ডা. ফয়েজ হত্যা : হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:০৪, আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:১২
লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই অভিযোগ দাখিল করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে র্যাব। হত্যার পর তাকে বাসার ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। গভীর রাতে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ দাখিলের পর এক লিখিত বক্তব্যে হাসানুল বান্না জানান, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডা. ফয়েজ আহমেদের নিজ বাসার ছাদে নিয়ে আঘাত করে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
ডা. ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডা. হিসেবে পরিচিত এবং লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন।
২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র্যাবের স্টিকার লাগানো একটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থলের বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙে ফেলে এবং ভুক্তভোগী ডা. ফয়েজকে নিজের বাসার দোতলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়ে যায়।
এই সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা (আসামিরা) বিল্ডিংয়ে ঢুকে সব কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তল্লাশি ও ভাঙচুর চালায়। ডা. ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়ে তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার সম্মুখভাগ ও নাকে-মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।
ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশে আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদ তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফয়েজ আহমেদের ডান হাঁটুর ওপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে, তাতে ওই স্থানে গভীর ক্ষত হয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়। এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ফয়েজ আহমেদকে তিনতলার ছাদের ওপর থেকে উপুড় করে (অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে দিয়া) বিল্ডিংয়ের সামনের অংশের নিচে ফেলে দেয়।
পরবর্তীতে তার লাশ সদর হাসপাতালে রেখে দিয়ে যায়। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে ওই ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার চেয়েছেন বলে লিখিত বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগ দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহাম্মদ ছিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র্যাব মে. জে. জিয়াউল আহসান, র্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও এবং আলোচিত নারায়নগেঞ্জর সাত খুন মামলার আসামি তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনের নামে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র : ইউএনবি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা