নিয়মনীতির তোয়াক্কা নেই মাছের ঘেরে বিলীন সড়ক
- শাকিল হাসান ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২
দুই পাশে মাছের ঘের। মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া সড়কটি কাজ করছে উভয় ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসেবে। বছরের পর বছর সড়কের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে মাছ চাষ করায় সড়কের বিস্তীর্ণ অংশে ধস দেখা দিয়েছে। কোন কোন অংশে সড়কটির অর্ধেক কিংবা তারচেয়ে বেশি অংশ বিলীন হয়ে গেছে ঘেরের মধ্যে। ফলে যাতায়াত, পণ্য পরিবহনসহ সামগ্রিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন সড়কটি ব্যবহার করা হাজার হাজার মানুষ। মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে জান ও মালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে অনেক। সড়কের দুরবস্থার এই চিত্র চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রূপসা গ্রামের।
সরেজমিন দেখা গেছে, ইউনিয়নের কাদির পাটওয়ারী বাড়ি এলাকা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত গাব্দেরগাঁও সড়কের দুই পাশে বিশাল বিশাল মাছের ঘের গড়ে তুলেছেন জসিম উদ্দিন পল্টু পাটওয়ারী গং। ঘেরের ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে আলাদা বেড়ি করার নিয়ম থাকলেও তা মানেননি তারা। এমনকি সড়কের সুরক্ষায় গাইডওয়াল কিংবা নিরাপত্তা জালও ব্যবহার করেননি তারা। সরকারি রাস্তা ঘেরের বেড়ি হিসেবে ব্যবহার করলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিগত সময়ে তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্কুলশিক্ষক হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সড়ককে বেড়িবাঁধ হিসেবে ব্যবহার করে বছরের পর বছর মাছ চাষ করে আসছেন পল্টু পাটওয়ারী গং। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার না করলে সড়কের ভাঙা অংশগুলো অচিরেই বিলীন হয়ে যাবে। ঘেরের মালিকরা যেন সড়কটি দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে এই দাবি জানাচ্ছি। তানভীর হাসান জিসান নামে একজন জানান, বিগত বছরে ঘের থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে ফুটপাথসহ রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ ভেঙে মাছের ঘেরে বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার সুরক্ষায় ঘের মালিকরা আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। রাস্তার ভাঙা অংশে গাড়ি উল্টে কেবল মালামাল ও পরিবহনের ক্ষয়ক্ষতি হয় না, মানুষ আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অতি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সম্পূর্ণ রাস্তা ঘেরে বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জানতে ঘেরের মালিক জসিম উদ্দিন পল্টু পাটওয়ারীর নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এস এম কাউছার উল আলম (কামরুল) বলেন, বছরের পর বছর পল্টু পাটওয়ারী গং এখানে মাছ চাষ করে আসছেন। তারা এখানে ড্রেজিংও করেছেন। নিয়মানুসারে সড়কের সুরক্ষা নিশ্চিত করে মাছ চাষ করার কথা থাকলেও তারা তা করেননি। তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো বিলীন হতে চলেছে। জনদাবি যৌক্তিক। সড়কটিকে সম্পূর্ণরূপে সংস্কারের জন্য যে বিশাল অর্থের প্রয়োজন ইউনিয়ন পরিষদের কাছে তা নেই। আমিও চাই পল্টু পাটওয়ারী গং সড়কটি সম্পূর্ণ মেরামতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।