১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
বিচার হতে পারে ট্রাইব্যুনালে

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১১ গণহত্যার অভিযোগ ও ১২৫ হত্যা মামলা

-

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে আশুলিয়ায় ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, ২১ পুলিশ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩৬ জনের বিরুদ্ধে ৫ সেপ্টেম্বর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অপর দিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারা দেশে ১২৫টি হত্যা মামলা হয়েছে। এর বাইরে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে আরো ১৩টি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৩৮টি মামলা করা হয়েছে।
আন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারের পক্ষ থেকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদরাসা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে আসামি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার সরকারের কিছু মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী ও এমপি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের নির্দেশে ও পরিকল্পনায় কিছু পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, কিছু র্যা ব কর্মকর্তা ও র্যা ব সদস্য, কিছু অস্ত্রধারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগের ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কর্তৃক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্রজনতাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দ্যেশ্যে তাদের ওপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে কমপক্ষে ৮১৯ জন শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় কমপক্ষে বিশ হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক জখম হয় এবং এক হাজার আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরতরে অন্ধ ও পঙ্গুত্ব বরণ করে। কয়েক হাজার ছাত্র জনতা শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় আসামি কর্তৃক কমপক্ষে ৩২ জন শিশুও নির্মম গণহত্যার শিকার হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১১ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের সাথে সারা দেশে দায়ের হওয়া ১২৫টি হত্যা মামলারও বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হতে পারে বলে মনে করেন আইনবিদরা। তাদের মতে, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার সবই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার্য হবে। এটা শুধু একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব মামলার তদন্তভার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে দিতে হবে।
এ দিকে এসব হত্যা ও গণহত্যার বিচারের জন্য শিগগিরই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ট্রাইব্যুনালে বিচারের বিষয়ে যা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
ট্রাইব্যুনালে বিচারের বিষয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বার্তায় বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের ট্রাইব্যুনাল তৈরি করার লক্ষ্যে শীর্ষ আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেছেন।
অপর দিকে ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনের সময় যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর জন্য নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গণহত্যার সাথে জড়িতদের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৪ আগস্ট সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১১টি অভিযোগ দায়ের করা হলেও ট্রাইব্যুনালে এসব অভিযোগের বিচার করতে হলে জরুরি ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করতে হবে বলে মনে করেন ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ ও ট্রাইব্যুনালের ডিফেন্স আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ও বিধি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। এর আগে এই আইনে করা বিচার দুনিয়াজুড়ে সমালোচিত। সেজন্য বর্তমান আইনের অধীন এই ট্রাইব্যুনালে কারো বিচার গ্রহণযোগ্য হবে না, বরং অতীতের বিচার কার্যের বৈধতা দেয়া হবে।
অপর দিকে ট্রাইব্যুনালের ডিফেন্স আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, যেসব হত্যা মামলা থানাতে বা ম্যাজিস্ট্রেট কোটে দায়ের করা হয়েছে, এগুলো মূলত গণহত্যা এবং গণহত্যার সাথে রিলেটেড নির্যাতন, বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং অত্যাচার যা যা হয়েছে সেগুলো পেনাল কোডের আন্ডারে দাখিল করা হয়েছে। এর সবই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার্য হবে। এটা শুধু একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব মামলার তদন্তভার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম এবং তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে দিতে হবে। তারা সবগুলোকে সামগ্রিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করে ফরমাল চার্জ আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবে। সুতরাং যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলোর ক্ষতির কোনো কারণ নেই। সেগুলো আন্তর্জাতিক আইনের ধারা অনুযায়ী সাজানোর ব্যাপরটা তদন্ত সংস্থা এবং প্রসিকিউশন টিম করবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী বিচার হবে। তবে আইনের কোনো সংশোধনের প্রয়োজন আছে কি না সেটা সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, যেসব হত্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে তার সবটির বিচার ট্রাইব্যুনালে হওয়া উচিত। এখানে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে গ্রাউন্ড লেভেলে যারা ছিল সবার বিচার করা সম্ভব।
ট্রাইব্যুনালে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগসহ তিনটি অভিযোগ দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম। তিনি বলেন, বর্তমান ট্রাইব্যুনাল আইনেই এসব অভিযোগের বিচার করা সম্ভব। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(১) ধারায় এ বিষয়ে পরিষ্কার করে বলা আছে।
এ দিকে এখন পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এবং সংঘর্ষে ৭৬০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য, সম্প্রচার ও টেলিকমিউনিকেশনবিষয়ক উপদেষ্টা মো: নাহিদ ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে আমরা নিশ্চিত হয়েছি শিশুসহ আট শতাধিক ছাত্রজনতাকে শহীদ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের মতো আহতের তালিকা তৈরি হয়েছে। আরো কাজ চলছে। বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের দেখাশোনার জন্য সরকারি একটি কমিটি কাজ করছে।
এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২৫টি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং সাবেক মন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতা, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক। গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং পুলিশ, বিজিবি ও র্যা বের সদস্যরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা হুকুমদাতা, অর্থদাতা ও পরিকল্পনাকারী।
এখন পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছেন
এসব মামলায় এখন পর্যন্ত সাবেক মন্ত্রী, উপদেষ্টা, আইজিপি, সরকারি কর্মকর্তাসহ ২৪ জন গ্রেফতার হয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম গ্রেফতার হন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গত ১৩ আগস্ট তাদের রাজধানীর সদরঘাট থেকে গ্রেফতারের তথ্য জানায় পুলিশ। পৃথক চারটি হত্যা মামলায় তাদের ২৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তারা এখনো রিমান্ডে আছেন।
১৪ আগস্ট গ্রেফতার হন সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ও জুনাইদ আহমেদ পলক। ১৯ আগস্ট গ্রেফতার হন সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি ও সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। গত ২০ আগস্ট গ্রেফতার হন সাবেক সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন। ২২ আগস্ট গ্রেফতার হন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। ২৩ আগস্ট সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ গ্রেফতার হন। সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান গ্রেফতার হন ২৪ আগস্ট। আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপ গ্রেফতার হন গত ২৫ আগস্ট। ২৬ আগস্ট গ্রেফতার হন জাসদ সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গ্রেফতার হন ২৮ আগস্ট। সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম গ্রেফতার হন ২ সেপ্টেম্বর।
৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ছাড়া ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব:) জিয়াউল আহসান গ্রেফতার হন ১৬ আগস্ট। নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব:) মোহাম্মদ সোহায়েল গ্রেফতার হন ২০ আগস্ট। সাবেক দুই আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন গ্রেফতার হন ৩ সেপ্টেম্বর।
রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বাইরে গত ২১ আগস্ট দু’জন সাংবাদিকও গ্রেফতার হয়েছেন। শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা দম্পতিকে দু’টি হত্যা মামলায় ৯ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারা এখন কারাগারে।


আরো সংবাদ



premium cement
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেফতার সোনারগাঁয়ে শেখ হাসিনা-শেখ রেহেনাসহ ২৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা গাজার চলমান ঘটনাবলী সমসাময়িক বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভুল : বসনিয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার পর থেকে ভারতের আসাম-মেঘালয় সীমান্তে আটক ৬৫ বাংলাদেশী ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুসলিম উম্মাহ'র মর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব : ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হোসেনপুরে স্কুলশিক্ষকের বসতঘর পুড়ে ছাই রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টির আভাস 'শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে' সিংগাইরে ধলেশ্বরী নদী থেকে লাশ উদ্ধার সাতক্ষীরায় বজ্রপাতে মৎস্যচাষির মৃত্যু সাংবাদিক শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল বাবুর ওপর ডিম নিক্ষেপ

সকল