২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

বন্দিচুক্তির দাবিতে ফের ইসরাইলিদের বিক্ষোভ

-

- গাজায় ইসরাইলি হামলা চলছেই, নিহত আরো ৬৪
- পশ্চিমতীরের ১০,৭০০ ফিলিস্তিনি ইসরাইলি কারাগারে
- ইসরাইলি ব্যারাকে রকেট হামলা হিজবুল্লাহর

গাজায় বন্দীদের মুক্তির জন্য আরো প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে মধ্য তেলআবিবে বিক্ষোভ করেছে সরকারবিরোধী হাজার হাজার ইসরাইলি। টানা প্রায় ১২ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এই হামলায় নিহত হয়েছেন ৪১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। তবে এরপরও হামাসের হাতে আটক থাকা বেশির ভাগ বন্দীকেই উদ্ধার করতে পারেনি ইসরাইল। এই পরিস্থিতিতে গাজায় আটক বন্দীদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে ইসরাইলে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
বিক্ষোভের সময় তারা সেনা সদরদফতরের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ভবনের সামনে সমবেত হন এবং নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। গতকাল রোববার আলজাজিরার খবরে বলা হয়, হাজার হাজার সরকারবিরোধী ইসরাইলি বিক্ষোভকারী তেলআবিবের প্রাণকেন্দ্রে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় গাজায় আটক থাকা বন্দীদের মুক্তির জন্য আরো প্রচেষ্টার আহ্বান জানান তারা। বিক্ষোভকারীরা শনিবার সেনা সদর দফতর এবং অন্যান্য সরকারি ভবনের বাইরে জড়ো হন এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এ ছাড়া যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চলে এখনো আটক থাকা প্রায় ১০০ বন্দীকে ফিরিয়ে আনার জন্য ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাথে চুক্তিতে পৌঁছানোর দাবি জানান তারা।

আলজাজিরা বলছে, গাজা থেকে ছয় বন্দীর লাশ উদ্ধারের পর বাকি বন্দীদের ফেরত আনার দাবিতে গত দুই সপ্তাহে ইসরাইলে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে আনুমানিক সাড়ে ৭ লাখ মানুষ গত সপ্তাহান্তের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। গত শনিবারের সমাবেশে অংশ নেয়া বন্দীদের পরিবার জানিয়েছে, বন্দীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের ব্যর্থতায় তারা হতাশ। তারা হামাসের সাথে চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারার জন্য নেতানিয়াহুকে দোষারোপ করেছেন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন, আলোচনা ব্যর্থ হওয়া মানে এটি তাকে যতদিন যুদ্ধ চলবে তত দিন ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করবে। গাজায় আটক থাকা ইসরাইলি সৈন্য নিমরোদ কোহেনের ভাই ইয়োটাম কোহেন বলছেন, ‘চুক্তি-বিনাশকারী এই সরকার বন্দীদের পরিত্যাগ করছে এবং তাদের মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দিয়েছে। কোহেন দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, যতদিন নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকবেন, এই যুদ্ধ অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে এবং বন্দিচুক্তি হবে না। বন্দীদের জীবন বাঁচাতে নেতানিয়াহুকে অবশ্যই সরাতে হবে। আলজাজিরার হামদাহ সালহুত জর্দানের রাজধানী আম্মান থেকে জানিয়েছেন, ইসরাইলি জনসাধারণ নেতানিয়াহুর প্রতি ক্রমান্বয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, তারা বলছেন, তিনি (নেতানিয়াহু) যোগ্য নন বা চুক্তি মেনে নিতে ইচ্ছুক নন। তারা বলছেন- নেতানিয়াহু ও তার সরকার বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য কিছুই করছে না। তিনি আরো বলেন, নেতানিয়াহু দেশীয় বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বলেছেন- যুদ্ধের সমস্ত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়াকে উপযুক্ত মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো- এই লক্ষ্যগুলোর কোনোটিই প্রায় এক বছর পরেও অর্জিত হয়নি।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসঙ্ঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের আক্রমণের ফলে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৯৫ হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া ইসরাইল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে।

পশ্চিমতীরের ১০৭০০ ফিলিস্তিনি কারাগারে
এ দিকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় নজিরবিহীন বর্বরতা চালানোর পাশাপাশি পশ্চিমতীর থেকেও হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। ফিলিস্তিনি বন্দী বিষয়ক সংস্থার সর্বশেষ রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরাইলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে জর্দান নদীর পশ্চিমতীর থেকেও ইসরাইলি সেনারা এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। গত ২৮ আগস্ট থেকে পশ্চিমতীরে নতুন করে ইসরাইলের হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত ৫০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

রকেট হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ
অন্য দিকে লেবাননের রাজনৈতিক সংগঠন হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের একটি ব্যারাকে রকেট হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলি রাওয়িয়া ব্যারাকের সদর দফতরে অবস্থিত ১৮৮তম ব্রিগেডে কয়েক দফা কাতিউশা রকেট দিয়ে হামলা চালানো হয়। ইসরাইলি বাহিনী এর আগে নিশ্চিত করেছে যে, ইয়েমেন থেকে নিক্ষিপ্ত একটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মধ্য ইসরাইলের একটি খোলা জায়গায় আঘাত হেনেছে। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা প্রায় ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র গ্যালিলি অঞ্চলে এবং অধিকৃত গোলান মালভূমিতে আঘাত হেনেছে। তাদের মধ্যে কিছু রকেটের হামলা আটকানো সম্ভব হয়েছে তবে বাকিগুলো খোলা জায়গায় আঘাত হেনেছে। বিভিন্ন স্থানে রকেট হামলার কারণে আগুন ধরে যায়। দমকলের কর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে যে, তারা গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের রাওয়াইয়া ব্যারাকে কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে। এর আগে উত্তর ইসরাইলের একটি প্রধান বিমান ঘাঁটিতে রকেট হামলার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। ওই ঘাঁটি সাফাদ শহরের কাছে অবস্থিত। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরাইলের সেনাবাহিনীও। বলা হয়েছে, সাফাদ শহরের দিকে ২০টি রকেট ছোড়া হয়েছে, যার অধিকাংশই আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে। কিছু খোলা জায়গায় পড়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাজধানীতে সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বগাথা তুলে ধরবেন ড. ইউনূস কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু তোফাজ্জল হত্যা : ঢাবির ৬ শিক্ষার্থীর দায় স্বীকার কুমিল্লা-১০ বিনির্মাণে আমাদেরকে কাজ করতে হবে : ইয়াছিন আরাফাত উন্নয়নের নামে দুর্নীতির মহোৎসবে মেতেছিল আ’লীগ : হামিদ আজাদ ভাইকে হত্যা করাতে ১৪ মাসের ষড়যন্ত্র ভান্ডালজুড়ি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে খুলনায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাংবাদিক রনো ও তার পরিবার চট্টগ্রাম পানগাঁও নৌরুট জনপ্রিয় করার উদ্যোগ

সকল