১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঋণখেলাপিদের আবারো ছাড় নীতিমালা শিথিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

-

- খেলাপি ঋণের ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে
- পরিশোধের সময় হবে তিন বছর
- যারা ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে আগ্রহী তারাও এ সুবিধা পাবেন

ঋণখেলাপিদের আবারো ছাড় দেয়া হয়েছে। এজন্য বিদ্যমান নীতিমালা শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নীতিমালার আলোকে বিশেষ সুবিধা নিতে খেলাপি ঋণের ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে আবেদন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের সময় দেয়া হবে তিন বছর। বিদ্যমান নীতিমালার আলোকে সুদ বা মুনাফাতেও ছাড় পাবেন ঋণখেলাপিরা। তবে এ সুবিধা ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপিরা পাবেন না। কেবল বিশেষ পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হবেন তারাই এ সুবিধা পাবেন। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, এ নীতিমালার কারণে ঋণ আদায় অনেক বেড়ে যাবে। সঙ্গতকারণেই কমে যাবে খেলাপি ঋণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়, ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দা বা লোকসানের কারণে অর্থাৎ বিশেষ পরিস্থিতির জন্য ব্যাংকের যেসব গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না বা খেলাপি হয়েছেন কেবল তারাই নতুন নীতিমালার আওতায় ঋণ নবায়নের সুযোগ পাবেন। সে জন্য ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের এ প্রস্তাব মাসের পর মাস আটকে রাখা যাবে না। আবেদনের দুই মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করতে হবে। এই নীতিমালার আওতায় ঋণ নবায়ন করা হলে তা ঋণ পুনগর্ঠন বা পুনঃতফসিল হিসেবে বিবেচিত হবে না।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, গ্রাহককে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী সুদ মওকুফ সুবিধাও দেয়া যাবে। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। এর বেশি ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। ঋণের পুরো অর্থ পরিশোধের জন্য দুই বছর সময় দেয়া যাবে। গ্রাহকের প্রয়োজনে এর সীমা আরো এক বছর বাড়ানো যাবে। মোট তিন বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত জামানত ছাড় করা যাবে না। তবে ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কেও ভিত্তিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। পুরো ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহক খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবেন। নীতিমালায় বলা হয়, এর আওতায় কোনো ইচ্ছাকৃত খেলাপি সুবিধা পাবেন না। পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হবেন তারা পাবেন। এ ছাড়া যারা ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চান তারাও এই সুবিধা পাবেন।

প্রসঙ্গত, এর আগেও ঋণ খেলাপিদের ছাড় দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। মূলত খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে এ ছাড় দেয়া হলেও আদায় বাড়েনি। তবে খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব হয়েছে। এই নীতিমালার মাধ্যমেও খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে। তবে ঋণ আদায় বাড়বে না বলেই মনে করেন ব্যাংকাররা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবার প্রকৃত পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হচ্ছেন বা যারা তাদের ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চান তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য একটি নতুন নীতিমালা করেছে। এর আওতায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ঋণের দায় থেকে কিছু ছাড় দিয়ে বের হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে একটি নীতিমালা করতে হবে। তবে কোনো ক্রমেই এ নীতিমালার চেয়ে শিথিলযোগ্য শর্ত রাখা যাবে না। ওই নীতিমালা পর্ষদে অনুমোদন করতে হবে। এর ভিত্তিতে ব্যাংক এর বাস্তবায়ন করবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল