২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

গাজীপুরে বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

-


বেতন বকেয়া পড়ায় গাজীপুরে কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এর মধ্যে টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানায় দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা। পরে বেতন পরিশোধের আশ্বাস পেয়ে প্রায় চার ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন তারা। দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে টঙ্গীর শালিকচূড়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয় খাঁ পাড়া রোডের সিজন ড্রেস লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। তাদের দাবি, সেপ্টেম্বর মাস অর্ধেক পার হয়ে গেলেও এখনো জুলাই ও আগস্ট মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও ওই দিনের পর থেকে এ পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষের কোনো হদিস নেই। ফলে তারা বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
কারখানার শ্রমিক মনোয়ারা জানান, এর আগে আন্দোলন করে তারা গত জুন মাসের বকেয়া বেতন আদায় করলেও এখনো জুলাই ও আগস্ট মাসের বেতন বকেয়া, সেপ্টেম্বর মাসও অর্ধেক পার হয়ে গেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ওভার টাইমের টাকাও এখনো পরিশোধ করেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিকের বকেয়া বেতনের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করে হাজার হাজার মানুষকে প্রায় চার ঘণ্টা জিম্মি করে রাখা আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। এ আন্দোলনে সিজন ড্রেস কারখানা ছাড়া অন্য কোনো কারখানার শ্রমিকরা অংশ নেয়নি। বরং এ সময় আশপাশের সব কারখানায় উৎপাদন ছিল স্বাভাবিক। সিজন ড্রেস কারখানার শ্রমিকদের আহ্বানে পাশের শাহাদাত প্লাজায় অবস্থিত মার্চ স্ট্রিকস কারখানার শ্রমিকরা কোনো সাড়া না দেয়ায় তারা এ কারখানার গেট ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা চালায়। এ সময় কারখানাটির শ্রমিকরা ভেতর থেকে বহিরাগত শ্রমিকদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের মধ্যস্থতায় বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস পেলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।

শিল্প পুলিশের (গাজীপুর-২) সহকারী সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, গতকাল মঙ্গলবার জুলাই মাসের বকেয়া বেতনের অর্ধেক পরিশোধ করা হয় এবং আগামী রোববার থেকে অবশিষ্ট বকেয়া পর্যায়ক্রমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শ্রমিকরা কাজে ফিরে যাচ্ছে।
এদিকে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রা এলাকায় মাহমুদ জিন্স লিমিটেড ও নায়াগ্রা টেক্সটাইল লিমিটেডের শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। অপর দিকে, চক্রবর্তী এলাকায় বকেয়া বেতন ভাতার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেন বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকরা। এদিকে, গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা এলাকার এক্সিকিউটিভ হাই ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেন। এ ছাড়া গাজীপুরের সদর থানাধীন রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বেতন বৃদ্ধিসহ ৮ দফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করেন তাসমিয়া হারবাল লিমিটেডের শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে কারখানার ভেতরে হইচই শুরু করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা করছে শিল্প পুলিশ। এ ছাড়া বেতন বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন ভেরিতাস ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের শ্রমিকরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement