০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
বিএফইউজে-ডিইউজের সমাবেশ আজ

ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান গ্রেফতার ৫ দিনের রিমান্ডে

-


ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্য মিরর এশিয়ার বিশেষ প্রতিনিধি সাঈদ খানকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গাজী ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, সাঈদ খানকে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে তার মগবাজারের বাসা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তুলে নিয়ে গেছে। সারা রাত ধরে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয় এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে অবশেষে কাফরুল থানায় মেট্রোরেল পোড়ানোর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। সাংবাদিক সাঈদ খানের মুক্তি দাবি করে নেতারা বলেন, এ গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সরকার মুক্ত সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করতে আরো একটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাঈদ খান একজন মেধাবী সাংবাদিক। তিনি সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের উপর সরকারের বলপ্রয়োগ ও নির্বিচারে গণহত্যার খবর দায়িত্বশীলতার সাথে পরিবেশন করে আসছিলেন দ্য মিরর এশিয়ায়। একই সাথে ট্রেড ইউনিয়ন নেতা হিসেবে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত সোচ্চার ছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সরকার পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে গভীর রাতে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং রাতভর তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। যা বরদাশত করার মতো নয়।
নেতারা বলেন, বর্তমানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চেহারা কী বীভৎস রূপ ধারণ করেছে সাংবাদিক নির্যাতন ও গণহত্যার মধ্য দিয়ে তা ফুটে উঠেছে। সরকারি বাহিনীর হাতে মাত্র একসপ্তাহে চার সাংবাদিক হত্যা এবং দুই শতাধিক সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনার বিচার না করে প্রতিবাদী সাংবাদিক নেতা সাঈদ খানকে গ্রেফতার সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের একটি কু-নজির। কথায় কথায় বিরুদ্ধ মতাবলম্বীদের খুন, গুম, বিনা বিচারে হত্যা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে হত্যা, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা, বলপ্রয়োগ করে প্রতিবাদী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়ার মধ্য দিয়ে সরকার দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সরকারের প্রতিহিংসা থেকে সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছে না। এ সরকারের আমলে ৬৬ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শত শত সাংবাদিক। অনেক সাংবাদিককে প্রাণ বাঁচাতে দেশান্তরি হতে হয়েছে। সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে এখন গণমাধ্যমে ততটুকু স্বাধীনতা আছে যতটা সরকারের পক্ষে যায়।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সাংবাদিক সাঈদ খানকে গ্রেফতার এবং বানোয়াট মামলায় রিমান্ডে নেয়ার মাধ্যমে সরকারের সমালোচক, প্রতিবাদী কলামিস্ট, বিবেকবান লেখক-বুদ্ধিজীবীদের বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার এক অশুভ বার্তা জানান দিলো। সরকার কেবল বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদেরই নয়, তারা এখন টার্গেট করেছে ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরকে। অন্তহীন ক্ষমতালিপ্সার জন্য এরা প্রতিবাদী সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাই প্রতিবাদী সাংবাদিক, নির্ভীক লেখক ও অকুতোভয় গণতন্ত্রকামী বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের খেলায় মাতোয়ারা হয়ে গেছে। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুন হয়েছেন একযুগ আগে। এখনো বিচার হয়নি। একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আফতাব আহমদ হত্যার প্রকৃত রহস্য এখনো উদঘাটিত হয়নি। সরকারি দলের একজন শীর্ষ নেতা রচিত বইয়ে ‘বাসন্তির জাল পেঁচিয়ে ইজ্জত রক্ষার’ ঐতিহাসিক ছবিটি নিয়ে আফতাব আহমদের বিরুদ্ধে বিষোদগারের অল্প কিছু দিনের মধ্যে খুন হন প্রবীণ এ সাংবাদিক। আমরা সরকারকে এই ভয়ঙ্কর খেলা বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
কর্মসূচি : ডিইউজে সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানকে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়ার প্রতিবাদে বিএফইউজে ও ডিইউজের উদ্যোগে আজ শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ হবে। কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের অংশ নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement