১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
জাতীয় সম্মেলনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী

শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় তথ্যের সঠিকতা থাকা দরকার

-

শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য তথ্যের সঠিকতা থাকা দরকার। সত্য নিরপেক্ষ হয় না। কিন্তু সত্যকে স্বীকার করতে হয়, সত্যকে মেনে নিতে হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, অতীতের বিভিন্ন ঘটনার কারণে আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সঙ্ঘাত বিরাজ করছে। শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য একটি শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার বিকল্প নেই।
রাজধানীর ফার্মগেটস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিউশন কমপেক্স এ ‘পিস অ্যাম্বাসেডর জাতীয় সম্মেলন-২০২৪’ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ অভিমত ব্যক্ত করেন। দি হাঙ্গার প্রজেক্টের উদ্যোগে, ইউএসএআইডির সহযোগিতায়, ডেমোক্র্যাসি ইন্টারন্যাশনাল এবং আইএফইএসের অংশীদারিত্বে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পিস অ্যাম্বাসেডর সম্মেলনে অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আরাফাত, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টি, মেজর (অব:) রানা মো: সোহেল, সিপিডির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার। উপস্থিত প্রায় পাঁচ শত পিস অ্যাম্বাসেডরদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন, সাইফুল ইসলাম বাদশা (রাজশাহী), অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন (ময়মনসিংহ), মকবুল হোসেন (পবা, রাজশাহী), হোসায়নুল মাতবর (কক্সবাজার), শাহিদা আখতার (বাগেরহাট), নাসিমা কামাল (ঝালকাঠি), মো: সিরাজুল ইসলাম (মেহেরপুর) প্রমুখ।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এদেশ স্বাধীন করে গেছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব হলো এদেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলা। কারণ আমাদের মধ্যে মত-পথের ভিন্নতা থাকলেও আমাদের সবার পরিচয় হলো আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। কিন্তু এখন বাংলাদেশে একে-অপরকে নিশ্চিহ্ন করার রাজনীতি শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় না থাকলে কোনো দেশ বেশি দূর এগোতে পারে না। তিনি বলেন, আশার কথা হলো, উপজেলা পর্যায়ে পিএফজির সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে কাজ করছেন। স্থানীয় পর্যায়ে আচরণবিধি প্রণয়ন করেছেন। শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার লক্ষ্যে সরকারও স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কমিটি গঠন ও কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমি মনে করি, বিভিন্ন দলের মধ্যে আদর্শগত ও কর্মসূচিগত মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু একইসাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকা দরকার। যাতে আমরা সকলে মিলে এই দেশকে এগিয়ে নিতে পারি। আর আমাদের স্বার্থেই আমাদেরকে শান্তি প্রতিষ্ঠার এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।
আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, পিএফজির মাধ্যমে সারা দেশে আপনারা যে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তা বাংলাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এই মুহূর্তে অত্যন্ত জরুরি কাজ। আমি মনে করি, সমাজকে একতাবদ্ধ করতে হলে এক মঞ্চে আসতে হবে, আলাপ-আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, দিন দিন আমাদের মধ্যে বিভেদ বেড়ে যাচ্ছে। আগে আমার গ্রামের বাড়িতে আমরা সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা পার্টি আয়োজন করতাম। তখন সব দলের স্থানীয় নেতারা আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হতেন। কিন্তু একই ধরনের পার্টিতে এখন অনেকেই আসেন না।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, একটা শ্রেণী-বিভক্ত সমাজে কোনো দিন শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজ করে না। তাই শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য একটি শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ার বিকল্প নেই। শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেই আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। শ্রেণিশত্র“, শ্রেণিদ্বন্দ্ব যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে ১৫ আগস্টেও নৃশংস ঘটনা তার বড় প্রমাণ। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরেরাই তাঁকে হত্যা করেছিল। আমি মনে করি, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় ঐক্য দরকার। এ ধরনের ঐক্য আমরা গড়ে তুলেছিলাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে।
মেজর (অব:) রানা মো: সোহেল বলেন, সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় পিএফজির বেশকিছু অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম। শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আপনাদের কার্যক্রম ও সদিচ্ছা বেশ প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ও সঙ্ঘাত বিরাজ করছে। কিন্তু কেন এ দ্বন্দ্ব ও সঙ্ঘাত? আমি মনে করি, এর কারণ হলো বিরাজমান অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমতা না থাকা, তথ্যের সঠিকতা না থাকা।


আরো সংবাদ



premium cement