিকিউটর সুলতান ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করেন যে, এ মামলায় ছয়জন আসামির মধ্যে ইতোমধ্যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। এ জন্য সময়ের আরজি জানান তিনি। একই সাথে তিনি বলেন, আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ কোনো সহযোগিতা করছে না।

ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এ সময় প্রসিকিউটরদের উদ্দেশ্যে বলেন, তদন্ত দলের কোনো সমস্যা আছে কি না। আপনারা কি কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
জবাবে প্রসিকিউটর সুলতান বলেন, তেমন কোনো সমস্যা নেই।

ট্রাইব্যুনাল দুই মাস সময় দিয়ে বলেন, যদি এ সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ও আসামি গ্রেফতার না হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যাখ্যা দিতে হবে। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান প্রসিকিউটরদের উদ্দেশ্যে বলেন, কোনো সমস্যা থাকলে ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করেন। কর্তৃপক্ষকে বলেন। সরকারকে বলেন।

প্রসিকিউটর সুলতান বলেন, একজন আসামিকে (পুলিশের কর্মকর্তা) গ্রেফতার করতে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো সহযোগিতা করেননি।

ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামিকে কে ধরবে? তাহলে কিভাবে বিচার হবে? যারা কাজ করবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ট্রাইব্যুনালকে আবেদন আকারে জানান। সরকারকে জানান। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

একপর্যায়ে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ বলেন, কি তদন্ত হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। সরকারকে বলেন, ব্যবস্থা নিতে।

বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ বলেন, ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। কতজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে?
জবাবে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বলেন, ৩৫ জন।

এরপর বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ বলেন, এত বড় একটি ঘটনা। প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছে। সেখানে মাত্র ৩৫ জন গ্রেফতার হয়েছেন।

শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল কি কারণে আসামি গ্রেফতার হচ্ছে না তার কারণ উল্লেখ করে প্রসিকিউশনকে একটি আবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়। একই সাথে যাত্রাবাড়ির এ মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামি ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করে আদালত।


আরো সংবাদ



premium cement