কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৪০
অভিযোগ ওঠা সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশনা দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন। সে অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু করবে।
সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ (৫) (বি) অনুসরণ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের নিকট নির্দেশনা প্রেরণ করেছেন। সে অনুযায়ী সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল আগামী সপ্তাহে তদন্ত শুরু করবে।
এর আগে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে কয়েকজন বিচারপতির আচরণ বিষয়ক তথ্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠিয়েছিল সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল। গত ১৫ ডিসেম্বর এ তথ্য জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বর্তমানে বেশ কয়েকজন বিচারপতি আচরণের (কনডাক্ট) বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে।
তার ধারাবাহিকতায় ১৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে সুপ্রিম কোর্টর কয়েকজন বিচারপতির বিষয়ে তথ্যবলী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির কাছে ইতোমধ্যে পাঠানো হয়।
১৯৭২ সালে প্রণীত মূল সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দেয়া হয় সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনীতে সেটা বাতিল করে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া হয় সংসদকে। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
সংবিধানের এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। রুলের রুল শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৫ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পাওয়ার পর ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত রায়টি দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। পরে একই বছরের ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
এরপর গত ২০ অক্টোবর সেই রিভিউ আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।
কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এই কাউন্সিল যাচাই বাছাই করে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ প্রেরণ করেন। সংবিধান অনুসারে, প্রধান বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ দু’জন বিচারপতির সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত হয়।
সেই সময়ে অন্তত ১৫ জন বিচারপতিকে বিচার কাজের বাইরে রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনজন বিচারপতি ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন। একজন অবসরে যান। এখন ১১ জন বিচারপতি বিচার কাজের বাইরে আছেন।
বিচার কাজের বাইরে থাকা ১২ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন, বিচারপতি মো: আখতারুজ্জামান, বিচারপতি মো: আমিনুল ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা