১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
আশুলিয়ায় গুলিবিদ্ধ ৪৬ লাশ পোড়ানো ঘটনা

শেখ হাসিনাসহ ২১ পুলিশের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার মামলা

ট্রাইব্যুনালে আরো ২ অভিযোগ; মোট অভিযোগের সংখ্যা ১১; নীলফামারীতে আরো ১ মামলা
-

আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, ২১ পুলিশ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩৬ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আশুলিয়ায় মানারাত ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নিহত আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহর বোন সাইয়েদা আক্তারের পক্ষে আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। গত ৫ আগস্ট আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহ আশুলিয়ার বাইপাইলে ছাত্র-জনতার মিছিলের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
এছাড়া রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এবং সাভার বাজার রোডে দু’জনকে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ তার কয়েকজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরো দু’টি মামলার আবেদন করা হয়েছে।
এ নিয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১১টি হত্যাকাণ্ডে অভিযোগ দায়ের করা হলো। এর আগে ঢাকায় সাতটি এবং চট্টগ্রামে একটি গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। যেগুলোর ওপর তদন্ত চলমান রেখেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, এক থেকে পাঁচ ও সাত থেকে দশ নম্বর আসামিদের নির্দেশ ও পরিকল্পনায় ও অন্যান্য আসামিরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাদের হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ।
আবেদনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, সাভার-আশুলিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মো: সাইফুল ইসলাম, তৎকালীন সরকারের কিছু মন্ত্রী, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত এসপি মোবাশ্বিরা জাহান, সাবেক এসপি আব্দুল্লাহহিল কাফি, ঢাকা জেলা উত্তরের সাবেক ডিবি পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নির্মল চন্দ্র, ওসি এ এফ এম সায়েদ আহমেদ, এসআই আফজালুল, এসআই জলিল, এস আই মো: রাকিবুল এসআই আবুল হাসান, এসআই হামিদুর রহমান, এস আই নাসির উদ্দিন, এস আই আব্দুল মালেক, এ এস আই সুমন চন্দ্র গাইন, এ এস আই বিশ্বজিৎ রায়, কনস্টেবল মুকুল, কনস্টেবল রেজাউল করিমসহ কিছু পুলিশ সদস্য, আশুলিয়া থানার আওয়ামী লীগ সভাপতি ফারুক হাসান তুহিন ওরফে তুহিন কুলু, ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাদিম হোসেন, যুবলীগের আহ্বায়ক কবির হোসেন সরদার, ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো: শামীম হোসেন, যুবলীগের আলমগীর হোসেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সোহাগ, সেক্রেটারি টিটু, সাভার ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক, সাভার আওয়ামী লীগের আলী হায়দারসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্যরা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইলে ছাত্র-জনতার মিছিলে ১ থেকে ১২ নম্বর আসামির নির্দেশে ১৩ থেকে ৩৬ নম্বর আসামিরা নির্বিচারে গুলি চালালে আহনাফসহ ৪৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। গুলিবিদ্ধ লাশগুলো ১৩-১৬ নম্বর আসামিসহ আশুলিয়া থানার অজ্ঞাতনামা কয়েকজন এসআই ও কনস্টেবল ময়লার বস্তার মতো করে ভ্যানে তুলে থানার পাশে পুলিশের একটি গাড়িতে তুলে পেট্রল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তাদের লাশগুলো পুড়িয়ে দিয়ে গণহত্যার নির্মম ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। ছাত্র-জনতার লাশ পোড়ানোর নির্মম দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ কিছু জাতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়।
ট্রাইব্যুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার আরো ২ অভিযোগ
ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানা ও সাভার বাজার রোডে দু’জনকে হত্যার ঘটনায় পতন হওয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কয়েকজন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানার সামনে নিহত মালয়েশিয়া প্রবাসী সাইফুল ইসলাম সেকুলের ভাই খায়রুল ইসলামের পক্ষে বৃহস্পতিবার একটি আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম। এই অভিযোগে বলা হয়, সেকুল তার বোন লিমাসহ আন্দোলনে যান। তার বোন লিমার সামনেই গুলিবিদ্ধি হন সেকুল।
অপর অভিযোগটি দায়ের করেন ২০ জুলাই সাভার বাজার রোডের আমিন টাওয়ারের সামনে নিহত মেহেদী হাসানের বাবা বাচ্চু সরকার। অভিযোগে বলা হয়, মেহেদী হাসান তার বোনের স্বামী আল আমিনসহ আমিন টাওয়ারের সামনে আন্দোলনে অংশ নেন। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টায় তার বোনের স্বামী আল আমিনের সামনেই মেহেদী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
নীলফামারীতে শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে দলীয় কার্যালয়ে, বাড়িতে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১২৬ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে জেলা আদালতে মামলাটি দায়ের করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সালাম বাবলা। এতে অজ্ঞাত আরো ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এই মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, নীলফামারী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মিঠু, সাধারণ সম্পাদক রাসেল আমিন স্বপন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো: মনিরুল হাসান শাহ আপেল, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার প্রমুখ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশের মতো নীলফামারীতে ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করে। ওই সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, নীলফামারী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের নির্দেশে উল্লিখিত ব্যক্তিরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান। এছাড়াও বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের দলীয় কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদিপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রিনো বলেন, ‘আব্দুস সালাম বাবলা বাদি হয়ে নীলফামারী আমলি আদালত-১ এ মামলা করেন। মামলার পর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: শাহিন কবির নীলফামারী সদর থানাকে মামলাটি এফআইআর করার নির্দেশ প্রদান করেন।’
সিলেটে জামায়াত নেতা নিহতের ১০ বছর পর মামলা
সিলেট থেকে প্রতিনিধি জানান, সিলেটের বিশ্বনাথে ২০১৩ সালে হরতাল চলাকালে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে জামায়াতের সংঘর্ষ চলাকালে গোলাম রব্বানী নামে এক জামায়াত নেতা নিহত হওয়ার ১০ বছর পর আদালতে একটি হত্যামামলা দায়ের করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ৩ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন নিহতের চাচা মতিউর রহমান। তিনি উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পাকিচিরি গ্রামের মৃত সাজিদুর রহমানের ছেলে। আদালতের বিচারক নুসরাত তাসনিম অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রমাপ্রসাদ চক্রবর্তীকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদি মো: মতিউর রহমান।
মতিউর রহমানের দায়ের করা ২৬৮/২০২৪ নম্বর সিআর মামলার এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। এ ছাড়া ওই মামলায় নাম উল্লেখসহ আসামি করা হয়েছে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য নুনু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান, সহসভাপতি ফখরুল আহমদ মতিন, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক মকদ্দছ আলী, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিক আলী, বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন ওসি মো: আবুল কালাম আজাদ, পরিদর্শক (তদন্ত) রূপক কুমার সাহা, উপপরিদর্শক জিয়াউদ্দিন উজ্জ্বলসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও আরো পুলিশ সদস্যসহ ৭২ জনকে। এছাড়া ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে আরো ২০০ জনকে। এ বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার ওসি রমাপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, শুনেছি একজন নিহতের ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং বিচারক তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। আদালতের আদেশ পেলে তদন্তসাপেক্ষে যথাসময়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
সাভারে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরেক হত্যা মামলা
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাভারে নবী নূর মোড়ল নামের এক মাছ বিক্রেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে আরো একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে সাভার মডেল থানায় আটটি মামলা দায়ের করা হলো। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার (এসআই) মো: ফয়সাল আলম। এর আগে নিহতের স্ত্রী আকলিমা বেগম গত বুধবার বাদি হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। আকলিমা বেগম খুলনার পাইকগাছা থানার শ্রীকণ্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহত নবী নূর মোড়ল খুলনার পাইকগাছা উপজেলার রাড়ুলী ইউনিয়নের শ্রীকণ্ঠপুর গ্রামের মরহুম করিম মোড়লের ছেলে।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা: মো: এনামুর রহমান, তার তৎকালীন সহকারী একান্ত সচিব শামীম আহমেদ, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব ও সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল গনিসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এজাহারে বলা হয়, নবী নূর মোড়ল সাভার পৌরসভার বনপুকুর এলাকায় বাদশা মল্লিকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সাভারে মাছের ব্যবসা করতেন। গত ২০ জুলাই বিকেলে মসজিদ থেকে নামাজ শেষে মাছ বিক্রির বকেয়া টাকার তাগাদায় বের হন নবী নূর মোড়ল। পৌরসভার ওয়াপদা রোডের তিন রাস্তার মোড়ে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান তিনি। এ সময় একটি বুলেট এসে কোমর বরাবর বিদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি ক্লিনিক ও পরবর্তীতে এনাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকাল পৌনে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিন রাত ৮টার দিকে তার লাশ গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয় এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কুমিল্লায় আইনজীবী হত্যাচেষ্টায় সাবেক অর্থমন্ত্রীসহ ৮৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) সংবাদদাতা : কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, নাঙ্গলকোট থানা সাবেক ওসি নজরুল ইসলাম, নাঙ্গলকোটের পেরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ, আ’লীগ নেতা শাহজাহান বাবলু, উপজেলা যুবলীগ নেতা ও ঠিকাদার মহিন উদ্দিন মিয়াজী, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম রুবেল, পেরিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, পেরিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবু ইসহাক, শ্রীফলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক আব্দুল হান্নানসহ ৮৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। গতকাল বৃহস্পতিবার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সলিসিটর অ্যাডভোকেট একরামুল হক মজুমদার। তিনি নাঙ্গলকোট উপজেলার পেরিয়া ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের খিদর আলী মজুমদারের ছেলে। মামলাটি আমলে নিয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেন কুমিল্লা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যাট ৫ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন শাহপরান, ইমরান, ফরহাদ, নোমান, সাইফুল, তুহিনসহ নামীয় ৩৫, অজ্ঞাত আরো ৫০ জন।
বাদি অ্যাডভোকেট একরামুল হক মজুমদার বলেন, ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে নাঙ্গলকোটের শ্রীফলিয়া বাজার এলাকায় নির্বাচনী সভা আয়োজন করে বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী। ওই সময় অভিযুক্তরা রামদা, ছেনি, পিস্তল ও লাঠিসোটা নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে হামলা করে মামলার বাদি আইনজীবী ও এলাকার নেতাকর্মীদের ওপর। এ সময় তার গাড়ি ভাঙচুর ও তাকে পিটিয়ে আহত করে এবং নেতাকর্মীদের মারধর করে। তাদের মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় তারা। এ ঘটনায় নাঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ করলে ওসি নজরুল ইসলাম মামলা নেয়নি।
রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, হত্যাকাণ্ডের ৯ বছর পর রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী মোসা. মাছুফা বাদি হয়ে পুঠিয়া থানায় মামলাটি করেন। এ ছাড়া মামলায় আরো ২৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদি মাছুফার বাড়ি জেলার চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে। তিনি সম্পর্কে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের চাচি।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে ২০১৫ সালের ১ মে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে ২০ দলীয় জোটের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামলা ও গুলিবর্ষণে বিএনপির সমর্থক মজির উদ্দিন নিহত হন। পরে এ ঘটনায় পুঠিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেয়।
নিহত মজির উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা জানান, ওই সময় তাদের মামলা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়া হয়েছিল। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় তারা মামলাটি দায়ের করলেন।


আরো সংবাদ



premium cement
৬ অঞ্চলে ঝড়ের আশঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্কতা অভ্যুত্থানে নিহতদের জন্য মসজিদে নববীতে সাঈদীর ছেলের দোয়া ভারত যাওয়ার পথে মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্তসহ আটক ৪ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা ইউনূসকে পদ্মায় চুবানো খালেদাকে ফেলার হুমকি, হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্গঠন মহানবী সা. মানব জাতির অনুকরণীয় আদর্শ : তারেক রহমান ঐশ্বরিয়ার আঙুলে নেই বিয়ের আংটি! অভিষেকের সঙ্গে বিচ্ছেদের জল্পনা তুঙ্গে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ চালু করছেন মোদি! ইয়েমেন থেকে ইসরাইলে সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সিনওয়ার গাজা ছাড়বেন না, যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সক্ষমতা হামাসের আছে

সকল