১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১, ১১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

বাজারে ডিম ও মুরগির দাম কমে আসবে : অর্থ উপদেষ্টা

-


বাজারে ডিম ও মুরগির দাম কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে ডিম ও মুরগির উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে, তবে উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পোলট্রি খাতের ব্যবসায়ীরা। এছাড়া উৎপাদক ও ভোক্তা পর্যায়ে এসব পণ্যের দাম কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কে পোলট্রি খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদলের সাথে মতবিনিময় শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা জানান। তিনি বলেছেন, বেশি সমস্যা হলে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেয়া যেতে পারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার পাওয়ারও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের আমরা যদি উজ্জীবিত না করতে পারি, তাহলে আমাদের সত্যিকারের উন্নয়ন হবে না। সেজন্য আমার প্রায় সব খাতের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলছি। এর মধ্যে আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য, বিশেষ করে পোলট্রি খাতের ডিম, মুরগি ও এর বাচ্চার দাম কিভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, দেশের ছোট বড় উৎপাদক থেকে শুরু করে বিপণনকারী ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করেছি। তারা জানিয়েছেন, পোলট্রির উৎপাদন পর্যায়ে কিছুটা সমস্যা আছে। তারপর বড় উৎপাদনকারীরা বলেছেন তারা উৎপাদন এখন বাড়াবেন।
সিন্ডিকেট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের স্বভাব হয়ে গেছে, তারা একটু বাড়তি মুনাফার চেষ্টা করে সবসময়। কথায় আছে, তারা ইল মাছের মতো, ধরা কঠিন। পিছলে যাচ্ছে। তবে এখন থেকে এগুলো ধরা সম্ভব হবে।

ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বেশি সমস্যা হলে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে সেটি কৃষি বিপণন অধিদফতর করবে। ট্যারিফ কমিশন আছে, তাদের সহযোগিতা নিতে পারে। আমরা ব্যবসায়ীদের বলেছি, এখন তেলের দাম কমেছে, আপনাদের পরিবহন খরচ কমে যাবে। জিনিসপত্রের দাম নামাতে হবে। বাংলাদেশে একবার দাম উঠলে আর নামে না, সেটা হবে না।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পণ্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এ উপদেষ্টা বলেন, এখন যে পণ্যমূল্য, তা খুব যে খারাপ সেটা বলা যাবে না। আমরা মোটামুটি সন্তোষজনক অবস্থায় নিয়ে এসেছি। এটাকে আরো সুখকর করা যায় কি না সে চেষ্টা করা হচ্ছে।
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন বাংলাদেশকে বাড়তি তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক আইএমএফ। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের দেশের বাজেট সহায়তার জন্য আইএমএফকে আরো তিন বিলিয়ন ডলার ঋণের ইঙ্গিত দিয়েছি এবং তারা এ বিষয়ে ইতিবাচক। আমি অক্টোবরে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আইএমএফের বোর্ড মিটিংয়ে সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে বিষয়টি আলোচনা করবো।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আইএমএফ জানতে চেয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের ঋণের শর্তাবলি সংস্কারের পরিকল্পনা করেছে কিনা। আমি তাদের আশ্বস্ত করেছি যে সে ঋণের বাস্তবায়ন ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং আমরা কখনো ব্যর্থ হবো না।

এর আগে, আইএমএফের একটি পর্যবেক মিশন সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফর করবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, আইএমএফের সাথে বাংলাদেশের বর্তমানে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এর মধ্যে তিন কিস্তিতে সংস্থাটির কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই ঋণের আকার আরো ৩০০ কোটি ডলার বাড়িয়ে মোট ঋণ ৭৭০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চায়।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, প্রকল্পটি চলমান থাকবে। ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরো দুই বছর বাড়ানোর জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত খুবই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছেন।
তিনি আরো বলেন, রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত রূপপুর প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। আমি তাকে আশ্বস্ত করেছি যে, আমরা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করব।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আইএমএফের বাংলাদেশের জন্য নিযুক্ত প্রধান পাপাজিওর্জিউ এবং সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে অর্থ উপদেষ্টার সাথে একটি অনলাইন সভা করেন। সেখানে ক্রিস পাপাজিওর্জিউ নতুন ঋণ প্রদানের বিষয়টি পর্যবেণ করে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement