০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে না ব্রিটেন

অস্ত্র বিক্রিতে বিধিনিষেধ আসতে পারে
-


ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে না ব্রিটেন। নেতানিয়াহুসহ জ্যেষ্ঠ ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির এখতিয়ার নিয়ে গত মে মাসে প্রশ্ন তুলেছিল ব্রিটেন। গতকাল শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার খবর জানিয়েছে। গতকাল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, আমি নিশ্চিত করতে পারি, সরকার আইসিসির এ পরোয়ানা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলবে না। খবর : আলজাজিরা ও মিডল ইস্ট আই।
অন্যদিকে মিডল ইস্ট আইয়ের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমনকি ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রির ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে ব্রিটিশ সরকার। এসব বিষয়ে ভালোভাবে অবগত লেবার পার্টির একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে বলেছে, ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন সরকার সামনের দিনগুলোতে ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রির ওপর সম্ভবত কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে। তবে অস্ত্র বিক্রি পুরোপুরি স্থগিত করা হবে না। নতুন সরকারে দায়িত্ব পেয়ে গত সপ্তাহে কাজ শুরু করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি। দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম দিনই ল্যামি বলেন, ইসরাইল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন কিভাবে প্রতিপালন করছে, সে বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
তার এ বক্তব্যের পর ইসরাইলে ব্রিটেনের অস্ত্র বিক্রির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সম্ভাবনার বিষয়টি প্রকাশ পেল। মিডল ইস্ট আইকে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, হামলার কাজে ব্যবহার উপযোগী অস্ত্রের ওপর ওই বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে। গত সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইনপ্রণেতাদের বলেন, ইসরাইলে ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহী, লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের হামাসের আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ‘আমাদের দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র বিক্রির ওপর সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করাটা সঠিক হবে না।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন, ইসরাইলের আন্তর্জাতিক মানবিক আইন প্রতিপালন করা বিষয়ে তিনি যে পর্যালোচনার অনুরোধ জানিয়েছেন, সেটিরই অংশ হিসেবে গাজায় দেশটি ব্যবহার করতে পারে এমন সব অস্ত্র বিক্রির ওপর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছেন তিনি। গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ব্রিটেন ইসরাইলে অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণ বিক্রি করা নিয়ে শতাধিক রফতানির অনুমতি (এক্সপোর্ট লাইসেন্স) অনুমোদন করেছে।
ব্রিটেনের ব্যবসা ও বাণিজ্যবিষয়ক দফতর গত জানুয়ারিতে হাইকোর্টে একটি হলফনামা দাখিল করে। তাতে দেখা যায়, অস্ত্র রফতানি তদারককারী সরকারি কর্তৃপক্ষ ইসরাইলে অস্ত্র ও সরঞ্জাম রফতানির ২৮টি অনুমতি এবং ২৮টি অনুমতির স্থগিত আবেদন চিহ্নিত করেছে। এসব অস্ত্র ও উপকরণ গাজায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর ব্যবহারের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। ইসরাইলে ব্রিটেনের অস্ত্র বিক্রির ওপর কোনো নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে এর আওতায় ওই সব অনুমতি ও অনুমতির আবেদন পড়তে পারে।
এ বিষয়ে ‘কাউন্সিল ফর আরব-ব্রিটিশ আন্ডারস্ট্যান্ডিং’-এর পরিচালক ক্রিস ডোয়েল মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রির বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকারের সম্ভাব্য ওই পদক্ষেপ নেয়া হলে তা খুবই ভালোভাবে স্বাগত জানানো হবে।’ ইতঃপূর্বে ইসরাইলে মার্কিন অস্ত্রের চালান স্থগিত রাখার হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন। গত মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজার রাফায় ইসরাইল পুরোদমে স্থল অভিযান চালালে অস্ত্রের ওই চালান আটকে দেয়ার হুমকি দেন। যদিও পরে এ হুমকির বাস্তবায়ন করেননি তিনি।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব জাস্টিস ফর প্যালেস্টিনিয়ানসের আইনি কর্মকর্তা জাকি সরাফ বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকার ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রি সীমিত করার এবং ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানায় তোলা আপত্তি তুলে নেয়ার যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, তা অবিলম্বে কার্যকর করা উচিত।’ ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেড’-এর অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার কেটি ফ্যালন মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘ইসরাইলে ব্রিটেনের অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করার যেকোনো সিদ্ধান্তে এফ-৩৫ ও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বিক্রি না করার বিষয় অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কেননা এসব যুদ্ধবিমান থেকে এখন গাজায় বোমা ফেলা হচ্ছে।’
ইতোমধ্যে লেবার পার্টির জ্ঞাত একাধিক সূত্রের তথ্য, গাজায় ‘গণহত্যা’ চালানোয় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিরুদ্ধে আইসিসি যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন, তাতে তোলা আপত্তিও আসছে দিনগুলোয় প্রত্যাহার করে নিতে পারে ব্রিটেন।
ব্রিটেনের আগের কনজারভেটিভ (টোরি) সরকার গত ১০ জুন আইসিসির কাছে একটি আবেদন দাখিল করেছে। তাতে এই যুক্তি দেয়া হয়, অসলো চুক্তি মোতাবেক ইসরাইলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেই। তাই ফিলিস্তিন এ ক্ষমতা খাটানোর এখতিয়ার আইসিসিকে দিতে পারে না। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য ওই আবেদনে চাওয়া হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
এ সরকার জনপ্রত্যাশার কী করবে? আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন : তাজুল ইসলাম চিফ প্রসিকিউটর আবুধাবির কারাগার থেকে দেশে ফিরেছেন ১৪ বীর কোনাবাড়ীতে কলেজছাত্রকে গুলি করে হত্যা : কনস্টেবল গ্রেফতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্তগুলো যৌক্তিক : ফখরুল ‘একটি চক্র জামায়াত আমিরের বক্তব্য নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে’ অস্ত্র জমা দেয়নি শামীম ওসমান ও গাজী পরিবার এবি পার্টির উপদেষ্টার পদ ছাড়লেন ব্যারিস্টার রাজ্জাক কর্মকর্তাদের তালিকা চাওয়া নিয়ে বিতর্কে মন্ত্রণালয়ের দুঃখ প্রকাশ আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৫ রূপগঞ্জে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা

সকল