০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫
`

সন্ত্রাস মোকাবেলায় বিশ্বের সাথে কাজ করতে সরকার বদ্ধপরিকর

হোলি আর্টিজান স্মরণে পররাষ্ট্র সচিব
-


পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, সব বাংলাদেশী, বিশেষ করে বিদেশী বন্ধুদের জন্য শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের জনগণ, ইটালি, জাপান, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার আট বছর পূর্তি স্মরণে গতকাল ঢাকায় ইটালির রাষ্ট্রদূতের বাসায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এ কথা বলেন। এর আগে ইটালি, জাপান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মিশন প্রধানদের সাথে নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব হোলি আর্টিজান বেকারির দীপ্ত শপথ ভাস্কর্যে নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র‌্যাব) মহাপরিচালক হারুন আর রশিদ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান পৃথকভাবে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে একদল চরমপন্থীর হামলায় মোট ২২ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ইটালির ৯ জন, জাপানের সাতজন, বাংলাদেশের দুজন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন নাগরিক ছিলেন। এ ছাড়া দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও এ ঘটনায় প্রাণ হারান। হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত চারজন সন্ত্রাসীর সবাই সেনাবাহিনীর অভিযানে মারা যায়।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক অপারেশন, সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের ওপর সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং আটক বা গ্রেফতারের মতো নানাবিধ পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে। এ ছাড়া চরমপন্থার প্রক্রিয়াকে ঠেকাতে সাধারণ মানুষের মতামত গঠনের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ২০ জন সাধারণ মানুষ ও দুজন পুলিশ কর্মকর্তার চরম আত্মত্যাগের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাই। বাংলাদেশ সরকার সব সময়ই ভিকটিম ও তাদের পরিবারের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে। নিহতরা আমাদের হৃদয়ে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ বজায় রাখা এবং সহিংস চরমপন্থা দমনে বাংলাদেশ সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
হোলি আর্টিজানের ঘটনায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক হারুন আর রশিদ বলেন, বাংলাদেশে আর কখনো জঙ্গিবাদের উত্থান হবে না। জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলায় র‌্যাব আগের চেয়ে অনেক আধুনিক পন্থা অবলম্বন করছে। তিনি বলেন, সূচনালগ্ন থেকেই র‌্যাব উগ্র মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় কাজ করছে। এগুলোর ওপর র‌্যাবের নজরদারি সার্বক্ষণিকভাবে রয়েছে। তাই জঙ্গিবাদ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
জঙ্গিবাদকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের চাইতে বাংলাদেশ ভাল অবস্থানে রয়েছে। অনলাইনে জাঙ্গিবাদীদের তৎপরতা মোকাবেলার সক্ষমতা পুলিশের রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ অন্যদের দক্ষতা ও দূরদর্শিতা বাংলাদেশকে অনেক নিরাপদে রেখেছে। বিশ্বজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী হোলি আর্টিজানের ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষে বিচার শুরু হয়। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর মামলার আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। টানা এক বছর বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ মজিবুর রহমানের আদালত সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement