১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
সিএসজেএফের প্রশিক্ষণে অধ্যাপক আবু আহমেদ

মিউচুয়াল ফান্ড ও পুঁজিবাজার ক্ষতির বড় দায় বিএসইসির

-


বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারেনি বিএসইসি। ফান্ড ম্যানেজার টাকাপয়সা নিয়ে ভেগে যায় কিভাবে? এ জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাই বড় দায়ী। মিউচুয়াল ফান্ড ও পুঁজিবাজারকে ক্ষতি করার পেছনে বড় দায় বিএসইসির বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে দুষ্ট লোকদের সুবিধা দেয়ার জন্য প্লেসমেন্ট সিস্টেম শুরু করেছে বিএসইসি। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের জন্য কঠিন কাজ হচ্ছে এই অর্থনীতিকে ম্যানেজ করা। ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ আর কখনো দাঁড়াবে না। সরকারি শেয়ারগুলো বিক্রি করলে বাজেট ঘাটতি কিছুটা পূরণ হবে।

রাজধানীর পল্টনে অবস্থিত পুঁজিবাজারভিত্তিক সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত গতকাল এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি গোলাম সামদানীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: সাইফুদ্দিন, সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান, সিএমজেএফ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন রেজওয়ান, সাবেক অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ, আব্দুল হাকিম প্রমুখ।
ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংকে লুট হয়েছে মন্তব্য করে আবু আহমেদ বলেন, যারা লুট করেছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। না হলে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরবে না। বড় বড় কোম্পানির মালিকরা এ লুটপাট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিভাবে পারল ব্যাংক দখল করার সুযোগ দিতে? ব্যাংকে বড় ঋণ কেলেঙ্কারি কিভাবে হয়। এটা দেখার দায়িত্ব তো তাদের। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কারণেই দেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির ৯০ শতাংশই অল্প কয়েকজনের দখলে চলে যায়। এভাবে অর্থনীতি চালালে তো সাধারণ মানুষের দুর্দশা হবেই। সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে থাকবেই।

মিউচুয়াল ফান্ড ও পুঁজিবাজারকে ক্ষতি করার পেছনে বড় দায় রয়েছে বিএসইসি’র মন্তব্য করে আবু আহমেদ আরো বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খারাপ হওয়ার কথা আমরা বারবার আলোচনা করি। এ ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দায়ী। তিনি বলেন, বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করব সে কোম্পানি সম্পর্কে যদি নিজে না জানি তাহলে কেন বিনিয়োগ করলাম। নলেজের কোনো বিকল্প নেই। নলেজ হচ্ছে একধরনের সম্পদ।
পুঁজিবাজারের আরেকটি বড় দুর্নীতির উৎস হচ্ছে তালিকাভুক্তির আগে প্লেসমেন্ট শেয়ারবাণিজ্য, মন্তব্য করে আবু আহমেদ বলেন, প্লেসমেন্ট শেয়ার আরেকটি বড় দুর্নীতির জায়গা। এটা নিয়েও রেগুলেটর কাজ করতে পারেনি। ভালো আইপিও আসছে না, আনার চেষ্টাও করা হয়নি। ইনটেনসিভ না থাকলে ভালো কোম্পানি এখানে আসবে কেন? এখানে ভালো কোম্পানি আনতে হলে কোম্পানিকে ভালো কিছু সুবিধা দিতে হবে। এই সুযোগটাও এতদিনে ব্যবস্থা করতে পারেনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। তিনি বলেন, এ কারণে ৩৩ লাখ বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব এখন ১৩ লাখে নেমে এসেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বে অর্থনীতির উন্নয়ন সবার জন্য হবে, আশাবাদ ব্যক্ত করে আবু আহমেদ বলেন, এই সরকার সবার সরকার। এতদিন অনেক কথাই বলতে পারিনি। এখন তো কথা বলা যাচ্ছে, আমাদের উচিত সরকারকে দেশ ও অর্থনীতির জন্য সহযোগিতা করা। দেশের পুঁজিবাজার সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আনতে বিশেষ ছাড় বা প্রণোদনা দিয়ে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্তির পরামর্শ দেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, বিদেশী ও দেশের বড় কোম্পানিকে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পারচু করতে হবে। সিস্টেমকে ইনসেনটিভ দেয়া লাগবে, নইলে তারা আসবে না। বহুজাতিকের পাশাপাশি দেশেও অনেক বড় বড় কোম্পানি আছে। তাদেরকে বাজারে আনতে হলে ‘সিস্টেম ইনসেনটিভ’ দিতে হবে, নইলে তারা আসবে না মন্তব্য করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, নতুন সরকার আসছে, আমি অনুরোধ করব বাজেটের সময়ে তাদের জন্য কিছু রাখা। এনবিআরের কাজ হলো সরকারি কাজটি করা, দেশের অর্থনীতির জন্য কাজ করা। নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য নয়। তিনি বলেন, ঋণনির্ভর অর্থনীতি কখনোই শক্তিশালী হতে পারে না। শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া ও সর্বশেষ পাকিস্তান তার উদাহরণ। আমাদের অর্থনীতির শক্তি তো আমরা। ভেতর থেকেই আমাদের শক্ত হতে হবে। বিদেশী কোনো ঋণে নয়, আমাদের অর্থনীতি আমাদেরকে ঠিক করতে হবে। তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ, সুদহার ও বিনিময় হার নির্ধারণ সবকিছুই করতে হয় অন্যান্য দেশের অর্থনীতির দিকে খেয়াল রেখে। এ জন্য বিশ্বের সাথে অর্থনীতি চলছে কি না, তা দেখার অনুরোধ জানান তিনি।
ডিবিএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: সাইফুদ্দিন বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো যা লেখা হচ্ছে তা বস্তুনিষ্ঠ কি না। বেশি লেখার দরকার নেই, যতটুকু লেখা হচ্ছে তা যেন বস্তুনিষ্ঠ হয়, এটাই মুখ্য। মানুষকে সঠিক তথ্য জানানোর দায়িত্বটি তো আপনাদেরই।


আরো সংবাদ



premium cement
দুষ্কৃতিকারীদের আগুনে গাজীপুরে বিগবস কারখানায় ক্ষতি ৫৫ কোটি টাকা প্রশাসনে স্থবিরতা, অসহযোগিতার অভিযোগ তথ্য উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় সরকার কীভাবে পাচার করা অর্র্থ ফিরিয়ে আনতে হবে ভারতের কর্তৃত্ববাদ ও প্রতিবেশী সম্পর্ক সাঈদ হত্যা মামলার এএসআই আমির ও কনস্টেবল সুজন কারাগারে গুম হওয়া ৬৪ ব্যক্তির তালিকা কমিশনে পাঠালেন প্রধান বিচারপতি গোবিন্দগঞ্জে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার আ’লীগের বিরুদ্ধে মানুষের ঘৃণা ১০০ বছরেও দূর হবে না : সেলিম উদ্দিন কাজের ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করার চেষ্টা করব : জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন মিজানুর হত্যা মামলায় ইনু, মেনন ও পলককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে

সকল