চৌগাছায় মা-বাবা হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যৃদণ্ড
- এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)
- ০২ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৫
যশোরের চৌগাছায় মা-বাবাকে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সপ্তম আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এ রায় প্রদান করেন। রায়ে মামলার একমাত্র আসামি হাবিবুর রহমান মিলন ওরফে মিলন উদ্দীনকে (৩২) ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। এ সময় আদালতে পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ কামরুল ইসলাম ও আসামি হাবিবুর মিলন কাটগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। আদালতে বাদি হুমায়ন কবির ও তার পরিবারের সদস্য এবং উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার সময় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান মিলন (৩২) পিতার কাছ থেকে নেশার টাকা না পেয়ে পিতা মহির উদ্দীন (৬২) কে ধারালো গাছি দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় তার মা আনোয়ারা বেগম (৫৫) মিলনকে বাধা দিলে তাকেও কুপিয়ে জখম করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তারা দুজনই ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন। সে সময় এলাকাবাসী মিলনকে আটক করে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনায় মিলনের ছোট ভাই হুমায়ন কবির বাদি হয়ে চৌগাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৯, তারিখ ২৫-১২-২০১৯। পুলিশ ১৬১ ধারায় আটক মিলনের জবানবন্দী গ্রহণ করলে মিলন তার মা-বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। ২৬ ডিসেম্বর পুলিশ মিলনকে আদালতে পাঠালে সে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে মা-বাবাকে কুপিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় আদালত তাকে জেলহাজতে আটক রাখার নির্দেশ দেয়।
পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এসএম এনামুল হক তদন্তপূর্বক সাক্ষীদের জবানবন্দী রেকর্ড করে ২০২০ সালের ৩ জুন তারিখে মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। পরবর্তীতে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। এ পর্যায়ে মামলাটি বিচারের জন্য অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সপ্তম আদালতে পাঠানো হয়। সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০২৪ সালের ৩০ জুন রোববার বিচারক জুয়েল অধিকারী মামলার রায় প্রদান করেন। রায়ে আদালত মামলার একমাত্র আসামি হাবিবুর রহমান মিলন ওরফে মিলন উদ্দীনকে (৩২) ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন।
রায় পাওয়ার পর মামলার বাদি হুমায়ন কবির সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, জেল থেকে বিভিন্ন লোক ফিরে এসে আমাকে বলেছে মিলন যদি বের হতে পারে তাহলে আমাকেও মা-বাবার মতো খুন করে ফেলবে। সে কারণে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। আজকে রায় পেয়ে চিন্তামুক্ত হয়েছি। আদালতসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত থাকা মিলনের চাচা আজিজুর রহমান বলেন, ভাই ভাবি হত্যার বিচার পেয়ে খুশি হয়েছি। তবে তাদের হারানোর বেদনাটা মনের মধ্যে থেকেই গেছে। বাদি হুমায়নের দাদা আব্দুল লতিফ পণ্ডিত বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ আদালতের বারান্দায় ঘুরছি। আজ রায় শুনে খুশি হয়েছি।
চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘এই যে একটি ন্যায়বিচার হলো এ কারণে সব অপরাধীর জানা উচিত অপারাধ করে কেউ পার পেয়ে যেতে পারে না। তিনি মামলা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। মামলা পরিচালনাকারী পাবলিক প্রসিকিউটার অ্যাডভোকেট সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, আসামির শাস্তির জন্য নিরলস পরিশ্রম করেছি। আজ মামলার রায় পেয়ে ভালো লেগেছে। একজন অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনতে পেরে খুশি হয়েছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা