০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বানের পানিতে বন্দী মানুষের দুর্গতি

-

- প্রায় ৮০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
- নদী ভাঙনে আতঙ্কিত বানভাসীরা
- বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট
- অপ্রতুল ত্রাণ বিতরণ
- পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব

বিভিন্ন স্থানে টানা বর্ষণ ও উজানের প্রবল ঢলে সৃষ্ট বানের পানিতে বন্দী হয়ে পড়া মানুষের দুর্গতি বেড়ে চলেছে। কয়েকটি জায়গায় পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নদ-নদীর অববাহিকায় দেখা দিয়েছে ভাঙনের ভয়াল রূপ। জানা গেছে, জামালপুর, রংপুর ও সিরাজগঞ্জে ৭৪৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। টাঙ্গাইলে রাস্তাঘাট ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়ায় ২১ দিনের বন্যায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি নিরূপণ করেছে প্রশাসন। সিলেটের গোলাপগঞ্জে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্লাবিত জনপদে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা জানান, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি ৭.৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপদসীমার মাত্র ১৫ সেন্টিমিটার নিচে। এ অঞ্চলে পদ্মার পানির বিপদসীমা স্তর ৭.৯০ সেন্টিমিটার।

গত এক সপ্তাহ ধরে পদ্মার পানি একটানা বেড়েই চলেছে। একাধারে পানি বাড়তে থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ বাড়িঘর ও ফসলি জমি ভাঙন আতঙ্কে রাতদিন প্রহর গুনছে। ভাঙন রোধে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ব্যক্তি উদ্যোগে ভাঙন রোধে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। তাদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে নদীতে বিলীন হতে পারে দৌলতদিয়ার কয়েকটি ফেরিঘাট ও এর পার্শ¦বর্তী সরকারি বেসরকারি স্থাপনা ও কয়েক শ’ পরিবার ও তাদের ভিটেমাটিসহ ফসলি জমি। অথচ সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় স্থানীয়দের ঘরবাড়ি ও স্থাপনা সরিয়ে নেয়ারও সুযোগ নেই।
সরেজমিন শুক্রবার ও শনিবার দুপুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ৫, ৬, ৭ নং ফেরিঘাট এলাকার ছাত্তার মেম্বর পাড়ায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এখানে শ্রমিক নেতা তোফাজ্জেল হোসেন তপু সরদারের আর্থিক সহায়তায় স্থানীয়রা প্লাস্টিকের বস্তায় বালুমাটি ভরে নদীর পাড়ে ফেলে ভাঙন ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এ ছাড়া ৪ নং ফেরিঘাটে একটি মসজিদ, লঞ্চঘাট এলাকা, শাহাদত মেম্বর পাড়া, ঢল্লা পাড়া, ইদ্দিস মিয়ার পাড়া, বদন মৃধার পাড়ার সহস্রাধিক পরিবার ও হাজার হাজার একর আবাদি অনাবাদি জমি ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
এসময় ভুক্তভোগী ছাত্তার মেম্বর পাড়ার বাসিন্দা আ: বারেক, আক্কাস আলী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ, মোফাজ্জেল হোসেন তপু সরদার বলেন, বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন বছর আমাদের জমিজমা অধিগ্রহণ করে নোটিশ দিয়েছে। আমাদের বাড়িঘর গাছপালাসহ ক্ষতিপূরণ দিয়ে ভেঙে দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এখন আমরা ভাঙনের মুখোমুখি। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় ঘরবাড়ি সরাতেও পারছি না। হয়তো নদীতে সব চলে যাবে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র জানান, এখানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাট আধুনিকায়নে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাস হয়ে এলে ভুক্তভোগীদের টাকা পরিশোধ করে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যার পানি ৬ সেন্টিমিটার হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার সাত উপজেলায় বন্যায় অন্তত আড়াই লাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে । বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ২৬৯টির প্রাথমিক ও ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে ।
শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে রোববার (৭ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত যমুনার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় জেলার ২৫৯টি প্রাথমিক ও ৬০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে ।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, বন্যার কারণে ২৫৯ প্রাইমারি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মোজাম্মেল হাসান জানান, জেলার ইসলামপুরে ৩০টি, দেওয়ানগঞ্জে ২৯টি এবং বকশীগঞ্জে একটি এবং মাদারগঞ্জে তিনটিসহ ৬৩টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি ইসলামপুরের এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র গুঠাইল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বেলগাছা উচ্চবিদ্যালয় ও বিএম কলেজ পরীক্ষার কেন্দ্র পরির্দশনে গিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠান দু’টির মাঠে পানি থাকায় প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার চলতি বন্যায় বিগত ২১ দিনে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা। বন্যা আরো দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ ৭ জুলাই রোববার সংবাদ সম্মেলন করে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। বন্যা দীর্ঘায়িত হলে সমাজের বিত্তবান, বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনকে বানভাসি মানুষকে খাদ্যসহায়তা প্রদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। পানির তোড়ে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকার রাস্তা-ঘাট ভেঙে নদীর পানি তীব্রগতিতে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
গতকাল সকালে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার সব নদীর পানিই বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মণ্টুত্র-যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঝিনাই নদীর পানি জোকারচর পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি পোড়াবাড়ি পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার, ফটিকজানি নদীর পানি নলচাপা ব্রিজ পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার, বংশাই নদীর পানি কাউলজানী পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার, মির্জাপুর পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং মধুপুর পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

রংপুর অফিস জানায়, উত্তরাঞ্চলে তিস্তার পানি নিচে থাকলেও বিপদসীমার ওপরে এখনো ঘাঘট, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি। ফলে এসব নদ-নদী অববাহিকায় বানের পানিতে বন্দী হয়ে মহাদুর্গতিতে দিন কাটছে আড়াই লক্ষাধিক মানুষের। এরমধ্যে কুড়িগ্রামেই পানিবন্দী দেড় লাখ, গাইবান্ধায় ৭০ হাজার, রংপুরে ২০ এবং লালমনিরহাটে ৩০ হাজারেরও বেশি পরিবার। আশ্রয়, খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটে দিশেহারা এসব পরিবার। আছে পোকামাকড়ের উপদ্রুপ। সরকারিভাবে যে ত্রাণসহায়তা পৌঁছাচ্ছে তা দিয়ে দুই ভাগ লোকও কভার হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বাঁধ, সড়কসহ নদীপাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন।
উত্তরাঞ্চল পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও লালমনিরহাটের ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি গেটই খুলে রাখা হয়েছে। এ নিয়ে তিস্তায় গেল ২৭ দিনে পাঁচ দফায় তিস্তায় পানি বাড়ল বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

এ দিকে তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারী, সদর, নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে পানি উঠেছে।
তিস্তার পানি কমার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন। রংপুরের গঙ্গাচড়ার মর্নেয়া, কোলকোন্দ, লক্ষ্মীটারী, মর্নেয়া, কাউনিয়ার বালাপাড়ার গদাই, পীরগাছার ছাওলা, তাম্বুলপুর লালমনিরহাটের হাতিবান্দার সিন্দুরনা, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালিগঞ্জের কাকিনা, আদিতমারির মহিষাখোচ, সদরের খুনিয়াগাছ, কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বিদ্যানন্দ, গতিআসাম, বুড়িরহাট, উলিপুরের ঠুটাপাইকর, থেতরাই, বজরা, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তারাপুর, বেলকা, হরিপুর ইউনিয়নের অন্তত ১২৫ পয়েন্টে ভয়াবহ ভাঙন ধরেছে।
গোলাপগঞ্জ (সিলেট) সংবাদদাতা জানান, সিলেটের গোলাপগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত দুই দিন ধরে নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার উন্নতি হচ্ছে। উপজেলায় দফায় দফায় পর্যাক্রমে তৃতীয়বারের মতো উজান থেকে নেমে আসা পাহাডি ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। টানা দুই সপ্তাহ বন্যা থাকায় চরম ক্ষতিগ্রস্তের শিকার হন এই উপজেলার মানুষজন, কৃষক খেটে খাওয়া মানুষজন। ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে পড়ে পৃথক পৃথক দিনে প্রায় তিনজন শিশু মারা গেছেন। দুই দিন ধরে বন্যার পানি কমায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজন তাদের বাড়িঘরে ফিরছেন। পানি কমার সাথে সাথে বন্যাকবলিত এলাকায় ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগবালাই দেখা দিয়েছে বলে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন এ প্রতিবেদককে জানান। এ দিকে উপজেলার হাজার হাজার পানিবন্দী মানুষজন বর্তমানে নিরাপদে থাকলেও বন্যায় রাস্তা-ঘাট, হাঠ-বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তাগুলো বন্যার পানিতে ভেঙে যাওয়ায় চলাচল করতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষজন।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জের ৬২ প্রাইমারি ও ১৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শ্রেণী পাঠদান ও ষাণ¥াসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণী পাঠদান ও ষাণ¥াসিক মূল্যায়ন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে স্থিতিশীল ও কাজিপুর পয়েন্টে কমতে শুরু করেছে।
গতকাল দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাইমারি শিক্ষা কর্মকর্তা মো: হারুন-অর-রশিদ জানান, জেলার পাঁচ উপজেলার ৬২টি প্রাইমারি স্কুলে পানি ঢুকেছে। ফলে এসব স্কুলে শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement